ফার্ম মেশিনারি ট্রেড বর্তমান বিশ্বে কৃষির পাশপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে এর কার্যকারিতা প্রমাণে সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে । কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক যে সব মেশিন, যন্ত্রপাতি ও ফসলের উন্নত জাত আবিষ্কৃত হচ্ছে তা এই ফার্ম মেশিনারি বিভাগ থেকেই হচ্ছে। তাই এ অধ্যায় ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের পরিচিতি ও কার্যপরিধি, ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের ক্ষেত্র, ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের পরিচিতি (Introduction to Farm Machinery Trade):
সভ্যতার অগ্রগতি ও ক্রমবিকাশের সাথে সাথে আমাদের সমাজ ও জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নতুন নতুন পরিবর্তন এসেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এ পরিবর্তন হচ্ছে আরো দ্রুত গতিতে। উন্নয়নের এ গতিময় ধারায় বর্তমান বিশ্বে কৃষি ও শিল্পে উন্নয়নের ক্ষেত্রে ফার্ম মেশিনারি শপ ও মেশিনারি বিরাট ভূমিকা পালন করছে । আধুনিক কৃষিতে ফার্মট্রেড একান্ত অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। ফার্ম বা কৃষি খামারে যেসব কল-কারখানা বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় তার সুষ্ঠু ব্যবহার, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ নির্ভর করে ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের সঠিক প্রয়োগের উপর। আমরা জানি, বর্তমান বিশ্বে কৃষি উৎপাদনে যেসব যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, ট্রলি, সিড প্ল্যান্টার, ড্রাম সিডার, কম্বাইন হারভেস্টর, পেডাল প্রেশার, পাওয়ার থ্রেশার, গভীর নলকূপ, অগভীর নলকূপ, ড্রায়ার, উইনোয়ার ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এসব যানবাহন ও যন্ত্র দ্বারা কৃষি খামারের অধিকাংশ কাজ অতি সহজে সম্পন্ন করা সম্ভব। ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের মাধ্যমে কৃষি যন্ত্রপাতি অতি সহজেই মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব। এতে এক দিকে যেমন আর্থিক অপচয় রোধ করা যায়, অপরদিকে তেমনি সময়েরও সাশ্রয় হয়ে থাকে ।
ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের কার্যপরিধি (Scope of Farm Machinery Trade) :
ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের কার্যপরিধি অনেক বড় । বর্তমান বিশ্বে কৃষিক্ষেত্রে যে আধুনিক পরিবর্তন এসেছে তার মূলে রয়েছে ফার্মশপ ও মেশিনারি। এ ট্রেড থেকে নিম্নলিখিত কাজগুলো আয়ত্ত করে বেকার সমস্যা সমাধান করা যায়। যেমন-
* কৃষি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের পাম্প, যেমন- সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প, রেসিপ্রোকেটিং পাম্প, টারবাইন পাম্প, গভীর নলকূপ ও অগভীর নলকূপ ইত্যাদি দিয়ে কীভাবে সেচ কাজ করা যায় এবং এটা নষ্ট হলে কীভাবে মেরামত করা যায়, তার বাস্তব জ্ঞান অর্জন করা ।
* সেচ কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের পাইপ এবং সেটি জোড়া দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ফিটিংস সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা ।
* কোনো ধাতব খণ্ডকে প্রয়োজনমতো ড্রিল মেশিনের সাহায্যে কীভাবে ছিদ্র করে প্রেসারের সাহায্যে ছিদ্রের ভিতরের অংশ মসৃণ করা যায়, তার বাস্তব জ্ঞান অর্জন করা ।
* কোনো ধাতব বস্তু, যেমন- দা, কাঁচি, ছুরি ইত্যাদি গ্রাইন্ডিং মেশিনের সাহায্যে ধার দেওয়া এবং অন্যান্য ধাতবস্তুকে সমান করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা ।
* কোনো ধাতব পদার্থকে কীভাবে ওয়েল্ডিং এর সাহায্যে জোড়া দেওয়া যায়, সে সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান অর্জন করা ।
* ওয়ার্কশপে কাজের উপযোগী বিভিন্ন ধরনের টুলস শনাক্ত করা ও এর ব্যবহার শিখতে পারা।
* হ্যাকস এবং বিভিন্ন ধরনের ফাইল ব্যবহার করে কীভাবে ধাতব পদার্থ কর্তন এবং ফাইলের সাহায্যে ঘষে বিভিন্ন আকৃতি তৈরি করা যায় তা হাতে কলমে শেখা।
* ইঞ্জিনের গঠন, ডিজেল ও পেট্রোল ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশের নাম চিনতে পারা এবং ইঞ্জিন স্টার্ট দেওয়া বন্ধ করা, ইঞ্জিনের কোনো সমস্যা হলে মেরামত করা ইত্যাদি কাজ হাতে কলমে শেখা।
* ইঞ্জিনের বিভিন্ন সিস্টেম, বেমন-কুলিং সিস্টেম, লুব্রিকেটিং সিস্টেম, ফুয়েল সিস্টেম, ইগনিশন সিস্টেম, এয়ার ইনটেক সিস্টেম, ব্রেক সিস্টেম, ফ্লাচ সিস্টেম, স্টিয়ারিং সিস্টেম, হুইল সিস্টেম ইত্যাদির কার্যপ্রণালী যন্ত্রাংশের নাম, কাজ জানা এবং উক্ত সিস্টেমসমূহের যে কোনো সমস্যা হলে তা কীভাবে মেরামত করতে হয়, তার বাস্তব জ্ঞান অর্জন করতে পারা।
* ডিজেল ইঞ্জিনের হাইপ্রেসার পাম্পের ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল টাইমিং কীভাবে করতে হয় তা জানতে পারা।
* মোটরযানে বা অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত ব্যাটারি, ব্যাটারির ব্যবহার চার্জ নেওয়া, ইলেকট্রোলাইট প্রস্তুত করা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারা, এবং ব্যাটারি কীভাবে মেরামত করা, চার্জ দেওয়া, ইলেকট্রোলাইট প্রস্তুত ইত্যাদি কীভাবে করতে হয়, তা শিখতে পারা।
* গ্যাস ইঞ্জিন এবং ইকাই সিসটেম ইঞ্জিন কীভাবে কাজ করে, এদের যন্ত্রাংশের নাম এবং কীভাবে মেরামত করতে হয়, তার বাস্তব জ্ঞান অর্জন করতে পারা।
* কৃষিকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি দিয়ে কীভাবে কাজ করা যায়, যেমন- পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টরের সাহায্যে জমি চাষ করা, পাওয়ার টিলারের বিভিন্ন অ্যাটাচমেন্ট সম্পর্কে জানা, সিড ছিল দিয়ে বীজ রোপণ করা, উইভারের সাহায্যে আগাছা দমন করা, রাইচ ট্রান্সপ্ল্যান্টারের সাহায্যে চারাগাছ রোপণ করা, প্রেয়ারের সাহায্যে কীটনাশক ছিটানো, প্রেশারের সাহায্যে ধান ও গম মাফই করা যায়। হাইভেস্টারের সাহায্যে শস্যকে কাটা, মাড়াই করা, বস্তাভর্তি করা, বড় পৃথক করা, রিপার এর সাহায্যে ধান ও গম কাটা গুটি ইউরিয়া প্ররোগ যন্ত্রের সাহায্যে গুটি ইউরিয়া প্রয়োগ করা ইত্যাদি কাজগুলো ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের মাধ্যমে এসব কৃষি যন্ত্রপাতি অতি সহজেই মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব। এতে এক দিকে যেমন আর্থিক অপচয় রোধ করা যায়, অপরদিকে সময় ও শ্রম দুটোই সাশ্রয় হয় ।
ফার্ম মেশিনারি ট্রেড বর্তমান বিশ্বে কৃষির পাশপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলভাবে প্রয়োগের মাধ্যমে এর কার্যকারিতা প্রমাণে সক্ষমতার পরিচয় দিচ্ছে। কৃষিক্ষেত্রে এর কারিগরি প্ররোগসহ সমাজের বেকারত্ব নিরসনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া বর্তমানে এ ট্রেড দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও এর সুদূর প্রসারী প্রভাব ফেলছে। আমাদের দেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন ও বেকারত্ব দূরীকরণে এর ভূমিকা আজ সর্বজন স্বীকৃত। বৰ্তমান সময়ে যুগের চাহিদার প্রেক্ষিতে এ ট্রেড কৃষির সাথে জড়িত প্রতিটি স্তরে বিশেষ করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর এসেম্বলি বা মেরামত কারখানায়, কৃষি ও খামার যন্ত্রপাতি তৈরি ও মেরামত কারখানায়, খাদ্য শস্য উৎপাদনে, পরিবহনে, প্রক্রিয়াজাতকরণে, বাজারজাতকরণের পাশাপাশি পোল্ট্রি শিল্প, মৎস্য শিল্প ও কুটির শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পের উৎপাদন প্রক্রিয়ার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এছাড়া এ বিষয়ে দক্ষ এ অভিজ্ঞ লোকদের বিদেশেও প্রচুর কর্মসংস্থান আছে, যা থেকে দেশ উন্নয়নে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়।
আজকের দুনিয়ায় কৃষি ও শিল্পে উন্নয়নের ক্ষেত্রে ফার্মশপ ও মেশিনারি বিরাট ভূমিকা পালন করছে। আজকের সভ্যতার স্বর্ণযুগে আমরা যে আধুনিক ওয়ার্কশপ ও মেশিনারির রূপ দেখতে পাচ্ছি তার সূচনা হয়েছিল সে আদিম যুগে সভ্যতার সুচনা লগ্নে। উন্নয়নের এ গতিময় ধারায় কার্যশপ ও মেশিনারির একটা বিরাট ভূমিকা রয়েছে। এর সাথে জড়িত সকল শিক্ষার্থী, প্রশিক্ষক, ফোরম্যান, শপ-অ্যাসিস্ট্যান্টসহ সব স্তরের জনগণকে এ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। তা হলেই আমাদের দেশও সমান তালে এগিয়ে যেতে পারবে উন্নয়নের গতিময় ধারায়। আমাদের দেশে বর্তমানে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু হাতে-কলমে কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বেকার যুবকের সংখ্যা নেহায়েতই নগণ্য। যাদের কাজের প্রতি আগ্রহ ও নিষ্ঠা আছে এবং হাতে- কলমে কাজ করাকে ঘৃণা করে না তারা কখনো বেকার থাকে না। উন্নত দেশে হাতে-কলমে কাজ করাকে সবাই শ্রদ্ধার চোখে দেখে থাকে। আমাদেরও উচিত উন্নত বিশ্বকে অনুসরণ করে তাদের মতো উন্নতির সোপানে এগিয়ে যাওয়া।
ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের প্রয়োগ ছাড়া আমাদের কৃষি উৎপাদন মোটেই সম্ভব নয়। এ ট্রেডের মাধ্যমে দেশের জনসংখ্যার এক বিরাট অংশ বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির পথের দিশারী খুঁজে পাচ্ছে। এ ট্রেডের প্রসারের সাথে দেশের জনবলের উন্নয়ন, বেকারত্বের অবসান, বৈদেশিক অর্থ আয়ের পথ সুগম হওয়া, দারিদ্র দূরীভূত হওয়াসহ অন্যান্য অনেক সমস্যার সমাধানের পথ সুগম হচ্ছে। এ টেডের পূর্ণাঙ্গ সুফল ভোগ করতে হলে এর কারিগরি ও ব্যবহারিক দিকসমূহ সঠিকভাবে আয়ত্ব করতে হবে এবং তা সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে হবে। তাই বর্তমান যুগে ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের গুরত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য ।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের কাজ কী?
২। গরু ও লাঙ্গলের পরিবর্তে আধুনিক চাষ যন্ত্রের নাম কী?
৩। ফসলের জমিতে কোন ধরনের পাম্পের সাহায্যে সবচেয়ে বেশি সেচ দেওয়া হয় ।
৪। ধান ও গম মাড়াই যন্ত্রের না কী?
৫। ইউনোয়ার কী?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ফার্ম মেশিনারি ট্রেডে ব্যবহৃত ১০টি খামার যন্ত্রপাতির নাম লেখ।
২। ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের পরিচিতি উল্লেখ কর।
৩। ফার্ম মেশিনারি কর্ম ক্ষেত্র সমূহ সংক্ষেপে লেখ ।
রচনা মূলক প্রশ্ন
১। ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা কর।
২। ফার্ম মেশিনারি ট্রেডের কার্যপরিধি ব্যক্ত কর।
ফার্ম শপ ও মেশিনারিতে কাজের সময় প্রায়ই নানা রকম দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এসব দুর্ঘটনায় কর্মরত শিক্ষার্থী ও কর্মীসহ মেশিন বা যন্ত্রপাতির অনেক ক্ষতি সাধিত হয়। ইংরেজিতে একটি শব্দ আছে Safety is First and Wrok is last অর্থাৎ আগে সর্তকতা পরে কাজ। এ অধ্যায় ফার্ম মেশিনারি শপে নিরাপত্তা, সাবধানতার গুরত্ব, অনিরাপত্তামূলক কাজের অবস্থা এবং পরিধি, কাজের সময় সাধারণ নিরাপত্তামূলক প্রয়োজনীয় সাবধানতা, ফার্ম মেশিনারি শপ ও মেশিনারিসমূহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ।
ফার্ম মেশিনারি শপ বা কারখানায় কাজ করার সময় একজন কারিগরকে বিভিন্ন প্রকার যন্ত্র ও মেশিন চালনা করতে হয়। এ সময় তার সামান্য ভুল, অবহেলা বা জড়তার কারণে নানা রকম দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ধরনের দুর্ঘটনায় কর্মরত কারিগর, শিক্ষার্থী ও কর্মীসহ মেশিন বা যন্ত্রপাতির অনেক ক্ষতি সাধিত হয়। একজনের ভুলের কারণে অন্য জনের মারাত্মক ক্ষতি, এমনকি জীবন নাশের ঘটনা পর্যন্ত ঘটতে পারে। এজন্য শপে বা ল্যাবে কর্মরত সকলের উচিৎ সাবধানতা ও নিরাপত্তা বিষয়ের সকল নিয়ম কানুন সঠিকভাবে মেনে চলা এবং নিরাপত্তা অভ্যাস গড়ে তোলা । দুর্ঘটনাজনিত বিপদ থেকে রেহাই পেতে হলে সাবধানতা অবলম্বনের অভ্যাস গড়ে তোলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সাবধানতা অবলম্বনের বিষয়ে কোনোরূপ গাফিলতি বা অবহেলা করা উচিত নয়। এরূপ অবহেলাই অনেক সময় মারাত্মক বিপদ ডেকে আনে। তাই ওয়ার্কশপের কাজ শেখার আগে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে নিরাপত্তামূলক সাবধানতার বিষয়ে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে হয় এবং এসব নিরাপত্তা বিধি মেনে চলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হয়।
ফার্ম শপ ও মেশিনারিতে কাজের সময় প্রায়ই নানা রকম দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এসব দূর্ঘটনায় কর্মরত শিক্ষার্থী ও কর্মীসহ মেশিন বা যন্ত্রপাতির অনেক ক্ষতি সাধিত হয়। এতে মেশিন বা যন্ত্রপাতি বিকল হওয়া, কর্মীর অঙ্গহানি হওয়া, পঙ্গুত্ব এবং অনেক সময় জীবননাশের ঘটনা পর্যন্ত ঘটে থাকে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, ওয়ার্কশপ বা কারখানায় যেসব দুর্ঘটনা ঘটে, তার প্রায় শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ঘটে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মীর ভুলের কারণে, আর অবশিষ্ট দুর্ঘটনা ঘটে থাকে যন্ত্রপাতি বা মেশিনের ত্রুটির কারণে। তাই কর্মীর অসাবধানতাই এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ । দুর্ঘটনাজনিত বিপদ থেকে রক্ষা পাবার জন্য ওয়ার্কশপে কাজের সময় শিক্ষার্থী বা কর্মীর নিরাপত্তামূলক সতর্কতা অবলম্বন করা একান্ত প্রয়োজন।
ফার্ম মেশিনারি শপে কাজ করার সময় সম্ভাব্য দুর্ঘটনা ও বিপদ এড়িয়ে চলতে হলে সব সময় নিরাপত্তা নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে । সব সময় মনে রাখতে হবে সঠিক নিয়মে সাবধানতা অবলম্বন না করলে যে কোনো সময় যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাছাড়া আমরা জানি, দুর্ঘটনা কখনো আগাম নোটিশ দিয়ে আসে না। তাই এ থেকে দূরে থাকতে হলে অবশ্যই নিরাপত্তার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। নিরাপত্তা পালনের নিয়মগুলো একবার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেলে তা পালন করতে কোনো অসুবিধা হয় না। অনেক সময় সাধারণ কোনো নিয়মকে হয়তো তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে নাও হতে পারে। কিন্তু তাই বলে কোনো নিয়মকেই অবহেলা করা উচিত নয়। ফার্মাপ ও মেশিনারিতে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে এসব নিয়মের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে।
ফার্ম মেশিনারি শপে কাজ করার সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। অন্যথায়, বিভিন্ন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যেমন-
১. ঢিলা পোশাক পরে কাজ করতে গিয়ে ইঞ্জিন বা মেশিনের ঘুর্ণায়মান অংশের সাথে আটকে শিক্ষ মারাত্মকভাবে আহত হতে পারে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে ।
২. ফার্ম মেশিনারি শপে ধাতব দ্রব্যাদি কাটাকাটির সময় কর্তিত ধাতব টুকরা ছিটকে বেশ অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে । এসব ধাতব টুকরা ছিটকে এসে লাগলে শিক্ষার্থীর চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে ।
৩. ফার্ম বা মেশিনে শপে খালি পায়ে বা হালকা চপ্পল অথবা পাতলা ক্যানভাস জুতা পরিধান করে থাকলে ওয়ার্কশপের মেঝেতে পড়ে থাকা তীক্ষ্ণ ধাতব টুকরা পায়ের তলায় পড়ে পাতলা জুতা ভেদ করে পায়ে বিশ্বে যেতে পারে ।
৪. ধারালো ধাতব পাত, টুকরা, বিশেষ করে হাতল ছাড়া ফাইল ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে ধারালো ফাইলের ট্যাং হাতে বিধে যেতে পারে ।
৫. ফার্ম মেশিনারি শপের মেঝেতে তেল, ইঞ্জিন অয়েল, গ্রিজ ইত্যাদি তৈলাক্ত পদার্থ পড়ে থাকলে যে কেউ সেখানে পা পিছলে পড়ে গিয়ে আহত হতে পারে।
৬. লোহার যে কোনো ধাতবদত্ত, টুকরা বা যন্ত্রাংশ মেঝেতে পড়ে থাকলে হাঁটতে গিয়ে যে কেউ এগুলোর সাথে। হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতে পারে এবং তাতে মারাত্মক আহত হতে পারে।
৭. বৈদ্যুতিক সংযোগ ঢিলা থাকার কারণে অথবা খোলা তারে স্পর্শ লেগে ইলেকট্রিক শক্ লাগতে পারে ।
৮. ওয়ার্কশপে পেট্রোল, ডিজেল, স্পিরিট ইত্যাদি দাহ্য পদার্থ থাকা অবস্থায় ওয়ার্কশপের ভেতরে ধূমপান করার কারণে অনেক সময় আগুন লেগে যেতে পারে। এতে জীবন এবং সম্পদ উভয়ের ওপর বিপদ নেমে আসতে পারে।
৯. ফার্মশপের মেঝে থেকে ভারি যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ খুব বেশি ভারি হলে তা পড়ে গিয়ে পায়ে যখম হতে পারে এবং যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
১০. চলন্ত অবস্থায় কোনো যন্ত্র বা মেশিন পরিষ্কার করতে গেলে ঘূর্ণায়মান যন্ত্রের সাথে হাত বা শরীর যখম হতে পারে। তাই প্রতিটি কারিগরের উচিৎ ফার্মপপ বা কারখানায় কাজ করার সময় মেশিন ও যন্ত্রপাতির অবস্থান ও তার কার্যকারিতা সঠিক আছে কিনা তা প্রথমে যাচাই করে নেয়া।
কিছু কিছু দুর্ঘটনা ব্যক্তিগত সাবধানতার অভাবে ঘটে থাকে। এরূপ দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেতে হলে প্রতিটি কারিগর, শিক্ষার্থী বা ওয়ার্কশপ কর্মীকে ওয়ার্কশপে কাজের সময় যেসব ব্যক্তিগত সাবধানতা মেনে চলতে হয় তা নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. সাধারণত ওয়ার্কশপের দেওয়ালে নিরাপত্তার তালিকা ঝুলানো থাকে । তালিকা অনুযায়ী সেসব নিয়ম-কানুন পালন করতে হবে।
২. নিরাপত্তা পোশাক পরিধান করা:
ফার্ম মেশিনারি শপে কাজ করার সময় নিরাপত্তা পোশাক পরিধান করতে হয়। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যন রক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রকার নিরাপত্তা পোশাক রয়েছে। যেমন-
জ্যাপ্রোন:
শক্ত মোটা কাপড় অথবা চামড়ার ওভারকোটের মতো গায়ে দেওয়ার পোশাক। ঢিলে-ঢালা পোশাক বা কাপড় পরিধান করে ওয়ার্কশপে কাজ করা যাবে না। ফুল হাতা শার্ট হলে শার্টের আভিন গুটিয়ে কনুই এর উপর রাখতে হবে।
সেফটি গগলস :
কোনো কিছুর আঘাত থেকে চোখকে রক্ষা করার জন্য সেফটি পালস ব্যবহার করা হয়।
হেলমেট:
কোনো ভারি বস্তুর আঘাত থেকে মাথা ও মুখমণ্ডল রক্ষা করার জন্য হেলমেট ব্যবহার করা হয় ।
হ্যান্ড গ্লোভস :
কোনো ধারালো বা তীক্ষ্ণ বস্তুর আঘাত বা ধর্ষণ থেকে হাতকে রক্ষার জন্য হ্যাত গ্লোভস ব্যবহার করা হয়।
সেফটি বুট বা সেফটি সু-
সু ভীষ্ম ধারালো বস্তু বা ভারি বস্তুর আঘাত থেকে পা-কে রক্ষার জন্য সেফটি বুট বা সু ব্যবহার করা হয়।
ইয়ার প্রোটেক্টর -
কানকে শব্দ থেকে নিরাপদ রাখার জন্য উভ কানে ইয়ার প্রোটেক্টর ব্যবহার করা হয়।
গ্যাস মুখোশ
স্প্রে পেইন্টিং কাজের সময় ফুসফুসের নিরাপত্তার জন্য গ্যাস মুখোশ ব্যবহার করা হয়।
ফাস্ট এইড বক্স :
হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে যাতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া যায় তার জন্য কাজের পাশে সুবিধা স্থানে প্রাথমিক চিকিৎসা বক্স বা ফার্স্ট-এইড বক্স রাখতে হবে।
৩. ফার্ম মেশিনারি শপে কাজের সময়, কাজের উপযোগী সঠিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হয়। অর্থাৎ যে কাজের জন্য যে যন্ত্র উপযুক্ত সেই নির্দিষ্ট যন্ত্র নির্বাচন করে ব্যবহার করতে হয়। তা না হলে সঠিকভাবে কাজ করা যায় না এবং তাতে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
৪. যে যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করা হবে তা যেন অবশ্যই ত্রুটিযুক্ত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কাজের অনুপোযোগী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হলে নানা প্রকার দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ।
৫. প্রতিটি কাজ করার একটা নির্দিষ্ট নিয়ম বা পদ্ধতি আছে। ওয়ার্কশপে কাজের সময় সঠিক নিয়ম জেনে সেই পদ্ধতিতে কাজ করতে হবে। নিয়মের বাইরে নিজের ইচ্ছামতো কাজ করলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে।
৬. যে কোনো কাজের সময় সেই কাজের প্রতি গভীরভাবে মনোনিবেশ করা অত্যন্ত জরুরি। অন্যমনস্ক হয়ে কাজ করলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
৭. ফামর্শপে ধূমপান করা যাবে না। কারণ, ধূমপানের পর ফেলে দেওয়া বিড়ি সিগারেটের টুকরা হতে অনেক সময় আগুনের সূচনা হয় ।
৮. যে কোনো চলমান বস্ত্র থেকে নিরাপদ দূরুত্বে অবস্থান করে কাজ করতে হবে।
৯. ফার্মশপে তাড়াহুড়া করে বা বে-খেয়ালে হাঁটা যাবে না ।
১০. ওয়েল্ডিং কাজের সময় ফেস-শিল্ড ব্যবহার করতে হবে।
১১. কোনো মেশিনে কাজ করার আগে সেই মেশিনে সম্বন্ধে ভালো ধারণা নিতে হবে। এই মেশিনে কি ধরনের ঝুঁকি আছে তা আগে থেকেই জেনে নিতে হবে।
১২. চালু অবস্থায় কোনো মেশিন মেরামত করা বা মেশিনে পিচ্ছিল করার পদার্থ বা জ্বালানি দেওয়া উচিত নয় ।
১৩.ফার্ম মেশিনারি শপের মেঝেতে তেল, ইঞ্জিন অয়েল বা গ্রিজ অথবা এধরনের কোনো পিচ্ছিল পদার্থ যাতে না থাকে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
১৪. পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদি দাহ্য পদার্থে আগুন লাগলে তাতে পানি দেওয়া যাবে না। অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভাবার চেষ্টা করতে হবে।
১৫. যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে তা সুপারভাইজারকে বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে ।
১৬. ফার্ম মেশিনারি শপে কাজের স্থানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হয়। কম আলো-বাতাস বা অন্ধকারে কাজ করলে কাজ ভালো হবে না এবং যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে প্রতিটি ফার্মাণে অগ্নিনির্বাপক দ্রব্য ও যন্ত্র প্রস্তুত রাখতে হয়। এ জন্য এক বালতি পানি, এক বালতি বালি এবং একটা ফারার এক্সটিংগুইশার ৰা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখা অপরিহার্য্য ।
অগ্নি নির্বাপক দ্রব্যাদির ব্যবহার (The use of fire extinguisher producta) আগুন লেগে দুর্গটনা ঘটলে তা নিবারণ করার জন্য নানা প্রকার অগ্নি নির্বাপক দ্রব্য বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। আগুন নেভানোর দ্রব্য, যন্ত্রপাতি ও কলা কৌশল সম্পর্কে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ভালো জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। নিম্নোক্ষভাবে অগ্নি নির্বাপক দ্রব্য ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যেতে পারে:
১) আগুন নেভানোর জন্য প্রোসি ব্যবহার করা যায় -
(ক) পানি
(খ) ৰালি
(গ) কার্বন-ডাই-অক্সাইড
(ঘ) সোফা এসিড
(ঙ) কোষ বা কেনাল
(চ) প্যাসপ্রেসার
২) কাঠ, কাগজ, কাপড় ইত্যাদিতে আগুন লাগলে তা নিভানোর জন্য পানি ব্যবহার করতে হয়।
৩) তেল, প্লিজ বা রং এর আগুন নিভানোর জন্য বালি ব্যবহার করতে হয়।
৪) তরল দাহ্য পদার্থ বা বৈদ্যুতিক আঞ্চন দিতানোর জন্য শুকনা পাউডার বা কার্বন-ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করতে
৫) ফারার এক্সটিংগুইশার এর সাহায্যে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ফোম ব্যবহার করতে হয়। চিরে একটা ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার দেখানো হলো।
৬) প্রতিটি কার্যশপে অগ্নিনির্বাপক দ্রব্য ও যন্ত্র প্রত রাখতে হয়। এ জন্য এক বালতি পানি, এক বালতি বাল এবং একটা কারার এক্সটিকেইশার বা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখা অপরিহার্য ।
ওয়ার্কশপে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। কারণ, এর সাথে ওরাকলগে কর্মরত কর্মীর নিরাপত্তা, ওয়ার্কশপের নিরাপত্তা ও মেশিনের নিরাপত্তা নির্ভরশীল। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কিছু বিষয় নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
ক) পরিষ্কার পোশাক পরিধান করে ওয়ার্কশপে কাজ করতে হবে।
গ) হাতের নখ ও মাথার চুল ছোট রাখতে হবে।
গ) যন্ত্রপাতি ও মেশিন পরিষ্কার রাখতে হবে।
ঘ) প্রতিটি হ্যান্ড টুলস কাজ শেষে ভালোভাবে পরিষ্কার করে যথাস্থানে সংরক্ষণ কতে হবে।
ঙ) কোনো জায়গায়, টুল বা মেটাল পিস যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা উচিৎ নয়। নির্দিষ্ট স্থানে এগুলো ভালোভাবে গুছিয়ে রাখতে হবে।
চ) খালি হাতে কোনো টুলস পরিষ্কার করা ঠিক নয়। এতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এর জন্য নির্ধারিত পরিষ্কার ন্যাকড়া, জুট বা ব্রাস দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে ।
ছ) ড্রিলিং বা কাটিং চিপস্ কোনো সময় খালি হাতে পরিষ্কার করা উচিত নয়। নির্ধারিত ব্রাস দিয়ে এখনো পরিষ্কার করতে হবে
জ) যে সব টুলস তেল দিয়ে পরিষ্কার করা হয় তাতে তেল দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।
ঝ) গুয়ার্কশপের মেঝে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে ।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। কারখানার কাজে কেন নিরাপত্তা অবলম্বন করতে হয় ।
২। ফায়ার এক্সটিংগুইশারে কী গ্যাস মজুদ থাকে ?
৩। ফার্স্ট এইড বক্সে কী কী প্রয়োজনীয় ঔষধ থাকা উচিত ?
৪। ফার্স্ট এইড বক্স কী ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। অগ্নিনির্বাপক দ্রব্য বা যন্ত্রপাতিসমূহের নাম উল্লেখ কর ।
২। ফার্ম মেশিনারি শপে কাজ করার সাবধানতার গুরুত্ব ব্যক্ত কর ।
৩। অগ্নিনির্বাপক দ্রব্যাদির ব্যবহার বর্ণনা কর।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। ফার্ম মেশিনারি শপে কাজের সময় সাধারণ নিরাপত্তামূলক প্রয়োজনীয় সাবধানতার একটি তালিকা তৈরি কর
২। ফার্মশপে বা মেশিনারি শপে অনিরাপত্তামূলক কাজের অবস্থা এবং পরিধি বর্ণনা কর ।
৩। ফার্ম মেশিনারি শপ বা মেশিনারিসমূহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
ফার্ম মেশিনারি শপ বা কারখানায় যন্ত্রপাতির সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের ধাতুর উপর কাজ করা, ধাতব খণ্ড জোড়া দেওয়া, ধাতব পাত (Metal Sheet) দ্বারা প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি তৈরি করা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের কাজ করা হয়ে থাকে । ধাতু দ্বারা ব্যবহার উপযোগী বিভিন্ন সামগ্রী ( Product) তৈরি বা সংযোজন করতে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি বা টুলস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ অধ্যায় টুলসের প্রকারভেদ, বিভিন্ন প্রকার টুলসের নাম, টুলসের ব্যবহার, টুলসসমূহের প্রয়োগ যেমন- (সয়িং, ফালিং, ড্রিলিং, চিপিং, স্ক্যাপিং, গ্রাইন্ডিং ও ক্রু থ্রেড) ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
টুলস (Tools) :
টুলস (Tools) হচ্ছে ফার্মশপ বা কারখানায় ব্যবহারিক কাজে ব্যবহৃত এক প্রকার যন্ত্রাদি । ফার্ম মেশানারি বা মেশিন শপে যে সব যন্ত্রপাতির সাহায্যে জব তৈরি করা বা ব্যবহারিক কাজ করার জন্য ধাতব শিট বা ধাতব খণ্ডের উপর পরিমাপ করা, দাগ দেওয়া বা চিহ্নিত করা, ধাতব পদার্থ সোজা বা বাঁকা করা, কর্তন করা, জোড়া দেওয়া, পরীক্ষা করা ইত্যাদি সম্পাদন করা হয় সে সব যন্ত্রপাতিকে একত্রে টুলস বলে ।
ফার্ম মেশিনারি শপে বিভিন্ন কাজে যে সব হ্যান্ড টুলস ব্যবহার করা হয় নিম্নে তাদের নাম উল্লেখ করা হলো। যেমন-
১। হ্যামার বা হাতুড়ি ( Hammer)
২। ফ্লাট ক্রু ড্রাইভার (Screw Driver)
৩। স্টার স্ক্রু ড্রাইভার (Star Driver)
৪। কম্বিনেশন প্লায়ার্স (Comination Pliers)
৫। কম্বিনেশন রেঞ্চ (Combination Wrench )
৬। অ্যাডজাস্টেবল রেঞ্চ (Adjustable Wrench)
৭। সিঙ্গেল এন্ডেড স্প্যানার/ এক মুখি রেঞ্চ (Single Ended Wrench)
৮। ডাবল এন্ডেড স্প্যানার/ দুই মুখি রেঞ্চ/ (Double Ended Spanner)
৯। রিং রেঞ্চ (Ring Wrench )
১০। সকেট রেঞ্চ (Socket Wrench )
১১। টেবিল ভাইস (Table Vice )
১২। হ্যান্ড ভাইস (Hand Vice)
টুলস এর শ্রেণি বিন্যাস (Classification of Tools)
একটা ফার্মাগে নানা ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। মেশিনারি ফিটিং-এর কাজে, মেটাল শিটের বিভিন্ন কাজে এবং অন্য যন্ত্রের সহায়ক হিসেবে ব্যবহৃত টুলসসমূহকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা যেতে পারে। যেমন-
ক) হ্যাভ টুলস বা যৌগিক হাত বয় ( Hand Toals)
খ) মেজারিং টুলল বা পরিমাপক নয় (Measuring Tools)
গ) মার্কিং টুলস বা চিহ্নিতকরণ বন্ধ (Marking off tools/ Layout Tools)
ঘ) কাটিং টুলস বা কাটার যন্ত্রপাতি (Cutting Tools)
ঙ) টেস্টিং টুলস বা পরীক্ষা করার যন্ত্র (Testing Tools)
উপরের প্রতিটি শ্রেণির টুলুদের প্রকারের নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
ক. হ্যান্ড টুলস (Hand Tools) :-
যে সব যন্ত্রপাতি হাত দিয়ে ব্যবহার করা হয় সেগুলোকেই সাধারণত হাত যত্ন বা হ্যান্ড টুলস বলা হয়ে থাকে। কোনো যন্ত্র বা মেশিনারি ফিটিং-এর কাজে, মেটাল লিটেরা বিভিন্ন কালে এবং অন্য যন্ত্রের সহারক হিসেবে সাধারণত মৌলিক হাত যত্ন বা বেসিক হ্যান্ড টুলস (Basic Hand Tools) ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফার্মশপে যে সব হ্যান্ড টুলস ব্যবহার করা হয় নিচে সে ধরনের কিছু টুলস এর নাম উল্লেখ করা হলো :
খ. মেজারিং টুলস বা পরিমাপক যন্ত্র (Measuring Tools)
যেসব ডিভাইস বা যন্ত্র দিয়ে কোনো করে বা যন্ত্রাংশের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, ন্যাস ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার মাপ গ্রহণ করা হয় বা পরিমাণ পাঠ করার কাজে ব্যবহার করা হয় তাকে পরিমাপক যন্ত্রপাতি বা মেজারিং টুলস বা ইনট্রুমেন্ট ? বলা হয় । ফার্মশপে বিভিন্ন পরিমাপক কাজে ব্যবহৃত কিছু যন্ত্রপাতির নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো ।
খ. মার্কিং টুলস বা চিহ্ন य (Marking tools / Layout Tools)
কোনো ধাতব খঙ বা মেটাল পিট দ্বারা কোনো কার্য নয় বা ওয়ার্ক পিস তৈরি করতে হলে অথবা একাধিক শিট মেটাল জোড়া দিতে হলে কাজ শুরু করার আগে ধাত বা শিট মেটালের উপরিভাগে মাপ বা নকশা (Drawing) মোতাবেক কাজগুলো রেখা টেনে চিহ্নিত করে নিতে হয়। এভাবে রেখা টেনে বা চিহ্নিত করে নেয়াকে লেয়িং আউট (Laying out) বা লে-আউট (Layout) বলে। এভাবে লে-আউট করার জন্য যে সব যন্ত্রপাতি হ্যান্ড টুলস ব্যবহার করা হয় তার একটা তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
ঘ. কাটিং টুলস বা কাটার যন্ত্রপাতি (Cutting Tools )
যে সব ডিভাইস বা যন্ত্র দিয়ে কোনো ধাতব বস্তু কাটা, নির্দিষ্ট আকার প্রদান করা হয় বা ক্ষর করার কাজে ব্যবহার করা হয় তাকে কাটার যন্ত্রপাতি বা কাটিং টুলস বা ইনস্ট্রুমেন্ট বলা হয় । ধাতু কাটার কাজে ব্যবহৃত কিছু যন্ত্রপাতির নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
ঙ. টেস্টিং বা ক্ষণ করার যন্ত্র (Testing Tools)
কোনো ধাতব খণ্ড বা মেটাল শিট দ্বারা কোনো কার্য বস্তু বা ওয়ার্ক পিস তৈরি করার পর তা নকশা (Drawing) বা মাণ মোতাবেক সঠিক হলো কিনা তা পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়। যেসব যন্ত্র বা টুলস্ দ্বারা এ কাজ করা হয়। তাকে পরীক্ষা করার যন্ত্র বা টেস্টিং টুল বলা হয়। এ কাজে যেসব যন্ত্রপাকি হ্যাভ টুলস ব্যবহার করা হয় তার একটা তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
১) হাতুড়ি ( Hammer )
যে কোনো বস্তুর উপর আঘাত করার জন্য হাতুড়ি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ধাতু বা ধাতব কাজের জন্য হাতুড়ি একটি অতি প্রয়োজনীয় যন্ত্র। পিন বা তারকাটা গোঁতা বা তুলে ফেলা, ধাতব দণ্ড বা পাত বাঁকানো (Bending ) বা সোজা করা (Straightening), ইত্যাদি কাজে হাতুড়ি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। হাতুড়ির কাজের ধরনের ওপর ভিত্তি করে একে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
১) প্রকৌশলী হাতুড়ি (Engineer's Harnmer)
২) নরম হাতুড়ি (Soft Hammer
৩) রিভেটিং হাতুড়ি (Riveting Harmmer)
৪) শ্লে হাতুড়ি (Sledge Hammer)
২) প্লায়ার্স (Pliers)
প্লায়ার্স বা সাঁড়াশি হচ্ছে ধাতব কাজে ব্যবহার্য একান্ত প্রয়োজনীয় একটি হাত যন্ত্র বা হ্যান্ড টুলস। যে কোনো ধাতব পাত বা তার বাঁকা করা বা সোজা করা জন্য, আঁকড়ে ধরার জন্য অথবা কাটার জন্য প্লায়ার্স হচ্ছে একটি নিত্য প্রয়োজনীয় হাত যয় বা হ্যান্ড টুলস্ । এ যন্ত্র সাধারণত শক্ত স্টিল দ্বারা তৈরি করা হয়। এর মুখ বা অগ্রভাগ কাজের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের বা আকারের হয়ে থাকে। আকার ও কাজের প্রকার ভেদে প্লায়ার্স বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। নিম্নে চিত্রের মাধ্যমে প্লায়ার্স দেখানো হলো। যেমন :-
৪) রেঞ্চ বা স্প্যানার (Wrench/spanner)
বিভিন্ন ধরনের মার্ট, বোল্ট, পাইপ বা রক্ত ফুরানোর জন্য ফ্রেঞ্চ বা স্প্যানার ব্যবহার করা হয়। এটা শক্ত ফোর্জিং পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়ে থাকে। রেঞ্চ বা স্প্যানারের সামনের দিকে দুটি চোয়াল থাকে যাকে ইংরেজিতে '' (Jaw) বলে। চোয়াল দুটির সাহায্যে রেঞ্চ দিয়ে নাট বোল্ট বা পাইপ খোয়ানো হয়ে থাকে। এর পেছনে লম্বা একটা হাতল থাকে । এটি লিভার কিয়ার (Lever Action) কাজ করে বলে এর হাতল যত লম্বা হবে এটি সুরাতে শক্তি তত কম লাগবে । বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন প্রকার রেঞ্চ বা স্প্যানার ব্যবহার করা হয়। যেমন -
ক) নিয়ন্ত্রণযোগ্য রেঞ্চ বা স্প্যানার (Adjustable Spanner)
খ) অনিয়ন্ত্রণযোগ্য রেঞ্চ বা স্প্যানার (Non-Adjustable Spanner)
৫) eft (Hand Vice)
যে কোনো ছোট নরকে ভালোভাবে আটকিয়ে তার উপর কোনো হাতয যারা (যেমন- ফাইল দিয়ে) বা যে কোনো ধরনের কাজে ন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ সাধারণত ১০৫ মি.মি. থেকে ১২৫ মি.মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে। নিচের চিত্রের মাধ্যমে একটা ভাল তাই - পরি
6) পিন ভাইস (Pin Vice)
কোনো ছোট ফাইল, ক্ৰাইবার ইত্যাদির লেজ বা ট্যাং (Tang) অথবা খুব সরু গোল কোনো খাত জিনিসকে মজবুত করে ধরার জন্য পিন ডাইস ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর অগ্রভাগে বৃত্তাকারে সাজানো তিনটি চারটি ছোট ছোট চোৱা '' (Jaw) এর রা সদৃশ্য ৰঙি ঘুরিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পিন ভাইদের '' এর ভিতরে কোনো য়ি এটি এক যাতে শক্ত করে ধরে অন্য যাতে মূল অংশ বাণে 'জ' এর সুধ সংকুচিত হয়ে জিনিসটিকে শক্ত করে চেপে ধরে। আবার বিপরীত দিকে মুরাল '' এর মুখ প্রসারিত হয়ে খুলে যায়। নিচের চিত্রে একটা দিন ভাইস-এর পরিচয় দেখানো হলো।
3) বিশ্ব (Adjustable Frame) নিযোগ্য ফ্রেমযুক্ত - এর দৈর্ঘ্য কারী তা অনুসারে म বা বেশি ফে পারে। অর্থাৎ এর দৈর্ঘ্য র্ঘ্যের ব্রেড ব্যবহার করা যায়। ফ্রেমের সাথে ব্রে আটকানোর জন্য ফ্রেমের দুই পা দুটো দিন বা ক্লিপ আছে। এক প্রোভের পর সাথে নাট থাকে যা দিয়ে রোডকে 'টাইট বা করা যায়। চরণযোগ্য ক্রেনের সাথে ৮ ইঞ্চি থেকে ১৬ হচ্ছি দৈর্ঘ্য পর্যন্ত লম্বা প্লের টকানো যায়।
(2) (Non-Adjustable/Solid Frame) রণযোগ্য ফ্ৰক হ্যাকস এর দৈর্ঘ্য কম বা বেশি করা যায় না। এর দৈর্ঘ্য একটা নির্দিষ্ট। মাণে ছিন্ন করা থাকে। তাই এতে শুধু মাত্র একটা নির্দিষ্ট মাপের ব্রাড আটকানো সম্ভব। তবে ধার সাথে একইভাবে স্ক্রিপের সংযুক্ত উইং মার্টের মাধ্যমে ব্ৰেডাক টাইট বা চিলা করা যায় ।
হ্যাকস দিয়ে মাছ কাটা প্রয়োগ:
কাটার আগে ধাতব বস্তুর যেখানে কাটতে হবে সেখানে সাগ দিয়ে চিহ্নিত করে বা মার্কিং (Marking) করে নিতে হবে । ধাতব বস্তু পেট বরাবর উচ্চতায় টেবিল ভাইলে বাঁধতে হবে। কাটার দাগ বা মার্কিং পয়েন্ট ভাইলের কিনারা থেকে ১/৪ ইঞ্চি বাইরে রেখে বাঁধতে হবে। ব্রেডের টান বা টেনশন সঠিক মাত্রায় আছে কিনা আগেই পরীক্ষা করে নিতে হবে। পাশের চিত্রের ন্যায় ডান হাতে হ্যাকস এর হাত খু মজবুত করে ধরে এবং বাঁ হাতে ফ্রেমের সামনের বাঁকানো বাহু ধরে মার্কিং করা স্থানে স্থাপন করে সামনে পিছনে চালাতে হবে। করাত সামনের দিকে চালানোর সময় ব্লেডে চাপ প্রয়োগ করতে হবে এবং পিছন দিকে টানার সময় চাপ হালকা করতে হবে। এভাবে প্রতি মিনিটে ৩৫ থেকে ৪০ বার করে করাত চালাতে হবে। তবে যখন কাটা প্রায় শেষ হয়ে আসবে তখন এই গতি কমিয়ে জানতে হবে। এবং চাপও কিছুটা কম দিতে হবে। এ ভাবে ধাতু কাটার মাঝে মাঝে ব্রেডের টেনশন পরীক্ষা করে দেখে সঠিক টেনশন বজায় রাখতে হবে।
নিচে চিত্রের সাহায্যে সরিং প্রণালীর সঠিক নিয়ম দেখানো হয়েছে।
হ্যাকস ব্রেড ভাঙার কারণ
বিভিন্ন কারণে হ্যাকস ব্লেড ভেঙে যেতে পারে। হ্যাকস ব্রড ভাঙার কিছু উল্লেখযোগ্য কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
১। ফ্রেমের সাথে ব্লেড সঠিকভাবে বাঁধা না হলে হ্যাকস ব্লেড ভেঙে যেতে পারে। ব্লেডের টেনশন খুব বেশি হলে অথবা খুব কম হলেও ব্লেড ভেঙে যেতে পারে।
২। কাটার সময় ফ্রেম দুই হাতে সঠিকভাবে না ধরে হ্যাক-স চালালে ব্লেড ভেঙে যেতে পারে।
৩। কাটার স্থান ভাইসের কিনারা থেকে বেশি দূরে রেখে হ্যাক-স চালালে ব্লেড ভাঙ্গতে পারে ।
৪। হ্যাক স চালানোর কাটিং লাইন ঠিক রাখতে না পারলে, তানে বাঁয়ে বাঁকা করে চালালে ব্লেড ভেঙে যেতে পারে।
৫। পাতলা, সরু বা তীক্ষ্ণ মেটালে বড় পিচের ব্লেড দিয়ে কাটতে গেলে ব্লেড ভাঙ্গতে পারে।
৬। ব্রেডের দাঁতের সেট সঠিক মাপে বাইরের দিকে বাঁকানো না থাকলে মেটালের মধ্যে ব্রেড আটকে গিয়ে ব্লেড ভেঙে যেতে পারে।
৭। পুরানো ক্ষয়প্রাপ্ত ব্লেড দিয়ে আংশিকভাবে কাটা স্থানে নতুন ব্লেড ঢুকিয়ে কাটতে গেলে ব্লেড ভেঙে যেতে পারে।
সরিং এ সাবধানতা (Precautions in Sawing)
হ্যাক-স দিয়ে কাজ করার সময় যে সকল বিষয়ে যত্ন নেয়া উচিত এবং যে সব বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার তার একটা তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. যে ধাতব বস্তু কাটা হবে তা কোন ধাতু, কত শক্ত, কত পুরু কেমন ফিনিশ দরকার এ সব বিষয় বিবেচনা করে সঠিক ও উপযুক্ত ব্লেড ব্যবহার করতে হবে।
২. শক্ত ও পুরু ধাতব বস্তুর জন্য পাতলা দাঁতের রেড এবং পাতলা ও সরু ধাতব পদার্থ কাটার জন্য ঘন দাঁত বিশিষ্ট ব্রেড ব্যবহার করতে হবে।
৩. চিকন ও পাতলা পদার্থ কাটার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ২-৩টি দাঁত সব সময় কাটিং মেটালের সংস্পর্শে থাকে।
৪. ফ্রেমের সাথে ব্রেডের টান বা টেনশন যেন সঠিক পরিমাণে থাকে তা সব সময় খেয়াল রাখতে হবে। টান খুব বেশি বা খুব কম হওয়া চলবে না ।
৫. কিছুক্ষণ হ্যাকস চালালেই অবিরাম ঘর্ষণের কারণে তা গরম হয়ে ওঠে এবং এর দৈর্ঘ্য বেড়ে যায়। তাই মেটাল কাটার সময় কিছুক্ষণ পর পর ব্লেডের টান বা টেনশন পরীক্ষা করে দেখতে হবে। টেনশন কম হলে উয়িং নাট ঘুরিয়ে টেনশন ঠিক করে দিতে হবে।
৬. ধাতব বস্তু কাটার সময় ব্লেড যাতে বেশি গরম হতে না পারে তার জন্য কাটার স্থানে পানি বা কাটিং ফ্লুইড ব্যবহার করতে হবে ।
৭. মেটাল পিস ভাইসে বাঁধার সময় শক্ত করে বাঁধতে হবে যাতে কাটার সময় তা নড়াচড়া না করতে পারে ।
৮. মেটাল পিস কাটার স্থান ভাইসের কিনারা থেকে ১/৪ ইঞ্চির বেশি বাইরে রেখে বাঁধা যাবে না। এতে ধাতব খণ্ড নড়াচড়া করতে পারে এবং এর ফলে ব্লেড ভেঙে যেতে পারে।
৯. ধাতব বস্তু কাটার শেষ পর্যায়ে এসে করাত চালানোর গতি কমিয়ে দিতে হবে।
ফাইল (File)
ফাইল হচ্ছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দাঁত বিশিষ্ট হস্ত চালিত কাটার যন্ত্র যা লোহা, ইস্পাত, তামা, অ্যালুমিনিয়াম, ইত্যাদি ধাতব পদার্থের উপরিভাগের পাতলা স্তর চেঁছে ফেলে পদার্থকে মসৃণ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। ফাইলকে সাধারণ বাংলায় রেভি বা হ্যান্ড বলা হয়। পিউ মেটাল কাজে এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টুলস বা যন্ত্র। সাধারণত হাইকার্বন স্টিল দিয়ে ফাইল তৈরি করা হয়। শক্ত করার জন্য এতে টেম্পার প্রদান করা হয়ে থাকে। ফাইলের পারে কোণাকুণি ও সমান্তরাল ভাবে এবং আড়াআড়ি করে খাঁজ কাটা থাকে। এর ফলে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ে ন্যায় ধাতব পদার্থের গা চেঁছে তাকে মসৃণ করে তোলে। ফাইলের বিভিন্ন অংশ (Parts of File)
ফাইল প্রধানত পাঁচটি ধাতব অংশ এবং একটি হাতলসহ মোট ছয়টি অংশ নিয়ে গঠিত। ফাইলের হাতল সাধারণত কাঠের, প্লাস্টিকের অথবা ফাইবার গ্লাসের হয়ে থাকে। নিচে ফাইলের বিভিন্ন অংশের নাম উল্লেখ করা হলো এবং চিত্রের মাধ্যমে কাইলের বিভিন্ন অংশ দেখানো হতো।
১) হ্যান্ডেল(Handle)
২) লেজ বা ট্যাং (Tang)
৩) ঘাড় বা হিল (Heel)
৪) তল বা ফেস (Face)
৫) কিনারা বা এক্স (Edge)
৬) পয়েন্ট/টিশ
ফাইলের শ্রেণি বিভাগ (Classification of File)
ফাইলের আকৃতি প্রতি সে.মি. এ দাঁতের সংখ্যা অর্থাৎ ফাইলের স্তর (Grade) এবং কাট (Cut) এর উপর ভিত্তি করে ফাইলকে নিম্নোক্তভাবে ভাগ করা যায়। ফাইলের আকৃতির উপর ভিত্তি করে
নিম্নোক্তভাবে শ্রেণি বিন্যাস করা যায় ।
ফাইলিং কৌশল বা প্রয়োগ (Filing Technique)
যে কোনো ধাতব বস্তুর গা বা পৃষ্ঠদেশ (Surface) সমতল ও মসৃণ করা অথবা কোনো খাল বা কোণাকে সুষম করা ইত্যাদি কাজে ফাইলিং করার প্রয়োজন হয়। এ কাজের জন্য বিভিন্ন গ্রেডের ফাইলের প্রয়োজন হয়। এই প্রেড নির্বাচন করতে হবে কি ধরনের ধাতু ও কি ধরনের কাজ করতে হবে তার ওপর ভিত্তি করে। সাধারণভাবে যে কোনো ধাতব বস্তুর (Surface) মসৃণ করতে হলে এবং কাজটি হালকা প্রকৃতির হলে ফাইল ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে। তা না হলে মেশিন ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে। সাধারণভাবে ফাইলিং করার কাজে তিন ধরনের কৌশল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন ক্রস ফাইলিং, স্ট্রেইট ফাইলিং ও - ফাইলিং ।
ক) ক্রস কাইনিং (Cross Filing)
যে কোনো ধাতব বস্ত্রার পৃষ্ঠদেশ তাড়াতাড়ি সমতল বা মসৃণ করতে হলে এ পদ্ধতির ফাইলিং অনুসরণ করতে হয়। এ কাজে প্রথমে ডাবল কাট গ্রেডের ফাইল নির্বাচন করতে হবে। তারপর ধাতব বস্তু বা মেটাল পিস (Metal Piece) পেট বরাবর উচ্চতার টেবিল ভাইসে (Table Vice) ভালোভাবে বেঁধে নিতে হবে। ডান হাতে ফাইলের হাতল শক্ত করে ধরে ফাইলটি মেটাল পিসের উপর স্থাপন করে বাঁ হাতের আগুল দিয়ে ফাইলের অগ্রভাগে চাল রেখে ফাইলটিকে সামনে-পিছনে চালাতে হবে। সামনের দিকে চালানোর সময় ফাইলের উপর উভয় হাতের চাপ প্রয়োগ করে হবে ।
খ) বৌইট ফাইলিং (Straight Filing)
এ পদ্ধতিতে ওয়ার্ক পিসের (Work Piece) উপর ফাইলকে লম্বভাবে রেখে ফাইলটিকে সামনের দিকে চালাতে হয়। পিছন দিকে টানার সময় ফাইল ওয়ার্ক পিসের উপর থেকে শুন্যে তুলে আনা হয়। এ ভাবে শুধুমাত্র সামনের দিকে ফাইল চাপিয়ে জব (Job) বা ওয়ার্ক পিস (Work Piece) ঘষে মসৃণ করা হয় । সাধারণত চিকন ও সরু মেটাল বা ধাতব বস্তু এভাবে ফাইলিং করা হয়।
গ) পিং (Draw Filing)
এ পদ্ধতিতে কাইলের দুই নাথা দুই হাত দিয়ে ধরে ওয়ার্ক পিলের (Work Piece) উপর ফাইলকে আড়াআড়িভাবে রেখে ফাইলটিকে সামনে-পিছনে দিকে চালাতে হয় । অনেকটা গৃহিনীদের পাটায় শিল দিয়ে মরিচ বাটার মতো। এ ভাবে ফাইলিং করে ওয়ার্ক পিস (Work Piece) পথে সহজেই মসৃণ করা হয়। যে কোনো মেটাল বা ধাতব বস্তুর তলদেশ নিখুঁতভাবে সমৃণ ও সমতল করার কাজে এভাবে ফাইলিং করা হয়। সাধারণত ফাইলিং এর শেষে বা ফিনিশিং পর্যায়ে এ পদ্ধতিতে ফাইলিং করা হয়। এ পদ্ধতিতে ফাইলিং করার জন্য নিজেল কাট ফ্ল্যাট ফাইল ব্যবহার করা হয়।
ড্রিল মেশিন (Drill Machine)
কোনো কিছুকে ছিদ্র করাকে ছিলিং বলা হয়। যে যন্ত্র বা মেশিনের সাহায্যে কোনো কিছুকে ছিন্ন করা হয় তাকে ড্রিল মেশিন বলে। ধাতব বস্তুকে ছিদ্র করার জন্য বিভিন্ন রকমের ড্রিল মেশিন ব্যবহার করা হয় । সাধারণ কাজে ও পিট মেটাল শপে ব্যবহৃত কয়েক প্রকার ড্রিল মেশিনের নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
ড্রিল বিট (Drill Bit)
ড্রিল বিট এক প্রকার কাটিং টুলস। যে টুলসের সাহায্যে কোনো ধাতব বস্তুকে কেটে ভিন্ন করা হয় থাকে ড্রিল বিট বলে। ফার্ম মেশিনারি বা মেশিন শপে বাস্তব বল্ল ছিন্ন করার কাজে ড্রিল মেশিনে বিভিন্ন প্রকার ড্রিল বিট ব্যবহার করা হয়। একটা ছিল বিটের প্রধানত দুটি অংশ থাকে। যেমন -
১) ৰভি (Body): এটি হচ্ছে ধাতু কাটার জন্য ব্যবহৃত মূল অংশ ।
২) শ্যাকে (Shank): ড্রিলকে মেশিনের সাথে আটকানোর জন্য ব্যবহৃত পিছনের অংশ।
টুইস্ট ড্রিল বিটের বিভিন্ন অংশ (Parts of Twist Drill)
যেটাল শপে ড্রিলিং কাজে টুইট ড্রিল বিট ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ ধরনের ছিল বিটের গায়ে পেঁচানো দুটি খাঁজ বা এন্ড (Groove) থাকে, যাকে সাধারণত ফ্যুট (Flute) বলা হয়। এ ফ্যুটের কাজ হচ্ছে গ্রিলের কাটিং এ সহায়তা করা ও কাটিং টিপস্ বের করে দেওয়া। টুইস্ট ছিল বিটের বিভিন্ন জল থাকে। এ প্র অংশগুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো।
১) ডি (Body)
২) নেক (Neck)
৩) ফুটি (Flute)
8) মার্জিন (Margin)
৫) শুরু (Web)
৬) প্যাক (Shank)
৭) টা (Tang)
৮) পয়েন্ট (Point)
৯) ক্লিয়ারেন্স (Clearence)
১০) ডেড সেন্টার (Dead Center)
ড্রিল বিটের অ্যাঙ্গেল (Angle of Drill Bit)
একটা ছিল বিটের বিভিন্ন অংশ থাকে। এ সব অংশ একটা সুনির্দিষ্ট নিয়মে তৈরি করা হয়ে থাকে। এদের একটা অন্যটার সাথে যে কৌণিক অবস্থানে থাকে সে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটা টুইস্ট ড্রিলের বিভিন্ন ধরনের কোণ বা অ্যাঙ্গেলের বিবরণ নিচে উল্লেখ করা হলো।
ক) কাটিং অ্যাঙ্গেল (Cutting Angle)
টুইস্ট ড্রিলের পয়েন্ট বা মাথায় দুটি কাটিং এজ (Cutting Edge) থাকে যা দ্বারা ধাতু ছিদ্র করার সময় খাত বহু কেটে নিম্ন করে থাকে। কাটিং এই দুটি ছিল অক্ষের সাথে যে দুটি কোণ উৎপন্ন করে তাকে কাটিং অ্যাঙ্গেল বলে। অর্থাৎ পয়েন্ট অ্যাঙ্গেলের অর্ধেক হচ্ছে কাটিং অ্যাঙ্গেল।
সাধারণ কাজের জন্য কাটিং অ্যাজেল সাধারণত ৫১%, আর পয়েন্ট বা ছিল অ্যাপেল ১১৮° হয়ে থাকে। কাটিং অ্যাজেলকে লিপ অ্যাপেল ও (Leap Angle) বলা হয়। নরম ধাতু বিদ্র করার কাজে ৪৫° কাটিং অ্যাঙ্গেল ব্যবহার হয়ে থকে। কাটিং অ্যাপেল উভয় দিকে সমান মাপের হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে ছিদ্রের ব্যাস প্রয়োজনের তুলনায় বড় হয়ে যেতে পারে এবং ছিদ্র লাইনের বাইরে চলে যেতে পারে।
খ) পয়েন্ট অ্যাঙ্গেল (Point Angle )
টুইস্ট ড্রিলের পয়েন্ট বা মাথায় কাটিং এজ দুটির মাঝে যে কোণ উৎপন্ন হয় তাকে পরেন্ট অ্যাঙ্গেল বলে। পয়েন্ট অ্যাপেল সব সময় কাটিং অ্যাসেল-এর বিষণ্ন হয়ে থাকে। কারণ, দুটি কাটিং অ্যাহেলের যোগফলই হচ্ছে পয়েন্ট অ্যাসেল। একে অনেক সময় ড্রিল অ্যানেল ও (Drill Angle) বলা হয়। পরেন্ট অ্যাসেল বা ছিল অ্যাসেন সাধারণত ১১৮° হয়ে থাকে। তবে অধিক শক্ত ধাতু ছিন্ন করার কাজে ১১৮° থেকে ১৫০° পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
গ) লিপ ক্লিনারে অ্যাঙ্গেল(Leap Clearence Angle) :
কাটিং এডেন অপর নাম লিপ। এই লিপ বা কাটিং এডের সারফেসের পিছন দিকে অমনভাবে চাল দেওয়া থাকে দেন ড্রিল করার সময় শুধু লিপের বা কাটিং এজের সামনের প্রান্ডই ওয়ার্ক পিচের ছিদ্রের পায়ের সংস্পর্শে থাকে। পিছনের সারবেন মনের ছিদ্রের পারে মা লেগে থাকে বা যাতে ক্লিয়ারেন্স পার। লিপ বা কাটিং এজ যে কৌণিক অবস্থানে এই ক্লিয়ারেন্স সৃষ্টি করে তাকে লিপ ক্লিয়ারেন্স বলে।
ঘ) হেলিক্স বা র্যাক অ্যাঙ্গেল (Helix / Rake Angle ) :
টুইস্ট ড্রিলের ফ্যুট প্যাচানো বা স্পাইরাল করে কাটা থাকে। একে হেলিক্স বা ব্ল্যাক বলে। ড্রিলের হেলিক্স বা অক্ষের সাথে ফ্যুট বা হেলিক্স যে কৌণিক অবস্থানে কাটা থাকে তাকে হেলিক্স অ্যাঙ্গেল বা র্যাক অ্যাঙ্গেল বা স্পাইরাল অ্যাঙ্গেল বলা হয়। হেলিক্স কোণ যত বড় হবে, কাটা তত ভালো হবে। কিন্তু খুব বড় কোণ হলে কাটিং এজ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কাস্ট আয়রন ও স্টিল জাতীয় ধাতু ছিদ্র করার ক্ষেত্রে ১১৮° পয়েন্ট অ্যাঙ্গেল যুক্ত ড্রিল বিটে ৩০ হেলিক্স অ্যাঙ্গেল থাকা প্রয়োজন।
কাটিং স্পিড ও ফিড (Cutting Speed & Feed)
কাটিং স্পিড (Cutting Speed) :
কোনো ধাতব বস্তু ছিদ্র করার সময় ড্রিল বিটের পয়েন্ট তার বাইরের বৃত্তের পরিধির দিকে ধাতব পদার্থের যতটুকু দূরত্ব এক মিনিটে অতিক্রম করে তাকে সেই ড্রিল অপারেশনের কাটিং স্পিড বা কাটার গতি বলে। একে অন্য কথায় সারফেস স্পিড (Surface Speed) বা পেরিফেরাল স্পিড ও (Peripheral Speed ) বলা হয়ে থাকে। অন্যভাবে বলা যায়, ড্রিল বিটের পরিধির নির্দিষ্ট কোনো বিন্দু একক সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকেই বা সারফেস স্পিড বলা হয়ে থাকে। এই স্পিডের দূরত্বের একক ধরা হয় ফুট অথবা মিটারে। আর সময়ের একক ধরা হয় মিনিটে। এখানে মনে রাখতে হবে, কাটিং স্পিড বললেই বুঝতে হবে প্রতি মিনিটে সারফেস ফুট অথবা সারফেস মিটার বলা হচ্ছে। প্রতি মিনিটে কতবার ঘুরলো তা নয়। কারণ, এটা ঘূর্ণনের গতি বা স্পিড নয়। কাটিং স্পিডের একক হচ্ছে সারফেস ফুট/ মিনিট বা সারফেস মিটার / মিনিট । হাই স্পিড স্টিলের (HSS) তৈরি ছিল বিটের জন্য বিভিন্ন ধাতব বস্তুর কাটিং স্পিডের একটা তালিকা নিচের ছকে উল্লেখ করা হলো:
ফিড (Feed):
কোনো ধাতব বস্তু ছিদ্র করার সময় ড্রিল বিট এক পাক ঘুরে ধাতব পদার্থে ছিদ্র করতে করতে সামনের দিকে যতটুকু অগ্রসর হয় তাকে ফিড বলা হয়। অর্থাৎ, এক পাক বা এক রোটেশন (Rotation) ঘুরে যতটুকু ছিদ্র করা হয় তাকেই ফিড বলে। ফিড সাধারণত ইঞ্চির ভগ্নাংশে প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
বিভিন্ন সাইজের ড্রিল বিটের জন্য অনুমোদিত ফিডের একটা তালিকা নিচের ছকে উল্লেখ করা হলো ।
ড্রিলিং প্রণালী বা কৌশল:
১) ড্রিল মেশিনের চাকের চাবি ঘুরিয়ে ড্রিল জ ফাঁক করতে হবে। জ-এর মাঝের ফাঁকের ভিতরে নির্বাচিত ড্রিল বিটের শ্যাংক ঢুকাও । চাকের চাবি ডান দিকে ঘুরিয়ে ছিল বিটকে চাকের মাঝে শক্ত করে আটকাও ।
২) ড্রিল বিটের ফিড হ্যান্ডেলের সাহায্যে স্পিন্ডলকে নিচের দিকে নামাতে হবে।
৩) ওয়ার্ক পিসের চিহ্ন করা স্থানের উপরে ড্রিল বিটকে বসাতে হবে।
৪) ড্রিল মেশিন চালু কর এবং ফিড লিভারের সাহায্যে আস্তে আস্তে নিচের দিকে চাপ দিয়ে ওয়ার্ক পিস ড্রিল করতে হবে।
ড্রিল বিট ভাঙার কারণ (Cause of Breaking the Drill Bit)
বিভিন্ন কারণে ড্রিল বিট ভাংতে পারে। ড্রিল বিট ভাষার কিছু কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো।
১) ওয়ার্ক পিসকে সঠিকভাবে ভাইসে না বাঁধা হলে।
২) ভাইস হতে হঠাৎ করে ওয়ার্ক পিস সরে গেলে।
৩) ড্রিল বিটের ক্লিয়ারেন্স অ্যাঙ্গেল বেশি থাকলে ।
৪) হঠাৎ করে বেশি ফিড দেওয়া হলে।
৫) ড্রিলিং-এর সময় কুল্যান্ট বা কাটিং ফ্লুইড ব্যবহার না করায় ড্রিল বিট আটকে গেলে ।
৬) ড্রিলিং-এর সময় মাঝে মাঝে মেটাল চিপস্ ভেঙে না দিলে অথবা ফ্যুট জ্যাম হয়ে গেলে ।
চিপিং (Chipping)
কোনো ধাতব তলের (Surface) উপরিভাগ হতে ছেনি বা চিজেলের অতিরিক্ত ধাতু কেটে বা ছেঁটে ফেলে ধাতুকে সমান বা মসৃণ করার পদ্ধতিকে চিপিং বলা হয় ।
কোল্ড চিজেন (Cold Chisel)
চিজেল হচ্ছে ধাতব পদার্থকে কেটে হেঁটে সমান ও মসৃণ করার হস্তচালিত যন্ত্র । একে সাধারণ প্রচলিত ভাষায় ছেনি বলা হয়ে থাকে। চিচ্ছেল বা জেনির মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে চিপিং করা হয়। যে চিহ্নে বা ছেনির সাহায্যে ধাতব পদার্থকে ঠাণ্ডা (Cold) অবস্থায় কাটা বা ছাঁটার কাজ করা হয় তাকে কোল্ড চিলে বলে ।
ফুট চিভোগ (Hot Chisel) :
যে হট চিঙেল বা জেনির সাহায্যে ধাতব পদার্থকে তাপ নিয়ে উত্তপ্ত (Hot) অবস্থার কাটা বা ছাঁটার কাজ করা হ ডাকে ফুট চিলে বলে । কোল্ড ডিজেলের প্রকারভেদ ও ব্যবহার
ক) কোল্ড ডিজেলের প্রকারভেদ :
কোল্ড চিজেল বা ছেনি প্রধানত চার প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন-
১) ফ্ল্যাট চিজেল (Flat Chisel)
২) কেপ চিজেল (Cape Chisel)
৩) রাউড নোজ চিলে (Round Nose Chisel)
৪) ডায়মন্ড পয়েন্ট চিজেল (Diamond Poit Chisel
নিম্নে চিত্রে বিভিন্ন প্রকার কোড চিলে দেখানো হলো।
কোন চিজেলের বিভিন্ন অংশ
একটা কোল্ড চিজেলের গঠন খুবই সাধারণ প্রকৃতির হয়ে থাকে। কোল্ড চিজেলের সাধারণত চারটি অংশ থাকে। যেমন- -
* বড়ি (Body) বা শ্যাংক (Shank)
* ফেস (Face )
* পয়েন্ট (Polnt) বা কাটিং
* (Cutting Edge)
* হেড (Head) বা মাথা
নিম্নের চিত্রে কোল্ড চিজেলের বিভিন্ন অংশ দেখানো হলো।
চিপিং প্রণালি বা কৌশল:-
চিজেলের দ্বারা ধাতব বস্তু চিপিং করার কাজ কীভাবে সম্পন্ন করতে হয় তার পদ্ধতি নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
১) ওয়ার্কপিস থেকে সুবিধাজনক দূরত্বে দুই পা একটু ফাঁক করে আরামদায়ক কিন্তু মজবুতভাবে দাঁড়িয়ে চিপিং-এর কাজ শুরু করতে হবে।
২) ওয়ার্কপিসের ধাতুর উপযোগী কাটিং অ্যাঙ্গেল বিশিষ্ট চিজেল নির্বাচন করতে হবে।
৩) বাম হাতে চিজেলের মাথার কাছাকাছি চিত্রের ন্যায় মজবুত করে ধরতে হবে ।
৪) চিজেলকে ওয়ার্কশিসের উপর সঠিক কোণে বসিয়ে ডান হাতে হাতুড়ি দিয়ে চিজেনের মাধায় আঘাত করে করে চিপিং-এর কাজ করতে হবে।
৫) হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করার সময় দৃষ্টি রাখতে হবে ওয়ার্কপিসের যেখানে ধাতু কাটা হচ্ছে সেখানে চিলেজ সঠিকভাবে প্রতিস্থাপিত হয়।
৬) প্রতিবার আঘাত করার পর চিজেলকে পুনরায় সঠিক বিন্দুতে বসিয়ে আবার হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে চিপিং-এর কাজ করতে হবে।
৭) আঘাত করার সময় ডান হাতে হাতুড়ির হাতলের শেষ প্রান্ত ধরে আঘাত করতে হবে ।
৮) এভাবে চিপিং-এর কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
ফ্ল্যাপিং (Scraping)
কোনো সমতল বা মসৃণকৃত ধাতৰ তল (Surface) থেকে ছোট ছোট ধাতব খণ্ড বা কণা চেঁছে ফেলাকে ফ্ল্যাপিং (Scraping) বলা হয় ।
ক্ষ্যাপার (Scraper )
হস্তচালিত ধারালো প্রান্তযুক্ত যে যন্ত্রের সাহায্যে ধাতব বস্তুর সমতল (Plane) বা মসৃণ তল (Smooth Surface) থেকে ছোট ছোট ধাতব কণা বা মরিচা ইত্যাদি চেঁছে ফেলা হয় তাকে ক্ষ্যাপার (Scraper) বলে। ক্র্যাপার সাধারণত হাই গ্রেডর টুল স্টিল দিয়ে তৈরি করা হয়। পুরানো বাতিল ফাইল দিয়ে ভালো ক্র্যাপার তৈরি হয়। তৈরির পর ক্র্যাপারকে হার্ড ও টেম্পার করা হয়।
জ্যাপারের প্রকারভেদ ও ব্যবহার
ক্ষ্যাপার প্রধানত তিন প্রকার হয়ে থাকে। যেমন-
১) চ্যাপ্টা বা ফ্ল্যাট স্ক্যাপার (Flat Saraper )
২) বাকানো বা অর্ধ-গোলাকার ক্যান্সার (Curved/Half-Rounded Scraper)
৩) ত্রি-কোণাকার বা থ্রি-কোয়ার জ্যাপার (Three Square Scraper
বিভিন্ন ধরনের ক্যাম্পারের গঠনাকৃতি ও তানের ব্যবহার সম্পর্কে নিম্নে উল্লেখ করা হলো এবং চিত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার ক্ষ্যাপার দেখানো হলো
১) চ্যাপ্টা বা ফ্ল্যাট ক্র্যাপার (Flat Scraper)
চ্যাপ্টা বা ফ্ল্যাট জ্যাপারের গঠন আসলেই ফ্ল্যাট যা চ্যাপ্টা বলেই একে চ্যাপ্টা বা ফ্ল্যাট ফ্যাপার বলা হয়। এ স্ক্র্যাপার কোনো সমতল খাত পদার্থের ফল থেকে উঁচু ধাত টুকরা, কণা বা মরিচা ইত্যাদি চেঁছে ফেলে তাকে সমতল ও মসৃণ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই জ্যাপার আবার দুই রকমের হয়ে তাকে। যেমন- (ক) পুশ টাইপ (Push Type) ও (খ) গুল টাইগ (Pull Type)। চিত্র : চ্যাপ্টা জ্যাপার
২) বাঁকানো বা অর্থ-গোলাকার ফ্ল্যাপার (Curved / Inif-Rounded Scraper)
যে স্ক্রাপার এক দিকে বাঁকানো অর্ধ-গোলাকারভাবে তৈরি, তাকে বাঁকানো বা অর্ধ-গোলাকার জ্যাপার বলা না। এই ক্যাপারের উভয় পাশের দিক (Side Edge) ধারালো এবং মাঝের সারফে (Surface) খোলের আকারে বাঁকানো থাকে। এর যারা সিলিন্ডার বা বিয়ারিং-এর ভিতরের সারফেস পরিষ্কার করা হয়ে থাকে। অর্থ-গোলাকার ফ্ল্যাপার
৩) ত্রিকোণাকার বা থ্রি-কোয়ার জ্যাপার (Three Square Scraper)
এই ভ্যাপার লম্বার দিকে তিন কোণা করে তৈরি এবং প্রতিটি কোনের প্রাপ্ত ধারালো। এর দ্বারা কোনো ছিদ্রের ভিতরের গা সরু বাকানো তল বা বুশের ভিতরের গ্রিপ পরিষ্কার এবং মসৃণ করা হয়। এই ক্যাপার তিন কোপার ফাইল প্রাইভিং-এর মাধ্যমে মসৃণ করে তৈরি করা হয়।
ফ্যাপিং প্রশানি বা কৌশল:- (Scraping Method)
ক্ষ্যাপার দিয়ে খুব কম পরিমান ধাতু ক্ষয় করা যার বলে অধিক ক্ষরের কাজ প্রথমে ফাইল বা মেশিনের সাহায্যে করে পরে সেই স্থানে স্ক্র্যাপার ব্যবহার করা হয়। জ্যাপার দিয়ে জ্যাপিং-এ ভালো ফল পেতে হলে সঠিক নিয়মে ক্ষ্যাপ করা প্রয়োজন। নিচে জ্যাপিং করার কিছু সঠিক নিয়ম উল্লেখ করা হলো।
১) প্রথমে ওয়ার্কশিসকে টেবিল ভাইসে ভালো করে বেঁধে নিতে হবে ।
২) সমতল বা ফ্ল্যাট সারফেস ফ্ল্যাপিং-এর ক্ষেত্রে মার্কিং বোল্ট বা ইঞ্জিনিয়ার্স বোল্ট পেস্ট হালকাভাবে লাগিয়ে নিতে হবে । সারফেসের অসমতল স্থানসমূহ বোল্ট লেগে চিহ্নিত হবে এবং তা ক্র্যাপারের সাহায্যে তুলে ফেলতে সুবিধা হবে।
৩) ফাইল ধরার একই নিয়মে ক্র্যাপার ধরতে হবে। মোটা ফ্ল্যাপিং-এর ক্ষেত্রে বৃদ্ধাঙ্গুল হাতলের উপরে রেখে এবং হালকা কাজের ক্ষেত্রে তর্জনী হাতলের উপরে রেখে ফ্ল্যাপিং করতে হবে।
৪) ওয়ার্কপিসের গায়ে স্ক্র্যাপারের ধারালো প্রাপ্ত না দাবিয়ে শুধু উপরের আবরণ কাটতে হলে ফ্ল্যাপার একটু কোণাকুণি করে ধরে হাতকে সামনে পিছনে চালাতে হবে ।
৫) ফ্ল্যাপিং করার পর অনুরূপ কোনো নমুনা বা যন্ত্রাংশের সাথে তুলনা করে ফিনিশিং পরীক্ষা করতে হবে। ফ্ল্যাট সারফেস পরীক্ষা করার জন্য সারফেস প্লেট ব্যবহার করতে হয়। গোলাকার সারফেসের সমগোত্রীয় অন্য কোনো গোলাকার যন্ত্রাংশের সাথে মিলিয়ে পরীক্ষা করতে হবে।
৬) পরীক্ষা করার পর আবার ওয়ার্কপিসের সারফেসে মার্কিং বোল্ট মাখিয়ে অসমান স্থান ক্র্যাপিং করতে হবে । মার্কিং বোল্ট না পাওয়া গেলে আর্দ্র চক ব্যবহার করা যায় । উপরোক্ত প্রক্রিয়া বার বার চালিয়ে যেতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত সঠিক মানের মসৃণতা না পাওয়া যাবে।
সর্বোপরি ক্র্যাপিং কাজ করার সময় সঠিক নিয়ম মেনে স্ক্র্যাপিং-এর কাজ করতে হবে।
গ্রাইডিং (Grinding):
বিভিন্ন ধরনের সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতির নির্দিষ্ট আকার দেওয়ার কাজে এবং এ কাজের ফিনিশিং-এর জন্য প্রাইন্ডিং মেশিন বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। হস্তচালিত যন্ত্রপাতি, যন্ত্রের ফলা বা বিট, মেশিন টুলের কাটার ইত্যাদি শাণ দেওয়া বা ধার দেওয়ার জন্য, কিংবা ঢালাই করা, ওয়েল্ডিং করা, মেশিনিং করা যন্ত্রাংশ বা ধাতব পদার্থ ইত্যাদি মসৃণ করার কাজে গ্রাইভিং মেশিন ব্যবহার করা হয়। ওয়ার্কশপে ব্যবহৃত গ্রাইন্ডিং মেশিন প্রধানত দুই প্রকার। যথা -
• বেঞ্চ গ্রাইভার (Bench Grinder)
• পেডাস্ট্যাল গ্রাইন্ডার (Pedestal Grinder)
গ্রাইন্ডিং মেশিনের বিভিন্ন অংশ
বেঞ্চ প্রাইভারের বিভিন্ন অংশের নাম নিচে দেখা হলো
এবং পাশের চিত্রে দেখানো হলো
১) বৈদ্যুতিক মোটর
২) পাওয়ার সুইচ
৩) যাইন্ডিং হুইল
৪) হুইল কভার
৫) ওয়ার্ক রেস্ট/সাপোর্ট
প্রাইভিং প্রণালি বা কৌশল:-
কোনো ধাতব বস্তু বা বগ্নাংশকে প্রাইভিং মেশিনের সাহায্যে নির্দিষ্টভাবে কেটে সাইজ করা অথবা মসৃণ করার জন্য প্রাইভিং করার সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি জানা থাকা প্রয়োজন। ভালো ফল পেতে হলে উক্ত নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করে গ্রাইন্ডিং করতে হবে। নিচে বেঞ্চ ড্রাইভারের সাহায্যে প্রাইন্ডিং করার সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো।
১) গ্রাইভিং মেশিন চালু করে জব বা ওয়ার্কপিসকে দুই হাতে ধরে প্রাইভিং হুইল থেকে খু সামান্য দূরে (১ ইঞ্চি) ওয়ার্করেস্টের উপর স্থাপন করতে হবে।
২) এরপর খুব ধীরে ধীরে দুই হাত সামনে বাড়িয়ে ওয়ার্কপিসকে প্রাইভিং হুইলের সামনের দিক (ফেল্স) এর সংস্পর্শে এনে চাপ দিয়ে ধরতে হবে।
৩) ওয়ার্কপিসকে গ্রাইন্ডিং হুইলের সম্পূর্ণ গ্রন্থ বরাবর ধরে অথবা ডানে-বায়ে সরিয়ে গ্রাইন্ডিং করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, গ্রাইন্ডিং করার সময় ওয়ার্কপিস যেন না কাঁপে এবং হুইলের ফেস যেন সমতল থাকে।
মেশিন গ্রাইন্ডিং-এ সাবধানতা :
প্রাইভিং মেশিন দিয়ে কাজ করার সময় কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে অবহেলা করলে বা কাজের সময় অসাবধান হলে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই প্রাইভিং মেশিনে কাজ করার সময় যে সব সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন তার একটি তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হলো
১) কাজের আগে ও পরে মেশিন পরীক্ষা করে দেখতে হবে তা ভালো ও কার্যক্ষম আছে কিনা ।
২) গ্রাইন্ডিং-এর সময় অবশ্যই দুই হাতে দস্তানা বা গ্লোভস্ পরে কাজ করতে হবে।
৩) চোখের নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই সেফটি গগলস পরে গ্রাইন্ডিং-এর কাজ করতে হবে।
৪) কোনো চিলে-ঢালা পোশাক পরিধান করে গ্রাইন্ডিং-এর কাজ করা যাবে না, তাতে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য অ্যাপ্রোন পরে এইিন্ডিং-এর কাজ করতে হবে।
৫) খোলা হুইলে গ্রাইন্ডিং-এর কাজ করা উচিত নয়। সব সময় হইল পার্ড দিয়ে ঢাকা অবস্থায় প্রাইন্ডিং-এর কাজ করতে হবে।
৬) প্রাইন্ডিং করার সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রাইন্ডিং করতে হবে ।
স্ক্রু থ্রেড (Screw Thread):
কোনো গোলাকার লখা ধাতব খণ্ড বা রঙের এক মাথার চারদিকে বৃত্তাকারে অগ্রসরমান নির্দিষ্ট মাপের পেঁচানো খাঁজকাটা থাকলে তাকে স্কু-ডে (Srew Thread) বলা হয়। সাধারণত বোল্টের এক মাথায় এবং নাটের ভিতরের দিকের পায়ে গ্রেড বা প্যাচ ফাটা থাকে। বোল্ট ও নাট-কে একসাথে সংযুক্ত করে আটকে রাখার কাজে গ্রেড ব্যবহৃত হয়।
থ্রেডের বিভিন্ন অংশ(Parts of Thread):
একটা হু-গ্রেড বিভিন্ন অংশ নিয়ে গঠিত । -
• পিচ (Ptch)
• অ্যাঙ্গেল (Angle)
• জেট (Creat)
• রুট (Root)
• গভীরতা (Depth)
• থ্রেডের সংখ্যা (Number of Tread)
৮.২ ফার্ম মেশিনারি শপে ব্যবস্থিত ইসল এর রক্ষনাবেক্ষণ:-
ফার্ম মেশিনারি শপে ব্যবহৃত টুলস -এর রক্ষণাবেক্ষনের একটি তালিকা নিম্নরূপ
১) কাজের শেষে প্রতিটি টুলস ভালো করে পরীক্ষা করতে হবে এর কোনোটির পরেন্ট বা টিল বাঁকা হয়েছে কিনা বা পেঁপে কিনা ।
২) কাজের শেষে ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে।
৩) সংরক্ষণের লাগে মরিচার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রতিটি টুলস-এর পায়ে লুব্রিকেটিং অয়েল বা গ্রিন লাগাতে হবে।
৪) কাজের শেষে প্রতিটি টুলুন নির্দিষ্ট টুলবক্সে পৃথক পৃথক খোপে আর্দ্রতা যুক্ত ও শুকনো স্থানে র করতে হবে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. টুলস কী ?
২. হ্যান্ড টুলস কী ?
৩. মেজারিং টুলস বা পরিমাপক যন্ত্র কী ?
৪. মার্কিং টুলস বা আকার চিহ্নিতকরণ যন্ত্র ও কাটিং টুলস কী ?
৫. টেস্টিং টুলস বা পরীক্ষাকরণ যন্ত্র কী ?
৬. স্প্যানার বা রেঞ্চ কত প্রকার ও কী কী ?
৭. হ্যামার কত প্রকার ও কি কি ?
৮. প্রয়াস কী ?
৯. হ্যাক 'স' কোনো ধরনের টুলস ?
১০. হ্যাকস ব্রেড কত প্রকার ও কী কী ?
১১. ড্রিলিং কী ? ড্রিল বিট কাকে বলে ?
১২. ড্রিল মেশিন কী ?
১৩. কাটিং অ্যাঙ্গেল কাকে বলে ?
১৪. পয়েন্ট অ্যাঙ্গেল কাকে বলে ?
১৫. হেলিক্স অ্যাঙ্গেল কাকে বলে ?
১৬. কোল্ড চিজেল কত প্রকার ও কী কী ?
১৭. স্ক্র্যাপিং কী ?
১৮. জ্ঞ্যাপার কাকে বলে?
১৯. এক্সটারনাল থ্রেড কী?
২০. ইন্টারনাল থ্রেড কী ?
২১. রাইট হ্যান্ড ফ্লু-ডে কী ?
২২. লেট হ্যান্ড ক্রু-থ্রেড কাকে বলে ?
২৩. গ্রাইন্ডিং কী?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. টুলস কত প্রকার ও কী কী ?
২. বিভিন্ন প্রকার হ্যান্ড টুলসের নাম লিখ ।
৩. বিভিন্ন প্রকার মেজারিং টুলসের নাম লিখ ।
৪. বিভিন্ন প্রকার মার্কিং টুলসের নাম লিখ ।
৫. ফার্ম শপে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাটিং টুলসের নাম লিখ ।
৬. বিভিন্ন টেস্টিং টুলসের নাম লিখ ।
৭. ফার্ম মেশিনারি সপে ব্যবহ্নিত টুলস এর রক্ষণাবেক্ষণ উল্লেখ কর ?
৮. স্পানার বা রেঞ্চ এর একটি তালিকা তৈরি কর ।
৯. বিভিন্ন প্রকার প্রায়ার্সের নাম উল্লেখ কর।
১০. হ্যাক 'স' ফ্রেম কত প্রকার ও কী কী ?
১১. একটি হ্যাক-স এর চিত্র অংকন করে ইহার বিভিন্ন অংশ দেখাও।
১২. একটি ফ্ল্যাট ফাইলের চিত্র অংকন করে তার বিভিন্ন অংশ দেখাও।
১৩. সয়িং এর সাবধানতার তালিকা তৈরি কর।
১৪. হ্যাকস ব্লেড ভাঙার কারণসমূহ বর্ণনা কর।
১৫. ফাইল কী? ফাইলের কাজ কী ?
১৬. আকৃতি বা গঠন অনুসারে ফাইল কয় প্রকার ও কী কী ?
১৭. ড্রিল মেশিনের শ্রেণিবিভাগ উল্লেখ কর।
১৮. ছিল বিটের অ্যাঙ্গেল কত প্রকার ও কিকি ?
১৯. কাটিং অ্যাঙ্গেল, পয়েন্ট অ্যাঙ্গেল, হেলিক্স অ্যাঙ্গেল এদের অ্যাঙ্গেলের পরিমান কত ?
২০. ফিড ও কাটিং স্পিড বলতে কী বোঝায় ?
২১. চিপিং কি ? হট চিজেলের কাজ কী ?
২২. জ্যাপার কত প্রকার ও কী কী ?
২৩. গ্রাইন্ডিং মেশিন কত প্রকার ও কী কী ?
২৪. বেঞ্চ গ্রাইন্ডিং মেশিনের বিভিন্ন অংশের নাম উল্লেখ কর।
২৫. বেঞ্চ গ্রাইন্ডিং মেশিনের বিভিন্ন অংশের নাম উল্লেখ কর।
২৬. ফ্লু-থ্রেড কী ? ক্রু-থ্রেড কত প্রকার ও কী কী ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. ফাইলিং কৌশল বর্ণনা কর ।
২. ফাইলিং এর সাবধানতার তালিকা তৈরি কর।
৩. সয়িং প্রণালীর রূপ রেখা বর্ণনা কর।
৪. ড্রিলিং প্রণালী বা কৌশল বর্ণনা কর।
৫. একটি টুইস্ট ড্রিল বিটের চিত্র অংকন করে ইহার বিভিন্ন চিহ্নিত কর।
৬. চিপিং প্রণালি বা কৌশল বর্ণনা কর।
৭. প্রত্যেক প্রকার ফ্ল্যাপারের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
৮. জ্যাগিং প্রণালি বা কৌশল বর্ণনা কর ।
৯. গ্রাইন্ডিং প্রণালি বা কৌশল বর্ণনা কর।
১০. একটি ক্রু-থ্রেডের চিত্র অংকন করে ইহার বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত কর।
১১. ফার্ম মেশিনারি শপে ব্যবহৃিত টুলস এর রক্ষণাবেক্ষণ বর্ণনা কর।
ওয়েল্ডিং এক প্রকার জয়েন্ট বা জোড়া লাগানোর প্রক্রিয়া । যা একই জাতীয় বা ভিন্ন জাতীয় দুটি ধাতব পদার্থকে তীব্র উত্তাপের মাধ্যমে জোড়া লাগানো হয়। এ অধ্যায় ওয়েল্ডি এর সংজ্ঞা, ওয়েল্ডিং এর শ্রেণি বিভাগ, আর্ক ওয়েল্ডিং এ ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, আর্ক ওয়েল্ডিং-এর জোড়, স্পট ওয়েল্ডি, আর্ক ওয়েল্ডিং এর সাবধানতা ইত্যাদি আলোচনা করা হয়েছে ।
দুটি ধাতব পদার্থকে তীব্র উত্তাপের মাধ্যমে গলিয়ে পরস্পরের সাথে জোড়া লাগানোকে ওয়েল্ডিং বলা হয় । এ জোড় পদ্ধতি তাপ ও চাপে অথবা উভয়ের সংমিশ্রণে করা হয়। এ কাজে অধিকাংশ সময় ফিলিং ম্যাটেরিয়াল (Filling Material) ব্যবহার করা হয়। এই ফিলিং বস্তুর গলনাঙ্ক সাধারণত জোড়া লাগানো ধাতব পদার্থের গলনাঙ্কের সমান হয়ে থাকে। উত্তাপের কারণে ধাতু গলে গিয়ে যে শূন্যতার সৃষ্টি করে ফিলার ধাতু সেই শূন্যস্থান পূরণ করে ।
বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ওয়েল্ডিং-
এর বিভিন্ন শ্রেণি বিভাগ করা যায়। নিম্নে ওয়েল্ডিং-এর বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক শ্রেণি বিভাগ দেখানো হলো।
ক) তাপের উৎসের ভিত্তিতে শ্রেণি বিভাগ
তাপের উৎসের ভিত্তিতে ওয়েল্ডিংকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন-
১) আর্ক ওয়েল্ডিং ( Arc Welding)
২) গ্যাস ওয়েল্ডিং (Gas Welding )
খ) পদার্থের উপর চাপের ভিত্তিতে ওয়েন্ডিং-এর শ্রেণি বিভাগ
পদার্থের উপর চাপের ভিত্তিতে ওয়েল্ডিংকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
১) ফোর্ড ওয়েল্ডিং বা প্রেসার ওয়েল্ডিং (Forge Welding)
২) নন-প্রেসার বা ফিউশন ওয়েল্ডিং (Fusion Welding)
গ) মেটালজিক্যাল বৈশিষ্টের ভিত্তিতে ওয়েল্ডিং-এর শ্রেণি বিভাগ
মেটালার্জিক্যাল বৈশিষ্টের ভিত্তিতে ওয়েল্ডিংকে প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন-
১) অক্টোজেনাস ওয়েল্ডিং (Autogenous Welding)
২) হোমোজেনাস ওয়েল্ডিং (Homogenous Welding)
৩) হেট্রোজেনাস ওয়েল্ডিং (Hetrogenous Welding )
ফ্লাক্স ও ফ্রান্সের কাজ বা ব্যবহার
ফ্লাক্স :
ফ্লাক্স এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ যা ওয়েল্ডিং এর সময় জবে অক্সিজেনের যৌগ গঠন বাধা প্রদান করে এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক বিক্রিয়া হতে জবকে রক্ষা হবে। নিখুঁত এবং দ্রুত ওয়েল্ডিং-এর জন্য এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন প্রকারের ফ্লাক্স পাউডার, পেস্ট, কঠিন এবং তরল আকারে পাওয়া যায়। এদের কতকগুলো জোড়া স্থানের ক্ষয় করে, কতগুলো জোড়াস্থানের কম ক্ষয় করে, অথবা কতকগুলো ক্ষয় করে না ।
ফ্লাক্সের কাজ বা ব্যবহার :
১. ওয়েল্ডিং এর সময় ফ্লাক্স বহুবিধ কাজ করে যেমন ফ্লাক্স ওয়েন্ডিং জোড়ার চারদিকে এমন গ্যাসীয় আবরণ সৃষ্টি করে যাতে জোড়া স্থানে বায়ুর অক্সিজেন ক্ষতিকারক অক্সাইড তৈরি করতে পারে না।
২. জব এবং ফিলার মেটানকে দ্রুত গলাতে সাহায্য করে ।
৩. ধাতুমল তৈরিতে সহায়তা করে।
৪. ভালো পেনিটেশন অর্থাৎ জবের দুই প্রাপ্ত গলে একটির মধ্যে আর একটি প্রবেশ করাতে সহায়তা করে যাতে জোড়ার শক্তি বেশি হয়।
৫. ফ্লাক্স ওয়েল্ড করা স্থানে স্লাগের আবরণ সৃষ্টি করে যা জোড়াস্থানকে ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হতে সহায়তা করে; ফলে জোড়াস্থান নমনীয় হয় এবং এর শক্তি বেশি হয়।
৬. ফ্রান্স ব্যবহারের ফলে গলিত ধাতু জবের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে না তাই জোড়াস্থানে সুন্দর হয় ।
৭. ফ্লান্ত মূল ধাতু, ফিলার মেটাল অর্থাৎ ওয়েল্ডিং-এর সময় জোড়াস্থানে যে মেটাল দেওয়া হয়, তাকে ভালোভাবে গালিয়ে সঠিকস্থানে পৌঁছে দিতে সহায়তা করে ।
৮. ওয়েল্ড মেটাল বা রানিং বিডের সৌন্দর্য ও খাঁটিত্ব রক্ষা করে ।
ফ্লাক্স মেটেরিয়ালস :
ফ্লাক্স হিসেবে ব্যবহৃত হয় এরূপ রাসায়নিক পদার্থের নাম নিচে দেওয়া হলো-
১। বোরাক্স,
২। বোরিক অ্যাসিড,
৩। ফসফেট,
৪। ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেট,
৫। লিথিয়াম ক্লোরাইড,
৬ পটাসিয়াম ক্লোরাইড,
৭। চুন ইত্যাদি।
আর্ক ওয়েন্ডিং (Arc Welding)
বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গ বা বিদ্যুৎ ঝলকানির মাধ্যমে সৃষ্ট উত্তাপে ধাতু গলিয়ে জোড়া লাগানোর পদ্ধতিকে আর্ক ওয়েন্ডিং ( Arc Welding) বলে।
আর্ক ওয়েল্ডিং-
এ বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়। এদের নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
১) ওয়েল্ডিং মেশিন (Welding Machine)
২) সংযোগ তার বা পাওয়ার ক্যাবল (Power Cable)
৩) ইলেকট্রোড হোন্ডার ( Electrode Holder)
৪) ক্যাবল কানেক্টার (Cable Connector)
৫) গ্র্যাউন্ড ক্যাম্প (Ground Clamp )
৬) চিপিং হ্যামার (Chipping Hammer)
৭) অয়্যার ব্রাশ (Wire Brush )
৮) ফেস শিশু (Face Shield )
ইলেকট্রোড হচ্ছে আর্ক ওয়েন্ডিং এ ব্যবহৃত কিলার ম্যাটেরিয়াল। ইলেকট্রোড ছাড়া আর্ক ওয়েল্ডিং করা সম্ভব নয়। এগুলো দেখতে পেন্সিলের চেয়ে সরু লম্বা কাঠির মতো যার উপরিভাগে একটা রাসায়নিক পদার্থের প্রলেপ দেওয়া থাকে। ইলেকট্রোডকে প্রধান দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন,
* কনজ্যুমেবল ইলেকট্রোড (Consurable Electrode)
* নন-কনমেবল ইলেকট্রোড (Non-Consumable Electrode)
কনজুমেবল ইলেকট্রোড (Consumable Electrode)
এ ধরনের ইলেকট্রোড ওয়েন্ডিং কালে উত্তাপে গলে গিয়ে ধাতুর সাথে মিলে জোড়া লাগার ফলে শেষ হয়ে যায়। তাই এর নামকরণ হয়েছে কনজ্যুমেবল ইলেকট্রোড বা নিঃশেষযোগ্য ইলেকট্রোড । এ ইলেকট্রোড বিভিন্ন ধরনের ধাতু দিয়ে তৈরি করা হয় যা ওয়েন্ডিং করা ধাতুর উপর নির্ভর করে। কনজ্যুমেবল ইলেকট্রোভকে প্রধানত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন-
* ফ্রান্স কোর্টেড ইলেকট্রোড (Flux Coated Electrode)
* নন-ফোর্টেড ইলেকট্রোড (Non-Coated Electrode)
ফ্লাক্স কোর্টেড ইলেকট্রোড (Flux Conted Electrode)
ফ্লাক্স কোটেড ইলেকট্রোড দিয়ে নন-কোটেড ইলেকট্রোড অপেক্ষা ভালোভাবে ওয়েল্ডিং-এর কাজ সম্পন্ন হয়। তাই এই ইলেকট্রোড সচারাচর সর্বত্র ব্যবহৃত হয় এবং এ জন্য একে কনভেনশনাল ইলেকট্রোড (Conventional Electrode) ও বলা হয়ে থাকে। এ ইলেকট্রোডর পারে ফ্রান্স কোটিং দেওয়া থাকে, বা ইলেকট্রোড ধাতুকে পুড়িয়ে ফেলা বা অক্সিডাইজ হওয়া থেকে রক্ষা করে। ফ্লাক্স কোর্টেড ইলেকট্রোডকে আবার দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন-
• হালকা কোটিং দেওয়া ইকো (Light Coated Electrode)
• ভারি কোটিং দেওয়া ইলেকট্রোড (Heavy Coated Electrode)
ফ্রান্স কোর্টেড ইলেকট্রোড (Flux Conted Electrode)
ফ্লাক্স কোটেড ইলেকট্রোড দিয়ে নন-কোটেড ইলেকট্রোড অপেক্ষা ভালোভাবে ওয়েল্ডিং-এর কাজ সম্পন্ন হয়। তাই এই ইলেকট্রোড সচারাচর সর্বত্র ব্যবহৃত হয় এবং এ জন্য একে কনভেনশনাল ইলেকট্রোড (Conventional Electrode) ও বলা হয়ে থাকে। এ ইলেকট্রোডর পারে ফ্রান্স কোটিং দেওয়া থাকে, বা ইলেকট্রোড ধাতুকে পুড়িয়ে ফেলা বা অক্সিডাইজ হওয়া থেকে রক্ষা করে। ফ্লাক্স কোর্টেড ইলেকট্রোডকে আবার দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন-
• হালকা কোটিং দেওয়া ইকো (Light Coated Electrode)
• ভারি কোটিং দেওয়া ইলেকট্রোড (Heavy Coated Electrode)
নন-কনজ্যুমেবল ইলেকাট্রোড (Non-Consumable Electrode)
এ ধরনের ইলেকট্রোড ওয়েন্ডিং কালে উত্তাপে গলে গিয়ে ধাতুর সাথে মিশে যায় না বা নিঃশেষ হয়ে যায় না। তাই এর নামকরণ হয়েছে নন-কনজামেল ইলেকট্রোড । এ ইলেকট্রোড বিভিন্ন প্রকার ধাতু দিয়ে তৈরি করা হয় । যেমন -
● কার্বন (Carbon )
● গ্রাফাইট (Graphite)
● টাংস্টেন (Tungsten)
ওয়েল্ডিং জোড় বা ওয়ে জয়েন্ট (Weld Joint)
দুটি ধাতব পদার্থকে ওয়েন্ডিং করে যে জোড়া দেওয়া হয় তাকে ওয়েন্ড জয়েন্ট বলে। আর্ক ওয়েল্ডিং ও গ্যাস ওয়েল্ডিং-এর মাধ্যমে সাধারণত পাঁচ প্রকার জোড়া দেওয়া যায়। যেমন-
১) এজ জয়েন্ট (Edge Joint )
২) কর্নার জয়েন্ট (Corner Jaint)
৩) টি জয়েন্ট (T-Joint)
৪) ল্যাপ জয়েন্ট (Lap Joint)
৫) এটি জয়েন্ট (Butt Jaint)
১) এজ জয়েন্ট (Edge Jaint )
দুটি ধাতব পাতকে একটার উপর আরেকটারে লাগিয়ে উভয়ের কিনারা বরাবর ওয়েন্ডিং করে যে জোড়া দেওয়া হয় তাকে এজ মায়েন্ট বলে।
২) কর্নার লরেন্ট (Corner Joint )
দুটি ধাতব পাতকে তাদের কিনারা একটার উপর আরেকটাকে ৯০° কোণে এক সাথে মিলিয়ে ওয়েন্ডিং করে যে জোড়া দেওয়া হয় তাকে কর্নার জয়েন্ট বলে।
৩) টি-জয়েন্ট (T-Jolnt )
একটা ধাতব পাতকে অন্য আরেকটা ধাতব পাতের উপর খাড়াভাবে, দুই পাশেই ১০° কোণ করে বসিয়ে ওয়েন্ডিং করে যে জোড়া দেওয়া হয় তাকে টি-জয়েন্ট বলে।
৪) ল্যাপ জয়েন্ট (Lap Joint)
একটা ধাতব পাতকে অন্য আরেকটা ধাতব পাতের উপর ওভারল্যাপিং (Over Lapping) করে বসিয়ে ওয়েল্ডিং করে যে জোড়া দেওয়া হয় তাকে ল্যাপ-জয়েন্ট বলে।
৫ ৰাট রেন্ট (Batt Joint)
একই সমতলে বসিয়ে দুটি বাস্তব পাতের কিনারা পাশাপশি লাগিয়ে ওয়েন্ডিং করে যে জোড়া লেওরা হয় তাকে বাট-জয়েন্ট বলে।
মার্ক ওয়েন্ডিং কার্যপদ্ধতি চিত্র :
বাট-জয়েন্ট করে প্রয়োজনে (আর্ক ওয়েল্ডিং এ) হেলমেট বা ওয়েন্ডিং কার্যপদ্ধতির ধাপগুলো নিম্নরূপ :
১. ওয়েস্তারকে কাজের উপযুক্ত পোশাক পরিধান হ্যান্ডশীল্ড ব্যবহার করতে হবে।
২. জবের উপর হতে জিল, তেল, মরিচা, বালি ইত্যাদি পরিষ্কার করতে হবে।
৩. লে-আউট অনুযায়ী প্রয়োজনে জনের পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করাতে হবে।
৪. জবের গুরুত্ব জোড়ার ধরন এবং ইলেকট্রোডের পরিমাপের উপর নির্ভর করে কারেন্ট নির্ধারণ করতে হবে।
৫. আর্ক ওয়েল্ডিং এর জন্য জবের গুরুত্ব অনুযায়ী ইলেকট্রোড এবং গ্যাস ওয়েল্ডিং এর ক্ষেত্রে ফিলার রঙ নির্বাচন করতে হবে।
৬. ধাতব দণ্ডকে সঠিক স্থানে রাখার জন্য এবং উত্তাপে জোড়া যাতে বাঁকা না হয় সেজন্য ভাবের দুই বা তিন স্থানে ট্যাক নামে ছোট ছোট ওরেঙ্ক করে নিতে হয়ে।
৭. আর্কের দৈর্ঘ্য ঠিক রেখে সঠিক কোণে ইলেকট্রোড ধরতে হবে এবং সঠিক গতিতে পরিচালনা করতে হবে।
৮.একটি রান টানার পর আরেকটি রান টানার পূর্বে প্রাগের আবরণ পরিষ্কার করতে হবে।
দুটি পাতলা ধাতব সিঁটকে স্পট ওয়েল্ডিং মেশিনের দুটি পয়েন্টে মাঝে রেখে চাপ দিয়ে উত্তাপের মাধ্যমে জোড়া দেওয়াকে স্পট ওয়েন্ডিং বলে। স্পট ওয়েল্ডিং বা রেজিট্যাল ওয়েডিং এ সাধারণত। পরেন্টেড (চোখা) ও ইলেকট্রোড (কন্ডাকটর) ব্যবহার করা হয়। কাজেই এই দুটি ইলেকট্রোডের মাঝখানে দুটি ধাতব পদার্থ স্থাপন করে ইলেকট্রোভারের সাহায্যে চাপ দিয়ে ধরার পর কম প্রোস্ট এবং বেশি অ্যাম্পিয়ার এ বিদ্যুৎ প্রবাহ করা হয়। ইহাতে এক ইলেকট্রোড হতে অপর ইলেকট্রোডে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে ইলেকট্রোডের প্রাপ্ত বরাবর মেটাল গলন ধরে এবং ইলেকট্রোডের মাধ্যমে চাপ প্ররোগে সেখানে স্পটের আকারে ধাতু গলে জোড়া লাগে।
পার্ক ভরেন্ডিং কাজ করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি। এ বিষয়ে অবহেলা করলে বা কাজের সমর অসাবধান হলে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ভরেন্ডিং করার সময় যে সব সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন তার একটি তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
৬) আর্ক ওয়েল্ডিং করার সময় চোখ ও মুখমণ্ডলের সুরক্ষার জন্য অবশ্যই পাশের চিত্রের ন্যায় ফেস-শিশু ব্যবহার করতে হবে। খালি চোখে কখনই ধরেন্ডিং করা উচিত নয়, এতে ব্যবহারকারীর চোখ নষ্ট হবে। অন্ধ হয়ে যেতে পারে ।
৭) আর্ক ওয়েল্ডিং করার সময় পাশের চিত্রের ন্যায় হাতে রাবার প্রোভস্ এবং গারে অ্যাপ্রোন পরে ওয়েন্ডিং কাজ করতে হবে।
৮) ওয়েন্ডিং কাজ শুরু করার আগে মেশিনের সাথে আর্থিং বা গ্রাউন্ড সংযোগ দিয়ে নিতে হবে।
৯) কাজ শুরু করার আগে মেশিনের সাথে সংযুক্ত সকল ক্যাবল সংযোগ ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখতে হবে কোথাও কোনো দূর্বলতা বা চিলা আছে কিনা ।
১০) বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ কাছাকছি স্থানে রাখা উচিৎ, যাতে কাজের সময় যে কোনো জরুরি প্রে মেইন সুইচ বন্ধ করা যায়।
১১) ইলেকট্রোড লাইনের সাথে দূর্বল ক্যাবল ব্যবহার করা যাবে না। সব সময় সঠিক মানের মোটা ক্যাবল ব্যবহার করতে হবে।
১২) ওয়েল্ডিং ইলেকট্রোডকে হোল্ডারের সাথে মজবুতভাবে আটকিয়ে নিয়ে ওয়েন্ডিং কাজ করতে হবে।
১৩) সদ্য ওয়েন্ডিং করা স্থানে কখনো হাত দিতে নেই। হাত দিলেই হাত পুড়ে যাবে।
১৪) ওয়েন্ডিং করা স্থানে চিপিং অথবা গ্রাইভিং করার সময় চোখে নিরাপদ চশমা বা সেফটি গগলস হা করতে হবে।
১৫) ওয়েল্ডিং কাজের কাছাকাছি স্থানে কোনো দাহ্য পদার্থ রাখা উচিত নয়।
১৬) নিরাপত্তার জন্য ওয়েন্ডিং কক্ষে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র বা ফায়ার এক্সটিংগুইশার মজুদ রাখা উচিত।
১৭) ওয়েল্ডিং কক্ষে প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামাদি বা ফার্স্টএইড বক্স প্রস্তুত রাখা উচিত।
১৮) বদ্ধ কক্ষে ওয়েন্ডিং করা উচিত নয়। কক্ষে প্রচুর বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা উচিত।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. আর্ক ওয়েল্ডিং কী?
২. ওয়েল্ডিং প্রধানত কত প্রকার ও কীকী?
৩. স্পট ওয়েল্ডিং কাকে বলে।
৪. পদার্থের উপর চাপের ভিত্তিতে ওয়েন্ডিং কত প্রকার ও কী কী?
৫. মেটালার্জিক্যাল বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ওয়েন্ডিং কত প্রকার ও কী কী?
৬. আর্ক ওয়েল্ডিং-এর জোড় জয়েন্ট কাকে বলে?
৭. ইলেকট্রোড কী?
৮. ফ্লাক্স কী?
৯. ইলেকট্রোড কত প্রকার ও কী কী?
১০. নন-কনজ্যুমেবল ইলেকট্রোড কত প্রকার ও কী কী?
১১. নন-কনজ্যুমেবল ইলেকট্রোড কী কী পদার্থ দ্বারা তৈরি করা হয়?
১২. ফ্লাক্সের কাজ কী?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. আর্ক ওয়েল্ডিং কাকে বলে?
২. আর্ক ওয়েন্ডিং-এ ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির একটি তালিকা তৈরি কর।
৩. স্পট ওয়েল্ডিং করার পদ্ধতি বর্ণনা কর।
৪. ইলেকট্রোডের কাজ কী ?
৫. কনজ্যুমেবল ইলেকট্রোড কাকে বলে ?
৬. ফ্রান্সের কাজ বা ব্যবহার লিখ ?
৭. ফ্লাক্স মেটেরিয়ালসসমূহের নাম লিখ ?
৮. নন-কনজ্যুমেবল ইলেকট্রোড কাকে বলে ?
৯. আর্ক ওয়েল্ডিং-এর জোড় জয়েন্ট কত প্রকার ও কী কী ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. আর্ক ওয়েল্ডিং কাজে ব্যবহৃত প্রত্যেক প্রকার জোড়ের চিত্র অংকন করে ইহাদের কার্য প্রণালী বর্ণনা কর ।
২. আর্ক ওয়েন্ডিং-এ সাবধানতার তালিকা উল্লেখ কর ।
৩. আর্ক ওয়েল্ডিং কৌশল সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
গ্যাস ওয়েল্ডিং এক প্রকার ধাতব পদার্থে জোড়া লাগানোর কৌশল। এর সাহায্যে একই জাতীয় বা ভিন্ন জাতীয় দুটি ধাতব পদার্থকে অক্সিজেন ও অ্যাসিটিলিন গ্যাসের ফ্রেমের মাধ্যমে তীব্র উত্তাপে জোড়া লাগানো হয়। এ অধ্যায় গ্যাস এর সংজ্ঞা, অক্সিজেন ও অ্যাসিটিলিন গ্যাসের ব্যবহার, ফ্রেমের প্রকারভেদ ও তাপত্রা, অজি অ্যাসিটিলিন মেটের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, গ্যাস ওয়েন্ডিং রড ও ফ্লাক্স, গ্যাস ওয়েন্ডিং এ সাবধানতা ইত্যাদি আলোচনা করা হয়েছে।
গ্যাস ওয়েল্ডিং (Gas Welding)
অক্সিজেন ও অ্যাসিটিলিন গ্যাসের ফ্রেমের বা শিখার মাধ্যমে তীব্র উদ্ভাগে দুটি খাত পদার্থকে গলিয়ে পরস্পরের সাথে জোড়া দেওয়ার কৌশলকে গ্যাস ওরেজি বলা হয়।
গ্যাস ওয়েন্ডিং করার ক্ষেত্রে জোড়া দেওয়ার ধাতব পদার্থ দুটিকে অক্সিজেন ও অ্যাসিটিলিন গ্যাসের মিশ্রণের অগ্নিশিখা দ্বারা উত্তপ্ত করা হয়ে থাকে। তাই গ্যাস ওয়েন্ডিং করার ক্ষেত্রে অক্সিজেন ও অ্যাসিটিলিন এ দুটি প্যাস একান্ত অপরিহার্য। এ দুটি গ্যাসের মিশ্রিত অগ্নিশিখা বা ফ্রেম তীব্র উত্তাপের সৃষ্টি করে ধাতব পদার্থকে গলিয়ে ফেলে এবং গলিত দুটি পদার্থের ধাতু মিলিত হয়ে ধাতু দুটির মাঝে জোড়া লাগিয়ে নেয়। সাধারণ ২৫০ মি.মি. পুরু ধাতব পাতকে এ ধরণের অক্সি-অ্যাসিটিলিন গ্যাসের দ্বারা ওয়েল্ডিং করে জোড়া দেওয়া হয়। খুব পাতলা ধাতু হলে এর জন্য কোনো ফিলার ম্যাটেরিয়াল লাগে না। তবে ধাতব পাত ১.৫ মি.মি. এর চেয়ে বেশি মোটা ফলে একই ধাতুর তৈরি সরু কাঠির মতো কিলার ম্যাটেরিয়াল প্রয়োজন হয় ।
ক) ফ্রেমের প্রকারভেদ:
শিখা বা ফ্রেমের নিয়ন্ত্রণের ওপর ভিত্তি করে ফ্রেমকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। যেমন:
১) কার্বুরাইজিং বা রিডিউসিং ফ্লেম (Carburising/Reducing Flame)
২) নিউট্রাল মে (Nutral Flame)
৩) অক্সিডাইজিং ক্লেম (Oxydising Flame)
গ্যাস রেভিং বিশেষ করে অস্তি অ্যাসিটিলিন গ্যাস যারা ওরেন্টিং কাজে যে সব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা। হয় তাদের নাম ও বর্ণনা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
ক) অক্সিজেন সিলিন্ডার (Oxygen Cylinder)
অক্সিজেন সিলিন্ডার বিভিন্ন রতনের হয়ে থাকে। সাধারণত ২.২৫ দশ মিটার থেকে ৩.২৩ ঘন মিটার আয়তনের অক্সিজেন সিলিন্ডার দেখা যায়। এ সিলিন্ডারে ২১° C তাপমাত্রার ১৫০ গ্রাম/ বর্গ সে.মি. তাপে বা প্রেসারে অক্সিজেন রাখা হয়। সিলিন্ডারের মাথার একটা প্রেসার তালত থাকে যা একটা হুইলের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। উচ্চ চাপে যাতে সিলিন্ডার ফেঁচে না যায় তার জন্য একটা সেফটি 'রিলিজ ভিক্ষ থাকে । সিলিন্ডারে চাপ বেশি হলে এটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাপ দের করে দেয়। এর তালত একটা নিরাপত্তা ক্যাপ যারা সংরক্ষিত থাকে। বিভিন্ন ধরনের গ্যাস সিলিন্ডার বিভিন্ন রং এর হয়ে থাকে। অক্সিজেন সিলিতার সাধারণত কাল অথবা সবুজ রং-এর হয়ে থাকে।
খ) জ্যাসিটিলিন সিলিন্ডার (Acetylene Cylinder)
অ্যাসিটিলিন সিলিন্ডারে সাধারণত ১৭ কেজি /বর্গ সে.মি. চাপে বা প্রেসারে অ্যাসিটিলিন গ্যাস সংরক্ষণ করা হয়। অ্যাসিটিলিন গ্যাস ১ কেজি/ বর্গ সে.মি. এর চেয়ে বেশি চাপে যুক্ত পরিবেশে রাখা হলে বিস্ফোরিত হতে পারে। এ গ্যাস প্রতি বর্গ সে.মি. এ২ কেজি চাপে স্বয়ং জিন্নভাবে বিস্ফোরিত হতে পারে। তাই এ থেকে নিরাপদ রাখার জন্য এ গ্যাम লিকুইড অ্যাসিটোনের মধ্যে ডুবিয়ে রাখা হয়। বেশি উচ্চ চাপে যাতে সিলিয়ার ফেঁটে না যায় তার জন্য এ সিলিভারে নিরাপত্তামূলক সেফটি প্রাগ লাগানো থাকে। নিশিতা চাপ ১০ C ত্রার উঠনে এটা স্বরজিনাভাবে চাপ রিলিজ করে দেয়। অ্যাসিটিলিন সিলিন্ডার সাধারণত মেরুন বা লাল রং-এর পরে থাকে। সিলিন্ডার সব সময় খাড়াভাবে এবং প্রেসার রেডনেটর উর্বসুখী রাখা প্রয়োজন।
গ) ওয়েন্ডিং টর্চ (Welding Tarch)
ওয়েন্ডিং টর্চ গ্যাস ভরেন্ডিংএর ক্ষেত্রে একটা অপরিহার্য অংশ। এটি একটা ছোট হাত যয় বা গোলাকার লম্বা এবং অভাগ ক্রমশ সরু। এটার পিছন দুটি সিলিন্ডারের গ্যাস লাইন সংযুক্ত করা থাকে এবং সামনের দিকে সরু দিয়ে গ্যাসের মিশ্রণের অগ্নিশিখা বের হয়। এতে অক্সিজেন ও অ্যাসিটিলিন গ্যাস সঠিকভাবে মিশ্রিত করার ব্যবস্থা আছে। একটা ওয়েন্ডিং টর্চ-এর যে সব অংশ তাকে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
১) ডি (Body)
২) নিল ভাল (Niddle Valve)
৩) নজল (Nozzle)
৪) হাতল বা স্লিপ (Grip)
ঘ) প্রেসার রেগুলেটর (Pressure Regulator)
সিলিন্ডারের উচ্চ চাপের গ্যাস ওয়েন্ডিং টর্চ বা ব্রো-পাইপে সরবরাহ করার আগে গ্যাসের চাপ প্রেসার রেগুলেটর দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সিলিন্ডারের সাথে রেগুলেটরগুলোর ভুল সংযোগ থেকে রক্ষা পাওয়া এবং নিরাপত্তা বিধানকল্পে সিলিন্ডার সংযোগের গ্রেড বা প্যাচ ভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। প্রেসার রেগুলেটর সাধারণত চার রকমের হয়ে থাকে। যেমন
১) সিংগল স্টেজ নজন টাইপ (Single Stage Nozzle Type)
২) সিংগল স্টেজ স্টেম টাইপ (Single Stage Stem Type )
৩) টু স্টেজ নজল টাইপ (Two Stage Nozzle Type)
৪) হাই ক্যাপাসিটি হাই প্রেসার টাইপ (High Capacity High Pressure Type)
ঙ) হোজ ও হোজ ফিটিংস (Hose & Hose Fittings)
সিলিন্ডারের রেগুলেটর ও ওয়েল্ডিং টর্চ বা রো-পাইপের মাঝে ফ্লেক্সিবল হোজ পাইপ দিয়ে সংযুক্ত করা থাকে। উচ্চ চাপের গ্যাস সরবরাহ করার কারণে এসব হোজ পাইপ ও সংযুক্ত কিটিংগুলো বিশেষভাবে উচ্চ চাপ সহ্যকারী হিসেবে তৈরি করা হয়ে থাকে। অক্সিজেন ও অ্যাসিটিলিন গ্যাস লাইনের জন্য সব সময় পৃথক পৃথক রং এর হোজ পাইপ ব্যবহার করা হয়। অক্সিজেন হোজ পাইপ সব সময় কাল এবং অ্যাসিটিলিন হোজ পাইপ সব সময় লাল রং এর হয়ে থাকে।
ক) গ্যাস ওয়েল্ডিং রড (Gas Welding Rod)
গ্যাস ওয়েল্ডিং এ তীব্র উত্তাপে ধাতু গলে ও পুড়ে গিয়ে যে ফাঁক সৃষ্টি করে তা পূরণের জন্য ওয়েল্ডিং রড বা ফিলার রঙ ব্যবহার করা হয়। এ সব রড চিকন কাঠির মতো এবং যে ধাতুতে ওয়েল্ডিং করা হয় সেই একই ধাতব পদার্থের তৈরি হয়ে থাকে।
খ) গ্যাস ওয়েল্ডিং ফ্রান্স (Gas Welding Flux)
ফ্লাক্স হচ্ছে এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ যা ওয়েন্ডিং এর সময় ধাতব সারফেসে ডি-অক্সিডাইজিং (De Oxydising) এর কাজ করে। এর ফলে গলিত ধাতুতে স্লাপ জমতে পারে না এবং ওয়েন্ডিং মসৃণ ও সুন্দর হয়
গ্যাস ওয়েল্ডিং কার্যপদ্ধতি
গ্যাস ওয়েন্ডিং কার্যপদ্ধতির ধাপগুলো নিম্নরূপ :
১. ওয়েল্ডারকে কাজের উপযুক্ত পোশাক পরিধান করে প্রয়োজনে (আর্ক ওয়েল্ডিং এ) হেলমেট বা হ্যান্ডশীল্ড ব্যবহার করতে হবে।
২. জবের উপর হতে গ্রিজ, তেল, মরিচা, বালি ইত্যাদি পরিষ্কার করতে হবে।
৩. লে-আউট অনুযায়ী প্রয়োজনে জবের পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করতে হবে ।
৪. জবের গুরুত্ব, জোড়ার ধরন এবং ইলেকট্রোডের পরিমাপের উপর নির্ভর করে কারেন্ট নির্ধারণ করতে হবে।
৫.ধাতুর ধরন অনুষয়ী নিউট্রাল, অক্সিডাইজিং বা কার্বুরাইজিং শিখা নির্বাচন করতে হবে ।
৬. ধাতব খণ্ডকে সঠিক স্থানে রাখার জন্য এবং উত্তাপে জোড়া যাতে বাঁকা না হয় সেজন্য জবের দুই বা তিন স্থানে ট্যাক নামে ছোট ছোট ওয়েন্ড করে নিতে হয়ে ।
৭. আর্কের দৈর্ঘ্য ঠিক রেখে সঠিক কোণে ইলেকট্রোড ধরতে হবে এবং সঠিক গতিতে পরিচালনা করতে হবে।
৮. একটি রান টানার পর আরেকটি রান টানার পূর্বে স্লাগের আবরণ পরিষ্কার করতে হবে।
গ্যাস ওয়েন্ডিং এ নিম্নোক্ত সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত :
ক) গ্যাস এ নিরাপত্তা পোশাক (যেমন- অ্যাপ্রোন, নিরাপদ চশমা, হ্যান্ড গ্লোভসু, ইত্যাদি) পরে ওয়েল্ডিং কাজ করতে হয়।
খ) গ্যাস সিলিন্ডার ভালভ খোলার আগে রেগুলেটর অ্যাডজাস্টিং ক্রু সম্পূর্ণ ঢিলা আছে, এটা নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
গ) ওয়েল্ডিং টর্চ জ্বালানোর কাজে স্পার্ক লাইটার ব্যবহার করা উচিত। কখনো দেওয়াশলাই ব্যবহার করা উচিত নয়।
ঘ) ওয়েল্ডিং এর পর পরই ওয়েল্ডিংকৃত স্থানে হাত দেওয়া উচিত নয়। এতে হাত পুড়ে যেতে পারে।
ঙ) অক্সিজেন ও অ্যাসিটিলিন গ্যাস সিলিন্ডার খুব নিরাপদ স্থানে রাখা উচিত। এগুলো কখনো উত্তাপ, তেল বা কোনো দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে আনা উচিত নয়।
চ) ব্যবহারের পর সিলিন্ডার ভালভ ও রেগুলেটিং ক্রু বন্ধ করতে হবে এবং ওয়েল্ডিং টর্চ নির্দিষ্ট হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
ছ) রেগুলেটর অ্যাডজাস্টিং ক্রুতে কখনো তেল দেওয়া উচিত নয়। প্রয়োজনে গ্লিসারিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. গ্যাস ওয়েল্ডিং কী ?
২. ফ্রান্সের কাজ কী ?
৩. ওয়েল্ডিং টর্চ কী ?
৪. অক্সিডাইজিং শিখা কী ?
৫. গ্যাস ওয়েল্ডিং রড বা ফিলার রড কী?
৬. গ্যাস ওয়েল্ডিং এর শিখা তৈরিতে কী কী গ্যাস ব্যবহার করা হয় ?
৭. হোজ ও হোজ ফিটিংস কী ?
৮. প্রেসার রেগুলেটর এর কাজ কী ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. কার্বুরাইজিং শিখা কীভাবে উৎপন্ন হয় ?
২. নিউট্রাল বা নিরপেক্ষ শিখার তাপমাত্রা কত ?
৩. ফ্লাক্স কিসের সাহায্যে তৈরি করা হয় ?
৪. অক্সিজেন ও অ্যাসিটিলিন গ্যাসের ব্যবহার উল্লেখ কর।
৫. ফ্লেম বা শিখা কত প্রকার ও কী কী ?
৬. ফ্রেমের তাপমাত্রা উল্লেখ কর ।
৭. অক্সি-অ্যাসিটিলিন সেটের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের তালিকা তৈরি কর।
৮. গ্যাস ওয়েন্ডিং রড ও ফ্লাক্স সম্পর্কে বর্ণনা কর।
৯. প্যাস ওয়েন্ডিং রড ও ফ্লাক্স সম্পর্কে বর্ণনা কর ।
১০. প্রেসার রেগুলেটর কত প্রকার ও কী কী ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. গ্যাস ওয়েল্ডিং-এ সাবধানতার তালিকা তৈরি কর ।
২. অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অ্যাসিটিলিন সিলিন্ডার সম্পর্কে বর্ণনা দণ্ড ?
৩. গ্যাসওয়েল্ডিং করার কৌশল বর্ণনা কর।
সোল্ডারিং দুটি নরম ধাতব পদার্থকে পরস্পরের সাথে জোড়া দেওয়ার এক ধরনের কৌশল। এ অধ্যার সোল্ডারিং এর সংজ্ঞা, সোল্ডারিং এর প্রকারভেদ, সোল্ডারিং এর ব্যবহার, সোল্ডারিং আয়রণ ও ফ্লাক্স, সোল্ডারিং এর কার্য কৌশল, সোল্ডারিং এর সাবধানতা ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো ।
একই জাতীয় অথবা ভিন্ন জাতীয় দুটি ধাতব পদার্থের মধ্যে কিলার ম্যাটেরিয়াল উত্তাপের সাহায্যে গলিয়ে যে জোড়া দেওয়া হয় তাকে সোল্ডারিং বলে। নরম সোল্ডারিং-এর ক্ষেত্রে ১৫০° সেঃ থেকে ৩৭০ সে: তাপমাত্রার দরকার হয়। আর হার্ড সোল্ডারিং-এর ক্ষেত্রে ৬০০ সে: থেকে ৯০০ সে: তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। সোল্ডারিং প্রধানত দুই প্রকার। যেমন-
• সফ্ট সোল্ডারিং (Soft Soldering )
• হার্ড সোল্ডারিং (Hard Soldering )
ক) সফ্ট সোল্ডারিং (Soft Soldering )
অল্প উত্তাপে এবং অল্প শক্তি ব্যবহার করে যে সোল্ডারিং করা হয় তাকে সফ্ট সোল্ডারিং বা নরম সোল্ডারিং বলে। এতে জোড়ের শক্তি কম থাকে । এ ধরনের সোল্ডারিং সেখানেই ব্যবহার করা হয় যেখানে সার্ভিস টেম্পারেচার ১৫০° সেঃ এর নিচে থাকে। সঙ্কট সোল্ডারিং এ ফিগার অ্যাটেরিয়াল হিসেবে লেড বা সীসা এবং টিনের অ্যালয় ব্যবহার করা হয় । কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে এ দুটোর অনুপাত সংকর ধাতুতে বিভিন্ন রকম হতে পারে । শিট মেটাল ও প্লাম্বিং কাজে সাধারণত সফট সোল্ডারিং এর প্রয়োগ বেশি ।
খ) হার্ড সোল্ডারিং (Hard Soldering )
অধিক উত্তাপে অধিক বাঁধন শক্তি প্রদানের জন্য যে সোল্ডারিং করা হয় তাকে হার্ড সোল্ডারিং বা শক্ত সোল্ডারিং বলে। এতে জোড়ের শক্তি অনেক বেশি থাকে। এ ধরনের সোল্ডারিং এ যে সোল্ডার ব্যবহার করা হয় তার গলনাঙ্ক থেকে ১০০° সেঃ পর্যন্ত হয়ে থাকে। হার্ড সোল্ডারিং এ কিলার অ্যাটেরিয়াল হিসেবে কপার, সিলভার, টিন, লেড এবং তাদের সংকর ধাতু বা অ্যালয় সোল্ডারিং কাজে ব্যবহার করা হয়। সিলভার সোল্ডারিং বিশেষভাবে বৈদ্যুতিক লাইন, অলঙ্কার তৈরি, উড়োজাহাজে এবং যেখানে বেশি শক্তি প্রয়োজন, সেখানে ব্যবহৃত হয়।
ক) সোচ্চার বা কিলার ম্যাটেরিয়াল :
সোচ্চারিং কাজে সাধারণত লেড বা সীসা ও টিন এবং এদের সংকর ধাতু বা অ্যালয় সোন্ডার বা ফিলার ম্যাটেরিয়াল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের সোচ্চার বা ফিলার ম্যাটেরিয়াল রেডিও, ট্রানজিস্টার, টেলিভিশন এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের সার্কিটে সোল্ডারিং কাজে ব্যবহার করা হয়। হার্ড সোল্ডারিং এর ক্ষেত্রে সোফার বা ফিলার ম্যাটেরিয়াল হিসেবে কপার, সিলভার, টিন, লেড এবং তাদের সংকর ধাতু বা অ্যালর সোল্ডারিং ক ব্যবহার করা হয়।
খ) সোল্ডারিং আয়রন সোল্ডারিং-এর সময় যে যন্ত্র প্রচন্ড উত্তাপে গরম করে ধাতু বা সোল্ডার পলানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তাকে সোল্ডারিং আয়রন বলা হয়। সোল্ডারিং কাজে সাধারণত কপারের তৈরি পোষ্টারিং আয়রন ব্যবহার করা হয়। এটা সাধারণত ছোট ছোট সংযোগ ও যন্ত্রাংশ বা বৈদ্যুতিক তার জোড়া দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়। সোল্ডারিং আরবদের আকার সাধারণত কাজের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। এটা লম্বা ধাতব দণ্ড আকৃতির, যার এক মাথার ধরার জন্য কাঠের বা প্লাস্টিকের হাতল থাকে এবং অন্য মাথায় সোল্ডারিং বিট সংযুক্ত থাকে। ইলেকট্রিক সোল্ডারিং আয়রন বৈদ্যুতিক কারেন্টের সাহায্যে উত্তপ্ত করা হয়। বিটের মাথা সাধারণত সরু বা চ্যাপ্টা আকৃতির হয়ে থাকে। সোল্ডারিং-এর সময় সরু মাথা দিয়ে সোল্ডার বা কিপার ম্যাটেরিয়াল পলিয়ে ধাতুর জোড়া লাগানো হয়ে থাকে।
গ) ফ্লাক্স (Flax)
ফ্লাক্স হচ্ছে এক প্রকার রাসায়নিক পদার্থ বা সোল্ডারিং-এর সময় ধাতব সারফেসে ডি-অক্সিডাই ি(De- Oxydising) এর কাজ করে। এর ফলে গলিত ধাতুতে প্লাগ জমতে পারে না এবং সোল্ডারিং মসৃণ ও সুন্দর হয়। সোল্ডারিং-এর ক্ষেত্রে জিকে ক্লোরাইড ফ্লাক্স হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তবে সাধারণ বৈদ্যুতিক কাজে রেজিনকে ফ্লাক্স হিসেবে ব্যবহার করা হয় ।
সোল্ডারিং কাজের জন্য প্রথমে ধাতব বস্তু বা ওয়ার্ক পিসের প্রাপ্ত দুটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এ কাজে শিরিস কাগজ ব্যবহার করা যেতে পারে। এরপর প্রাপ্ত দুটিতে অল্প একটু ফ্লাক্স প্রয়োগ করতে হবে। সোল্ডারিং আয়রন প্রয়োজন মতো উত্তপ্ত করে ওয়ার্ক পিনের প্রাপ্ত দুটি একসাথে লাগিয়ে ভাতে সোল্ডার বা ফিলার ম্যাটেরিয়াল স্থাপন করে তার উপর সোল্ডারিং আয়রন চেপে ধরে সোল্ডার পলিয়ে ধাতুর জোড়া লাগাতে হবে।
১. গরম সোল্ডারিং আয়রন সাবধানতার সাথে ব্যবহার করতে হবে।
২. এটা গরম অবস্থার বেখানে সেখানে রাখা যাবে না, বরং এর জন্য নির্দিষ্ট হোল্ডার বা কোনো রাজত্ব পাচ্ছে উপর রাখতে হবে।
৩. সোল্ডারিং আয়রনের কাঠের হাতল ধরে সোল্ডারিং কাজ করতে হবে ।
৪. সোল্ডারিং আয়রনের বিটে হাত দেয়া যাবে না।
৫. উন্মুক্ত শিখা বা ফ্লেম দিয়ে সোল্ডারিং আয়রন উত্তপ্ত করা হলে ফ্লেস ব্যবহারে সাবধানতা অবলখন করতে হবে।
৬. ধাতুর উপযুক্ত যথাযথ সোচ্চার ও ফ্লাক্স ব্যবহার করতে হবে।
৭. সোল্ডারিং শেষে সোল্ডারিং আয়রনের বডি বা অগ্রভাগে হাত দেওয়া যাবে না।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. সোল্ডারিং কী।
২. সোল্ডারিং কত প্রকার ও কী কী ?
৩. সফট সোল্ডারিং এর তাপমাত্রা কত ?
৪. হার্ড সোল্ডারিং এর তাপমাত্রা কত ?
৫. ফ্লাক্স (Flax) কী ?
৬. সোল্ডার বা ফিলার ম্যাটেরিয়াল হিসাবে কি ব্যবহার করা হয় ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. সফট সোল্ডারিং কাকে বলে ?
২. হার্ড সোল্ডারিং বলতে কি বোঝায় ?
৩. সোল্ডার বা ফিরার ম্যাটেরিয়াল এর কাজ লিখ ?
৪. সোল্ডারিং আয়রন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা কর।
৫. ফ্লাক্স (Flax) ম্যাটেরিয়াল হিসাবে কী ব্যবহার করা হয় ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. সফট সোল্ডারিং ও হার্ড সোল্ডারিং করার বর্ণনা দাও?
২. সোল্ডারিং কার্যপ্রণালি বর্ণনা কর।
৩. সোল্ডারিং-এ সাবধানতাসমূহ উল্লেখ কর।
মেটাল শপে প্রকৌশল ও কারিগরি কাজে বিভিন্ন ধরনের ধাতব পাত ব্যবহার করা হয়। কাজের বিশেষত্বের ওপর নির্ভর করে ধাতব পাত বাছাই করা হয়। ধাতব পাত বিভিন্ন ধাতু থেকে তৈরি হয়ে থাকে। এ অধ্যায় ধাতব শিটের প্রকারভেদ, ব্ল্যাক আয়রন শিট বা মাইন্ড স্টিল শিট, গ্যালভানাইজ আয়রন শিট, স্টেইনলেস স্টিল শিট, অ্যালুমিনিয়াম শিট, টিন শিট, কপার শিট, ব্রাস শিট, কাস্ট আয়রন শিট, শিট মেটাল ভাঁজ ও জোড়, শিট মেটাল জোড়ার প্রকারভেদ, ভাঁজের প্রকারভেদ, হ্যান্ড সিম, হেম ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
ধাতব পাত বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। নিম্নে ধাতব পাতের প্রকারভেদ উল্লেখ করা হলো।
• ব্ল্যাক আয়রন শিট বা মাইন্ড স্টিল শিট (Black Iron / Mild Steel Sheet)
• গ্যালভানাইজ আয়রন শিট (Galvanised Iron Sheet)
• স্টেইনলেস স্টিল শিট (Stainless Steel Sheet)
• অ্যালুমিনিয়াম পিট (Aluminium Sheet)
• টিন শিট (Tin Sheet)
• কপার টি (Copper Sheet)
• ব্রাস শিট (Brass Sheet)
• কাস্ট আয়রন শিট (Cast Iron Sheet)
ক) ব্ল্যাক আররন শিট বা মাইন্ড স্টিল শিট (Black Iron / Mild Steel Sheet) :
এটি হচ্ছে সব চেয়ে বেশি পরিচিত এবং বহুল ব্যবহৃত একটা ধাতব পাত। এর মধ্যে ১% কার্বন দিয়ে উত্তপ্ত অবস্থায় রোলিং করে নির্দিষ্ট পুরুত্ব বা থিকনেস দিয়ে তৈরি করা হয়। এর পারে কোন প্রকার কোটিং বা ধাত প্রলেপ দেওয়া থাকে না বলে এতে সহজেই মরিচা ধরে এবং ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এ ধরনের শিট দিয়ে যে সব জিনিস তৈরি হয় তার দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য তাতে সাধারণত রং প্রদান করা হয়। একে সাধারণতঃ M S Sheet বলা হয়।
খ) গ্যালভানাইজ আয়রন টি (Galvanised Iron Sheet) :
এ শিট আয়রন শিটের মতোই। তবে, এতে মরিচা ক্ষয়প্রাপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য একে গ্যালানাইজিং করা হয়ে থাকে। বিশেষ এক প্রক্রিয়ার কোনো ধাতুর উপর জিংকের আস্তরণ বা প্রলেপ দেওয়ার নাম হচ্ছে গ্যালভানাইজিং। যে সব জিনিস সব সময় বাতাস বা পানির সংস্পর্শে থাকে সে সব জিনিল এই গ্যালভানাইজ আয়রন (GI) শিট দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে।
গ) সেটইনলেস স্টিল শিট (Stainless Steel Sheet) :
কোনো ধাতব পদার্থকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে ক্ষয়রোধী হিসেবে তৈরি করার উদ্দেশ্যে তাতে ১৮% ক্রোমিয়াম (Cromium) এবং ৮-১০% নিকেল (Nickel) এর মিশ্রণের প্রলেপ দেওয়া হয়। এ ধরনের প্রলেপকে স্টেইনলেস স্টিল (SS) বলা হয়। এই ধাতু খুব কঠিন, কিন্তু এতে সহজেই ওয়েন্ডিং করা যায়।
ঘ) অ্যালুমিনিয়াম পিউ (Aluminium Sheet) :
সিলভার বা রূপার মতো সাদা রং বিশিষ্ট এই ধাতু নরম এবং সহজেই বাঁকানো যায়। এ ধরনের পাত দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পাত্র, ট্যাংক ইত্যাদি তৈরি করা হয়।
B) টিন শিট (Tin Sheet):
এ শীট আসলে খাঁটি টিন দিয়ে তৈরি হয় না। টিনের সাথে অল্প পরিমানে অন্যান্য ধাতুর মিশ্রণে টিন তৈরি হরে থাকে। আমাদের দেশে সাধারণত আরেন শিটের উপর টিনের প্রলেপ দেওরা পিট বা ধাতব পাতকে টিন-শীট বলা হয়ে থাকে, যা গ্রামাঞ্চলে ঘরের চালে ব্যবহার করা হয় ।
চ) কপার শিট (Copper Sheet) :
কপার বা তামা দিয়ে তৈরি ধাতব পাত বা পিটকে কপার শিট বলা হয়। কপার শিট নরম, নমনীয় বা বাঁকানোর উপযোগী এবং সামান্য সম্প্রসারণশীল হয়ে হয়ে থাকে। এ শিট পাতলা হলে তা অার গেলে মাপা হয়। আর ভারি হলে তা ভজনে মাপা হয়।
ছ) ব্রাশ শিট (Brass Sheet):
ব্রাস বা পিতল দিয়ে তৈরি পাঞ্চ বা নিটকে ব্রাস শিট বলা হয়। কপার নিটের মতো এ শিটও সামান্য নমনীও ও সামান্য সম্প্রসারণশীল হয়ে থাকে।
জ) কাস্ট আয়রন শিট (Cast Iron Sheet)
কাস্ট আয়রন দিয়ে তৈরি পাত বা পিটকে কাস্ট আয়রন পিট বলা হয়। এ শিট শক্ত ও ভঙ্গুর, নমনীয় বা সম্প্রসারণশীল নয়।
ধাতব পাত বা মেটাল শিট দিয়ে কোনো বস্ত্র তৈরি করতে হলে শিট মেটালের উপর বিভিন্ন প্রকার ভাঁজ দেওয়া, কাটা, বাঁকানো বা ফাঁপা করা ইত্যাদি কাজ করার প্রয়োজন হয়। এ সব কাজ বা অপারেশনকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। নিচে এ সব বিভিন্ন প্রকার কাজের বর্ণনা দেয়া হলো। শিট মেটাল অপারেশনের শ্রেণি বিভাগ শিট মেটালের যারা বিভিন্ন রকম কাজ করা হয়ে থাকে। মেটাল শিট দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গোলাকার, আয়তাকার বা ফাঁপা বস্তু তৈরি করা যায়। এ সব বস্তু তৈরি করতে শিট মেটালের বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয়।
এ সব কাজের প্রকারভেদ ও নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
১) শিয়ারিং (Shearing)
2) ৰেডিং (Bending)
৩) লোরিং (Hollwing)
৪) রেইজিং ( Raising)
৫) সিংকিং (Sinking)
৬) চেজিং (Chasing)
৭) প্ল্যানিশিং (Planishing)
পিট মেটাল জোড়ার প্রকারভেদ (Clasiification Sheet Metal Joint)
উল্লেখিত বিভিন্ন অপারেশন ছাড়াও শিট মেটাল বিভিন্ন প্রকার ভাঁজ দিয়ে বিভিন্ন রকম জোড়া দেওয়ার প্রয়োজন হয়। কাজের ধরণ বুঝে এ সব ভাঁজ ও জোড়া দেওয়া হয়।
এ ধরনের কাজে ব্যবহৃত কিছু জোড়ার নাম নিচে উল্লেখ করা হলো।
১) ল্যাপ জয়েন্ট (Lap Joint)
২) কাউন্টার সিংক ল্যাপ জয়েন্ট (Counter Sink Lap Joint)
৩) আউট সাইড ল্যাপ জয়েন্ট (Out Side Lap Joint)
৪) ফ্ল্যাট লক লরেন্ট (Flat Lock Joint)
৫) গ্রুফড লক জয়েন্ট (Grooved Lock Joint)
উপরে পিট মেটালের বিভিন্ন ধরনের জোড়ার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ সব জোড়া দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার ভাতা দেওয়ার প্রয়োজন হয়। কাজের ধরণ বুঝে এ সব ভাড়া দেওয়া হয়। পিট মেটালের এ ধরনের কাজে প্রধানত দুই প্রকার ভাঁজ দেওয়া যারে থাকে। যেমন- নিন (Seam) ও হেন (Hem) ভাঁজ।
ধাতব পাত বা পিট মেটালে হস্ত-চালিত ঘরের সাহায্যে ভাঁজ দিয়ে যে জোড়া তৈরি করা হয় তাকে হ্যান্ড নিম (Hand Seam) জা বলা হয়। ৰাকৰ পাত মোড়া দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার সিম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ সব জোড় বা সিমের নিম্নে উল্লেখ করা হলো ।
ধাতব পাত বা পিট মেটালের ধারালো প্রাপ্ত যা কিনারাকে নিরাপদ করার জন্য যে ভাঁজ নেয়া হয় তাকে হেম (Hem) বলা । হেম আবার দুই প্রকার হতে পারে। যেমন-
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. ধাতব পিটের কাজ কি ?
২. বিভিন্ন প্রকার থাকা পিটের ব্যবহার উল্লেখ কর ?
৩. মেটাল সিটের ভাষা কী?
৪. নিটের মেটালের ছোড় বা জয়েন্ট কী ?
৫. শিট মেটাল কালে ব্যবহৃত G. I. টি এর পূর্ণ নাম কী ?
৬. শিট মেটাল কাজে ব্যবহৃত S.S পিট এর পূর্ণ নাম কী?
৭. শিট মেটাল কাজে ব্যবহৃত M.S নিট এর পূর্ণ নাম ?
৮. ভাঁজ কাকে বলে ?
৯. সিম কাকে বলে ?
১০. হেম কাকে বলে?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. শিট মেটাল কত প্রকার ও কী কী ?
২. ব্ল্যাক আয়রন শিট বা মাইন্ড স্টিল শিটের ব্যবহার লিখ?
৩. গ্যালভানাইজ আয়রন শিটের ব্যবহার উল্লেখ কর ?
৪. স্টেইনলেস স্টিল শিটের কাজ লিখ ?
৫. শিটে মেটালের জোড় বা জয়েন্ট কত প্রকার ও কী কী ?
৬. ভাঁজ কত প্রকার ও কী কী ?
৭. হ্যান্ড সিম (Hand seam) জোড় বলতে কী বোঝায় ?
৮. শিটের মেটালের সাহায্যে কি কি কাজ করা হয় তার একটি তালিকা তৈরি কর।
৯. সিম কত প্রকার ও কী কী ?
১০. হেম কত প্রকার ও কী কী ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. শিট মেটাল কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার ধাতব শিটের কার্য প্রণালী বর্ণনা কর ।
২. শিট মেটালের ভাঁজ কাকে বলে? ইহা কত প্রকার ও কী কী ? বিভিন্ন প্রকার ভাঁজের চিত্রসহ সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও?
পানি সরবরাহ ও পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রিত স্থানে পাইপ ও পাইপ ফিটিংস ব্যবহৃত হয়। এ অধ্যার পাইপের প্রকারভেদ ও সাইজ, নমনীয় পাইপ, অনমনীয় পাইপ, ধাতব পাইপ, অবাত পাইপ, পাইপের সাইজ, পাইপ কাটার পদ্ধতি,পাইপে গ্রেড কাটার পদ্ধতি, পাইপ ফিটিংস, পাইপ সংযোগকারী ফিটিংস, পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রনকারী ফিটিংস, পাইপ ফিটিং-এ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ব্যবহার, লিব্রুক কম্পাউন্ড, পাইপ কাটা ও পাইপ ফিটিং-এ সাবধানতা ইত্যাদি আলোচনা করা হয়েছে।
পাইপ (Pipe)
পাইল হচ্ছে সিলিন্ডার আকৃতির ফাঁপা গোলাকার লম্বা নল যার ভিতর দিয়ে বিভিন্ন প্রকার প্রবাহী দ্রব্য যেমন পানি, বাষ্প, গ্যাস, তেল এবং বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক দ্রব্যাদি (Chemicals) এক স্থান হতে অন্য স্থানে প্রেরণ করা যায়। যে সব ক্ষেত্রে পাইপ বহুলভাবে ব্যবহৃত হয় তা হলো পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন, তেল শোধনাগার, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, শিল্প কারখানা, রাসায়নিক কারখানা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ইত্যাদি। নিম্নে পাইপ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
পাইপের বৈশিষ্ট তথা বাহ্যিক গুণাগুণের ভিত্তিতে পাইপকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
• নমনীয় পাইপ (Flexible Pipe)
• অনমনীয় পাইপ (Rigid Pipe)
ক) নমনীর পাইপ (Flexible Plpe)
যে সব পাইপ যে কোনো দিকে বাঁকানো যায় তাকে নমনীয় পাইপ বলা হয়। নমনীর পাইপ প্রয়োজন মতো বাঁকানো যায় বলে অসমান অবস্থানে এবং ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানির উৎস হতে পানি তোলার কাজে ব্যবহার উপযোগী। তবে সব নমনীয় পাইপই আবার সাকশন পাইপ হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। এ ধরনের পাইপ অধাতব পদার্থ দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। যেমন- রাবার, প্লাস্টিক, পলিখিন, ক্যানভাস ইত্যাদি ।
খ) অনমনীয় পাইপ (Rigid Pipe)
যে সব পাইপ কোনো দিকে বাঁকানো যায় না, সব সময় সোজা থাকে তাকে নমনীর পাইপ বলা হয়। এ ধরনের পাইপ সাধারনত ধাতব ও অধাতব দুই ধরনের পদার্থ দিয়ে তৈরি করে থাকে। যেমন- কাস্ট আয়রন, রট আয়রন, স্টিল, কপার, ব্রাস, লেড, অ্যালুমিনিয়াম, আরসিসি কংক্রিট, অ্যাসবেসটস সিমেন্ট ইত্যাদি । পাইপ বিভিন্ন পদার্থ দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে।
পদার্থের এই ভিন্নতার ভিত্তিতে পাইপকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
• ধাতব পাইপ (Metalic Pipe)
• অধাতব পাইপ (Non Metalic Pipe )
ক) ধাত পাইপ (Metalic Pipe )
যে সব পাইপ বিভিন্ন ধরনের ধাতব পদার্থ দ্বারা তৈরি করা হয় এদেরকে ধাতব পাইপ বলে। ধাতুর নামানুসারে এদের নামকরণ করা হয়ে থাকে। নিম্নে বিভিন্ন প্রকার ধাতব পাইপের নাম উল্লেখ করা হলো:
১) মাইন্ড স্টিল পাইপ বা এমএস পাইপ (Mild Steel Pipe )
২) স্টেইনলেস স্টিল পাইপ (Stainless Steel Pipe)
৩) জি.আই. (গ্যালভানাইজ আয়রন) পাইপ (Galvanised Iron Pipe )
৪) কাস্ট আয়রন পাইপ (Cast Iron Pipe )
৫) রট আয়রন পাইপ (Wrought Iron Pipe )
৬) কপার বা তামার পাইপ (Copper Pipe)
৭) হ্রাস বা পিতল পাইপ (Brass Pipe)
৮) অ্যালুমিনিয়াম পাইপ (Aluminium Pipe )
৯) সিসার পাইপ (Lead Pipe )
খ) অধাতব পাইপ (Non Metalic Pipe)
যে সব পাইপ বিভিন্ন ধরনের অধাতব পদার্থ দ্বারা তৈরি করা হয় এদেরকে অধাতব পাইপ বলে । ধাতুর নামানুসারে এদের নামকরণ করা হয়ে থাকে। নিম্নে বিভিন্ন প্রকার অধাতব পাইপের নাম উল্লেখ করা হলো।
১) পিভিসি পাইপ (PVC Pipe )
২) প্লাস্টিক পাইপ (Plastic Pipe )
৩) রাবার পাইপ (Rubber Pipe)
৪) পলিথিন পাইপ (Polythene Pipe )
৫) কংক্রিট পাইপ (Concrete Pipe )
৬) আরসিসি (রিইনফোর্স সিমেন্ট কংক্রিট) পাইপ (Reinforced Cement Concrete Pipe )
৭) অ্যাসবেসটস পাইপ (Asbestos Pipe )
৮) ক্যানভাস পাইপ (Canvas Pipe )
পাইপ বিভিন্ন প্রকার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তার মধ্যে সেচ কাজে এর ব্যবহার ব্যাপক । সেচ কাজে ব্যবহারের ভিত্তিতে পাইপকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
• সাকশন পাইপ
• ডেলিভারি পাইপ
গ) পাইপের সাইজ (Size of Pipe ) পাইপ সাধারণত তার অভ্যন্তরীণ ব্যাসের মাপেই পরিচিত হয়ে থাকে। তাই পাইপের সাইজ বলতে এর অভ্যন্তরীণ ব্যাস (ইনসাইড ডায়ামিটার)-কেই বোঝায়। জিআই পাইপ সাধারণত ১/২ ইঞ্চি হতে ৪ ইঞ্চি ব্যাস বিশিষ্ট হয়ে থাকে । তবে এর চেয়ে বেশি মাপের পাইপও তৈরি হয়। অনমনীয় পাইপ সাধারণত ২০ ফুট টুকরা হিসেবে বাজারে পাওয়া যায়। নমনীয় পাইপ সাধারণত ফুট হিসেবে বাজারে বিক্রি হয় ।
(ক) হ্যাক-স দিয়ে পাইপ কাটা
নমনীয় বা অধাতব পাইপ কাটা তেমন কঠিন কাজ নয়। তবে ধাতব পাইপ, বিশেষ করে জিআই পাইপ কাটার ক্ষেত্রে কিছু পদ্ধতিগত নিয়ম মেনে চলতে হয়। জিআই পাইপ সাধারণত হ্যাকস অথবা পাইপ কাটার দিয়ে কাটা হয় । এজন্যে নির্বাচিত পাইপকে প্রথমে ভূমি সমান্তরাল করে কোমরসমান উঁচুতে ভাইসে শক্ত করে আটকাতে হয় । পাইপের সাইজ অনুসারে হ্যাকস ব্লেড নির্বাচন করতে হয়।
কম ব্যাসের পাইপের জন্য ঘন দাঁতের রেড এবং বেশি ব্যাসের পাইপের জন্য পাতলা দাঁতের ব্লেড নির্বাচন করতে হয়। নির্বাচিত ব্লেডকে হ্যাকস ফ্রেমের সাথে সঠিক ভাবে বাঁধতে হয়। খেয়াল রাখতে হবে ব্লেডের দাঁতগুলো যেন ফ্রেমের অগ্রভাগের দিকে মুখ করে থাকে। পাইপ কাটার স্থান প্রথমে ক্রাইবার বা চক দ্বারা চিহ্নিত করে নিতে হয় । ভাইসে বাঁধা পাইপের সামনে দুই পা কিছুটা ফাঁক করে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে পাইপের কাটার স্থানে হ্যাক-স স্থাপন করতে হয়। পাশের চিত্রের ন্যায় ডান হাতে হ্যাকস এর হাতল এবং বা হাতে ফ্রেমের যাথা (অগ্রভাগ) ধরে হ্যাক- এস কে সামনে পিছনে চালিয়ে পাইপ কাটা আরম্ভ করতে হয়। হ্যাকস কে সামনের দিকে চালানোর সময় নিচের দিকে চাপ প্রয়োগ করতে হয় এবং পিছনে টানার সময় চাপ মুক্ত করতে হয়। প্রতি মিনিটে ৪০-৫০ বার হ্যাক স ব্লেড চালাতে হয়। চালানোর সময় ব্লেড যাতে বাঁকা না হয় অথবা মোচড় না খায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হয়।
কারণ, বাঁকা হলে বা মোচড় খেলে ব্রেড ভেঙে যেতে পারে। পাইপ কাটা যখন প্রার শেষ পর্যায়ে, তখন অপেক্ষাকৃত কম গতি ও চাপ সহযোগে ব্লেড চালাতে হয়। এভাবে পাইপ কাটার কাজ সম্পন্ন করতে হয়। এ ছাড়া হ্যাক-স চালানোর সকল নিয়ম ও সাবধানতা পালন করতে হয়।
খ) পাইপ কাটারের সাহায্যে কাটা
প্রথমে যে পাইপটি কাটতে হবে তাকে পাইপ ভাইসে শক্ত করে বেঁধে নিতে হবে। এরপর পাইপ কাটারের সেট-কু চিলা করে পাইপের ভেতরে এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে রোলারগুলোকে পাইপের উপর সামান্য চাপ দেয়। এর পর সেট-কে ভেতরে প্রবেশ করিয়ে হাতল দিয়ে ফ্রেমটিকে সামনে-পিছনে করে এক পাক ঘুরাতে হবে। তারপর সেট-ডুকে ডিলা দিয়ে হাতলটিকে ডান দিকে ঘুরিয়ে পাইপের উপর আবার চাপ প্রয়োগ করে সেট-ফু ভেতরে প্রবেশ করিয়ে পূর্বের ন্যায় ফ্রেমকে ঘুরাতে হবে। এভাবে পাইপ কাটার দিয়ে পাইপ কাটার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
পাইপ সাধারণত লম্বা টুকরা আকারে থাকে বলে একে খাড়াভাবে ভাইসে আটকানোবায় না। পাইপকে তাই পাইল তাইলে আটকানোর সময় ভূমির সমান্তরালে আটকাতে হয়। ভাষাড়া পাইপের ব্যাসের উপর ভিত্তি করে গ্রেফ কাটার তাই নির্বাচন করতে হয় । ভাই স্টকে নির্বাচিত ভাইকে স্থাপন করে সেট-ক্রুর সাহায্যে ভাইয়ের ছিদ্রপথ পাইপের মাথায় ঢোকায় উপযোগী করে সেট করতে হয়। পাইপের যে প্রান্তে গ্রেড কাটা হবে সেই প্রান্ত প্রথমে প্রাইভিং করে অথবা কাইলে ঘৰে কিছুটা সরু বা ট্যাপার করে নিতে হয়।
এখন পাইপের মাথার ফাস্টসহ ভাই এমনভাবে প্রবেশ করাতে হর বেন পাইপের সাথে লম্বভাবে থাকে। ভাইকের হাতল দুই হাতে ধরে সামনের দিকে চাপসহ ডান দিকে (রাইট হ্যান্ড গ্রেডের জন্য) ঘুরিয়ে প্যাঁচ কাটা শুরু করতে হয়। গ্রেড কাটার সময় ভাই ও ব্রেডের সংযোগ স্থলে কাটিং ফ্লুইড প্রয়োগ করতে হয়। গ্রেড কাটার মাঝে মাঝে ভাই উল্টা দিকে আর প্যাচ ঘুরিয়ে ফাঁটা বা কণা (মেটাল চিপস্) বের করে দিতে হয়। নির্দিষ্ট অংশে প্যাঁচ কাটা হলে উল্টা দিকে ঘুরিয়ে পাইপের মাথা থেকে ডাই বের করে আনতে হয়। তারপর সেট-কু ঘুরিয়ে ভাইয়ের ব্যাস একটু কমিয়ে পুনরায় পাইপে প্রোডকাটতে হয়। এভাবে কয়েক বার প্যাঁচ কেটে নির্দিষ্ট মাপে গ্রেড কাটা সম্পন্ন করতে হয়। সব শেষে গ্রেড-পিচ গেজের সাহায্যে অথবা ভাই নাট দিয়ে গ্রেডের মাগ পরীক্ষা করতে হয়।
পাইপের ফিটিং বা সংযোজন কাজে বিভিন্ন রকম যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়। পাইপ দিয়ে সেচ কাজ এবং বাসা-বাড়ি, অফিস, শিল্পকারখানা ইত্যাদিতে পানি সরবরাহ লাইনে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশ বা কানেক্টর লাগানো থাকে, এ গুলোকে এক কথায় পাইপ ফিটিংস বলে। পাইপ ফিটিংস প্রধানত দুই প্রকার যেমন-
১. পাইপ সংযোগকারী ফিটিংস।
২. পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণকারী ফিটিংস।
পাইপ সংযোগকারী ফিটিংস :
সেচ কাজে এবং বাসা-বাড়ি, অফিস, শিল্প-কারখানা ইত্যাদিতে পানি সরবরাহ পাইপ সংযোজনের ক্ষেত্রে যে সব যন্ত্রাংশ বা কানেক্টর ব্যবহার করা হয় তাদেরকে একত্রে পাইপ সংযোগকারী ফিটিংস বলে। পাইপ সংযোগকারী ফিটিংসসমূহের নাম চিত্রসহ নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. প্লেইন সফেট (Socket)
২. রিডিউসিং সকেট (Reducing Socket)
৩. সুসম টি-সকেট (T Socket)
৪. অসম টি- সকেট (T Socket)
৫. ক্রস সকেট (Cross Socket)
৬. এলবো সকেট (Elbow Socket)
৭. ইউনিয়ন সকেট (Union Socket)
৮. নিপল (Nipple)
৯. বেন্ড (Bend)
১০.ফ্লেঞ্জ (Flange)
১১. প্লাগ (Plug)
পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণকারী ফিটিংস :
সেচ কাজে এবং বাসা-বাড়ি, আলি, শিল্প-কারখানা ইত্যাদিতে পানি সরবরাহ লাইনে পানির প্রবাহ নিম্ননের জন্য যে সব যন্ত্রাংশ বা কানেক্টর ব্যবহার করা হয় তাদেরকে একত্রে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণকারী ফিটিংস বলে।
নিজে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রনকারী ফিটিংসসমূহের নাম দেওয়া হলো-
১. ওয়াটার ট্যাপ।
২. স্টপ কর।
৩. বল কক্ বা ফ্লোট ও ভালভ
৪. চেক ভা
৫. পেট ভালভ
৬. ফুট ভালভ
পাইপ ফিটিং কাজে বিভিন্ন রকম যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়। এরূপ কিছু যন্ত্রপাতির নাম নিচে উল্লেখ করা হলো এবং পাশে তাদের ছবি দেখানো হলো।
পাইপ সংযোজন বা ফিটিং-এর কাজে বিভিন্ন প্রকার জোড়া ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এসব জোড়া দিয়ে যাতে প্রবাহিত পদার্থ (গানি, তেল, গ্যাস, ইত্যাদি) দিক (Leak) করে বের হতে না পারে সে জন্য পাইপ জোড়ার স্থানে নিবন্দ্রক কম্পাউন্ড বা সিলিং ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়। নিগ্রুফ কম্পাউন্ড ব্যবহার করার আগে যে সব দ্রব্যাদি পাইপ জোড়ার স্থানে ব্যবহার করা হয় তার কিছু নিচে উল্লেখ করা হলো :
১) সুভা বা পাট
২) সিপিং টেপ
৩) রাবার ওয়াশার
৪) অ্যাসবেসটস ওয়াশার ইত্যাদি
সাধারণত উপরোক্ত দ্রব্যাদি পাইপ ঘোড়ার স্থানে লাগানোর পর ফি কম্পাউন্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রকার জোড়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের লিম্প ব্যবহার করা হয়ে। নিম্নে কয়েকটি লিঙ্ক কম্পাউন্ড বা সিপিং ম্যাটেরিয়ালের নাম উল্লেখ করা হলো।
১) ডিসি ভেল
২) এনামেল পেইন্ট
৩) হ্যাব কম্পাউড
৪) সিলিং সলিউশন বা আইকা
৫) সিলিং সিমেন্ট ইত্যাদি
সেচ কাজে ব্যবহৃত অথবা আবাসিক বাড়িতে ব্যবহৃত পাইপ লাইনে সংযোগ দেওয়ার সময় পাইপের সংযোগস্থল নিশ্ছিদ্র বা লিক-প্রুফ করা প্রয়োজন। তা না হলে সেচ পাম্পের ক্ষেত্রে সাকশন লাইনে ছিদ্র থাকলে তাতে বাতাস প্রবেশ করলে পানি ওঠনো যায় না। আবার পাইপের সংযোগ স্থলে লিক বা ছিদ্র থাকলে তা দিয়ে পানি বের হয়ে অসুবিধার সৃষ্টি করে। তাই পাইপের সংযোগস্থলে দিক-কৃষ্ণ কম্পাউন্ড ব্যবহার করে পাইপকে নিশ্ছিদ্র করা দরকার। পাইপের সংযোগ স্থল নিশ্ছিদ্র বা লিক-প্রুফ করার জন্য পাইপের মাথায় প্যাচ কাটা অংশে প্রথমে পাট, সূতা বা এরকম আঁশ জাতীয় দ্রব্য পেঁচিয়ে তার উপর লিক-প্রুফ কম্পাউন্ড বা সিলিং কম্পাউন্ড মাখিয়ে পাইপের সংযোগ দেওয়া দরকার। পাইপ ফিটিংসের কাজে দিক প্রুফ কম্পাউন্ড বা সিলিং কম্পাউন্ড হিসেবে সাধারণত এসব ব্যবহার করা হয়।
১. পাইপ ফিটিংসের কাজে যথেষ্ট সাবধানতার প্রয়োজন রয়েছে। পাইপ কাটার সময় যেমন সঠিক সাবধানতা পালন করতে হয়, তেমনি পাইপে থ্রেড কাটার সময় যাবতীয় সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।
২. সঠিক মাপের ডাই নির্বাচন, সঠিকভাবে পাইপকে ভাইসে বাঁধা, কাটিং ফ্লুইড প্রয়োগ, মেটাল চিপস্ অপসারণ, ইত্যাদি সকল কাজ করতে সাবধানতা অবলম্বন করার প্রয়োজন।
৩. সংযোজন কালে পাইপের প্যাঁচে সুভা, পাট ইত্যাদি পেঁচানো, সিলিং কম্পাউন্ড প্রয়োগ ইত্যাদি কাজগুলো যত্নের সাথে করতে হয় ।
৪. পাইপের জোড়ের স্থলে টাইট দেওয়ার সময় সঠিক পরিমাণে টাইট দেওয়া প্রয়োজন।
৫. পাইপ সংযোজন বা কিটিং-এর কাজে সব সময় উভয় হাতে মোটা কাপড়, রাবার বা চামড়ার দস্তানা বা গ্র্যান্ডস্ ব্যবহার করতে হবে।
৬. পানি, গ্যাস বা তেলের পাইপ লাইনে কাজ করতে হলে লাইনের প্রবাহ বন্ধ করে কাজ করতে হবে।
৭. জোড়ার স্থানে যথোপযুক্ত সিলিং কম্পাউন্ড বা সিল্যান্ট ব্যবহার করে জোড়কে নিক প্রুফ করতে হবে ।
৮. কোনো জোড় বা সংযোগ স্থলে সকেট বা পাইপকে অতিরিক্ত টাইট দেওয়া যাবে না। এতে পাইপের প্রেড কেটে যেতে পারে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. পাইপ কী ?
২. পাইপ প্রধানত কত প্রকার ও কী কী ?
৩. পাপের কাজ লিখ?
৪. নমনীয় পাইপ কী ?
৫. ৪টি নমনীয় পাইপের নাম লিখ ?
৬. ধাতব পাইপ কাকে বলে ?
৭. অধাতব পাইপ কাকে বলে ?
৮. সেচ কাজে ব্যবহৃত পাইপ কত প্রকার ও কী কী ?
৯. পাইপ ফিটিংস কী ?
১০. পাইপ ফিটিংস কত প্রকার ও কী কী ?
১১. প্যাঁচ কাটা যন্ত্রের নাম কী ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. ব্যবহারের ভিত্তিতে পাইপ কত প্রকার ও কী কী ?
২. অসমান স্থানে কী ধরনের পাইপ ব্যবহার করা হয় ?
৩. অনমনীয় পাইপ কাকে বলে ? ৮টি নমনীয় পাইপের নাম লিখ ?
৪. পাইপের সাইজ বলতে কী বোঝায় ?
৫. ধাতব পাইপ কত প্রকার ও কীকী ?
৬. অধাতব পাইপ কত প্রকার ও কীকী ?
৭. পাইপ সংযোগকারী ফেটিংস কাকে বলে ?
৮. পাইপ সংযোগকারী ফেটিংসসমূহের নাম লিখ ?
৯. পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রনকারী ফেটিংস কাকে বলে ?
১০. পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রনকারী ফেটিংসসমূহের নাম লিখ ?
১১. পাইপ ফিটিং-এ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির একটি তালিকা তৈরি কর ?
১২. পাইপের সংযোগস্থল ছিদ্রযুক্ত করার জন্য কী ব্যবহার করা হয় ?
১৩. লিফ প্রুফ কম্পাউন্ড কোথায় এবং কেন ব্যবহার করা হয় 1
১৪. কয়েকটি লিক প্রুফ কম্পাউন্ডের নাম লিখ ।
১৫. পাইপ ফিটিংস বলতে কী বোঝায় ?
১৬. ধাতব বস্তুর বাহিরে প্যাঁচ কাটা যন্ত্রের নাম কী ?
১৭. রিডিউসিং সকেট কোথায় ব্যবহৃত হয় ?
১৮. লিক প্রুফ কম্পাউন্ডের ব্যবহার উল্লেখ কর।
১৯. জি.আই (GI) পাইপ কী ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. পাইপ কাটার পদ্ধতি বর্ণনা কর।
২. পাইপের থ্রেড কাটার পদ্ধতি বর্ণনা কর।
৩. পাইপ কাটা ও ফিটিংস এর সাবধানতা বর্ণনা কর ।
৪. নিকপ্রুফ কম্পাউন্ড করে বলে ? ইহার কার্য প্রণালী বর্ণনা কর ?
পাওয়ার টিলার অধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে জমি চাষ এবং কৃষি কাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত জনপ্রিয় একটি যন্ত্র। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে দিয়ে কৃষি প্রযুক্তিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। জমি চাষের জন্য গরু ও লালনের পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে কলের লাঙ্গল পাওয়ার টিলার। এ অধ্যায়ে পাওয়ার টিলারের বিভিন্ন অংশের নাম, পাওয়ার টিলার চালনার পূর্বে ইনডি, পাওয়ার টিলার চালনা, ঢাকার ব্যবহার, পাওয়ার টিলারে লাগল সংযোগ, পিয়ার পরিবর্তন, রক্ষণাবেক্ষণ, দোষ-ত্রুটি কারণ ও প্রতিকার ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ।
পাওয়ার চালনার আগে ইহার পূর্ব প্রস্তুতিসমূহ নিম্নরূপ-
১. ফুয়েল ট্যাংকে জ্বালানির পরিমাণ সঠিক আছে কি না তা পরীক্ষা করতে হবে।
২. রেডিয়েটরে কুলিং ওয়াটার বা পানির লেভেল পরীক্ষা করতে হবে।
৩. ডিপ স্টিক এর মাধ্যমে ইঞ্জিন অরেলের পরিমাণ পরীক্ষা করতে হবে।
৪. ঢাকার হাওয়ার চাপ ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হবে।
৫. চাকার নাট / বোল্ট টাইট আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে।
৬. ব্রেক ঠিক মতো কাজ করে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে।
৭. সঠিক ভাবে কাজ করে কিনা তা চেক করতে হবে।
৮. হ্যান্ড স্লিপ এর অ্যাডজাস্টমেন্ট সঠিক আছে কিনা তা চেক করতে হবে ।
ইঞ্জিন চালু করার পূর্বে ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করতে হবে। যেমন- ফুয়েল ট্যাংকে বালানির পরিমাণ, ইঞ্জিন অয়েল লেভেল, রেডিয়েটরের পানির লেভেল, ব্রেকিং এ্যাকশন, চাকায় হাওয়ার প্রেশার ও নাট-বোল্ট টাইট ইত্যাদি সঠিক থাকলে নিম্নে লিখিত ভাবে ইঞ্জিন চালু করতে হবে-
১. প্রথমে ইঞ্জিনের এক্সেলারটর লিভারকে স্ট্যার্টিং পজিশনে আনতে হবে এবং গিয়ার নিউট্রাল এবং ক্লাচ ডিজাদেজ পজিশনে আনতে হবে ও ফুয়েল কৰু অন করতে হবে।
২. এরপর বাম হাতে ডি-কম্প্রেশন নিতার এবং তার হাতে স্ট্যার্টিং লিতার ঘরে হাতল ঘুরিয়ে অথবা ইসমিশন সুইচের সাহায্যে ইঞ্জিন চালু করতে হবে।
৩. ইঞ্জিন স্টার্ট দেওয়ার পর তেলের প্রেশার মাপার নাম ইন্ডিকেটর চেক করতে হবে এবং ইহা উপরদিকে উঠেছে কিনা দেখতে হবে এবং ইজিকে ৪০০-৫০০ RPM এ আইডলিং স্পীডে ৫-৭ মিনিট করতে হবে।
৪. এখন এক্সেলারেটর টেনে ইঞ্জিনের স্পীড লোডিং পজিশনে আনতে হবে। চালু রেখে গরম
৫. ক্লাচ লিভারের সাহায্যে ক্লাচ সিস্টেমকে ডিজানো পজিশনে রাখতে হবে।
৬. এরপর গিয়ার শিফটিং লিভারকে ১নং গিয়ার পজিশনে সিলেকশন করতে হবে।
৭. এখন ক্লাচ লিভারের সাহায্যে ক্লাচকে ধীরে ধীরে “এনগেজ” অবস্থানে আনলে পাওয়ার টিলার চলা শুরু করবে।
৮. এরপর পাওয়ার টিলারের স্পীড বৃদ্ধি করার প্রয়োজন হলে উপযুক্ত নিয়মানুযায়ী ক্লাচকে “ডিজএলেজ” পজিশনে এনে পিয়ার শিফটিং লিভারকে ২নং লিয়ার পজিশনে সিলেকশন করতে হবে এবং ক্লাচ লিভারকে ধীরে ধীরে এনগেজিং অবস্থানে আনলেই স্পীদ্ধ বা গতি বৃদ্ধি পাবে ।
৯. এ নিয়মে পিয়ার পরিবর্তনের মাধ্যমে পাওয়ার টিলারের গতি বাড়ানো বা কমানো হয়।
১০. স্টিয়ারিং হ্যান্ড গ্রিপের মাধ্যমে পাওয়ার টিলারকে ডানে অথবা বামে নেওয়া যায়। অর্থাৎ ডান দিকে যাওয়ার প্রয়োজন হলে ডান পাশের স্টিয়ারিং হ্যান্ড গ্রিপ এবং বাম দিকে যাওয়ার প্রয়োজন হলে বাম পাশের স্টিয়ারিং হ্যান্ড গ্রিপ চেপে ডানে বা বামে যাওয়া যায়। উভয় হ্যান্ড গ্রিপ এক সাথে চাপলে পাওয়ার টিলারের গতি কমে গিয়ে থেমে যায়।
১১. পাওয়ার টিলারকে পিছনে নেওয়ার প্রয়োজন হলে ক্লাচকে ডিজএনেজ পজিশনে পিয়ার শিফটিং লিভারকে রিভার্স গিরারে সিলেকশন করতে হবে।
১২. এরপর ক্লাচ লিভারকে ধীরে ধীরে “এনগেজিং” অবস্থানে আনলেই পাওয়ার টিলার পিছনের দিকে যাবে।
১৩. পাওয়ার টিলারকে বন্ধ করার জন্য ক্লাচকে ডিজএলেজ পজিশনে এনে গিয়ার শিফটিং লিভারকে নিউট্রাল পজিশনে সিলেকশন করতে হবে।
১৪. এরপর প্রোটল লিভারকে অফ বা জিরো (OFF/0) পজিশনে আগুনলেই পাওয়ার টিলার বন্ধ হয়ে যাবে।
এভাবে ধারাবাহিক ভাবে উপরোক্ত নিয়ম অনুসরন করে পাওয়ার টিলার চালনা সম্পন্ন করতে হবে।
পাওয়ার টিলার চলার জন্য ঢাকার ব্যবহার অপরিহার্য্য। ঢাকার মাধ্যমে পাওয়ার টিলারে যেমন এক স্থান কে অন্য স্থানে আনা নেওয়া করা যায়, তেমন পাওয়ার টিলারে ভারও ঢাকা বহন করে থাকে। শুকনা জমি চাষ করা এবং রাস্তার চলাচলের জন্য রাবারের চাকা ব্যবহার করা হয় এবং কানা জমি চাষ করার জন্য লোহার ঢাকা বা এন্টিডি হুইল ব্যবহার করা হয়।
ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে পাওয়ার টিলারের ঢাকা দিই ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন-
১। রাবারের চাকা
২। লোহার ঢাকা বা এন্টিস্কিড হুইল
কৃষিক্ষেত্রে জমি চাষা-বাদের জন্য বিভিন্ন প্রকার যান্ত্রিক লাঙ্গল ব্যবহার কর হচ্ছে। এর মধ্যে পাওয়ার টিলারে লাঙ্গল নির্বাচনের জন্য নির্বাচিত লাগলসমূহের নাম দেওয়া হলো :
রোটারি প্লাউ (Rotry Plough):
ধান চাষের জন্য রোটারি লাগল খুবই উপযোগী। ছোট, নরম ও কাঁদামিটিতে রোটারি প্লাউ দিয়ে চাষ দিয়ে জমি তৈরি করা হয়। রোটারি প্লাউ এর সাথে বিভিন্ন আকৃতির স্টিল ব্রেডযুক্ত লাগল ব্যবহার করা হয়।
রিজার (Ridger):
ফসল ক্ষেত্রে প্রাথমিক চাষ দেওয়ার পর রিজার দিয়ে আইন বা খাদ তৈরি করা হয়। এই খাদ ফসলের বীজ বা চারা লাগানো জন্য তৈরি করা হয়। এ ছাড়া জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ও বিজ দিয়ে খাপ তৈরি করা হয় ।
পাওয়ার টিলার ড্রাইভিং করতে হলে গিয়ার কীভাবে শিফটিং বা পরিবর্তন করতে হয় সে ব্যপারে দক্ষতা থাকতে হবে । গিয়ার শিফটি বা পরিবর্তনের নিয়মাবলী নিম্নরূপ-
গিয়ারশিকটিং (Gearshifting)
ক) ক্লাচ লিভার “ভিজএনগেজ" অবস্থানে নিতে হবে।
খ) প্রধান গিয়ার শিফটিং লিভার শিফট করুন যতটুকু গতি দরকার সে মতে গিয়ার শিকটিং লিভার রেঞ্জ বাড়াতে হবে। রোটারি প্লাউ এর গিয়ার শিফটিং লিভার রোটারির ঘূর্ণায়মান গতি নিয়ন্ত্রণ করে। গিয়ার শিফটিং লিভার এর অবস্থান পরিবর্তন করে টিলার এর গতি কম বেশী করা যায়।
গ) পিয়ার শিফটিং অসুবিধা বা কাট হলে ক্লাচ সামান্য চাপ দিতে হবে এবং পরে গিয়ার পুনরায় শিফটিং করে পুরোপুরি মুক্ত বা ডিজএনগেজ (Disengage ) করাতে হবে।
ঘ) রোটারি প্লাউ এর গিয়ার উঁচু বা নিচু করা যায়না যে পর্যন্ত ইহা ধীর গতিতে না নেয়া হয়।
ঙ) রোটারি প্লাউ এর গিয়ার নিউট্রাল অবস্থানে টার্ন করলে প্রধান গিয়ার শিফটিং উল্টো বা বিপরীত দিকের নেয়া যাবে ।
পাওয়ার টিলার চালনার পর রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন। নিম্নে পাওয়ার টিলারের রক্ষণাবেক্ষণ দেওয়া হলো :
১. টিলারের বাহিরের দিকের সব পার্টসগুলো পরিষ্কার করতে হবে ।
২. ডিজেল, লুব্রিকেটিং অয়েল এবং ইঞ্জিন শীতল রাখার পানি সরিয়ে ফেলতে হবে।
৩. ১.৫ কেজি ইঞ্জিন ভেল এইচসি-৮ (HC-8) (এসওয়াই ১১৫২-৭৭) (SY1152-77) বা এসএই- ২০ (SAE-20 ) প্রায় ১২০° C পর্যন্ত গরম করতে হবে যে পর্যন্ত না তেলে বুদবুদ ওঠে। ইঞ্জিন তলায় ১ লিটার ইঞ্জিন অয়েল / ডিজেল দিতে হবে ইঞ্জিন ঘুরাবার হ্যান্ডেল দ্বারা ঘুরাতে হবে যে পর্যন্ত না লাল ভাসমান ইন্ডিকেটর উপরে ওঠে এবং চলমান সমস্ত যন্ত্রাংশে প্রবাহ দ্বারা ধুইতে হবে।
৪. ইন্টেক পাইঙ্গে কিছু পানি মুক্ত তেল দিতে হবে। হ্যান্ডেল দ্বারা ইঞ্জিন ক্র্যাঙ্ক করতে হবে যতক্ষণে পিস্টন টপ সিলিন্ডার লাইনারের ভিতরকার ওয়ালে এবং ভালভাবে সিলিং সারফেসে তেল না পৌঁছে। ভালভকে আটকানো অবস্থায় সেট করতে হবে।
৫. সিলিন্ডারের হেড কভার সরিয়ে খুলে রকার আর্ম এর উপরি ভাগে পানি মুক্ত সারফেস তেল দ্বারা চুবিয়ে দিতে হবে।
৬. ভি-বেল্ট ঘুরিয়ে টেনশান সঠিক করতে হবে।
৭. ভি-বেল্ট পুলিতে মরিচা ধরলে পরিষ্কারক তেল দিন, কন্ট্রোল লিভার এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশেও মরিচা প্রতিরোধক তেল দিন । ধুলাবালিতে রক্ষায় জন্য ডিজেল ইঞ্জিন ঢেকে রাখতে হবে।
৮. পার্ক করার সময় জ্যাক দ্বারা পাওয়ার টিলারকে উঁচু করে কাঠের উপরে রাখুন যাতে টায়ার মাটির স্পর্শের উপরে এবং টায়ারকে ফুলিয়ে রাখুন। পার্কিং এর স্থানটি শুকনা পরিচ্ছন্ন এবং বায়ু চলাচলযুক্ত থাকতে হবে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. পাওয়ার টিলার কী?
২. মোল্ডবোর্ড পাউ কী ?
৩. রোটারি প্লাউ ?
৪. রিজার কী ?
৫. অ্যান্টি-স্কিড হুইল এ কাজ কী ?
৬. পাওয়ার টিলারের পরিচিতি সম্পর্কে আলোচনা কর।
৭. পাওয়ার টিলারের গঠনপ্রণালি উল্লেখ কর।
৮. পাওয়ার টিলার চালনা পূর্ব প্রস্তুতি সমূহ ধারাবাহিকভাবে লিখ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. পাওয়ার টিলারের বিভিন্ন অংশের নাম উল্লেখ কর।
২. পাওয়ার টিলার চালনা কৌশল বর্ণনা কর।
৩. পাওয়ার টিলারে কয় ধরনের চাকা ব্যবহার করা হয় ও কী কী ?
৪. রিয়ার হুইল / রাইজিং অ্যাটাচমেন্ট এর কাজ লিখ ?
৫. পাওয়ার টিলারের গিয়ার শিফটিং বা পরিবর্তন করার পদ্ধতি আলোচনা কর।
রচনামূরক প্রশ্ন
১. পাওয়ার টিলারের ব্যবহৃত লাঙ্গল নির্বচন করার প্রকিয়া বর্ণনা কর।
২. কাজের শেষে পওয়ার টিলারের রক্ষণাবেক্ষণসমূহ উল্লেখ কর ।
৩. পাওয়ার টিলারের দোষ-ত্রুটি, কারণ ও প্রতিকারসমূহ উল্লেখ কর।
যেসব যন্ত্রাংশের সাহায্যে চলন্ত পাওয়ার টিলারকে থামানো বা তার গতি কমানো হয় তাকে পাওয়ার টিলারের ব্রেক সিস্টেম বলে। এই অধ্যায়ে পাওয়ার টিলারের ব্রেকের কাজ, ব্রেক সিস্টেমের বিভিন্ন অংশের নাম, ব্রেক, সমন্বয় বা অ্যাডজাস্টমেন্ট পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
১. চলন্ত পাওয়ার টিলার, ট্রাকটর বা যে কোনো যানকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রেখে থামানো।
২. জরুরি প্রয়োজনের সময় যানের গতি কমানো বা নিয়ন্ত্রণ করা।
৩. ঢালু জায়গা থেকে যান যাতে পিছলে বা গড়িয়ে পড়তে না পারে তার ব্যবস্থা করা।
ব্রেক সিস্টেমের গঠন বা ব্রেকের বিভিন্ন অংশ (Different Parts of the Brake System )
১. বোল্ট (Bolt)
২. স্টাড বোল্ট (Stud Bolt)
৩. লক ওয়াশার (Lock washer )
8. নাট (Nut)
৫. ডয়েল পিন (Dowel pin)
৬. ব্রেক আর্য (Brake Arm)
৭. ব্রেক হাউজিং (Barke Housing )
৮. 'ও-রিং (Oring)
৯. ক্যাম (Cam)
১০. ব্রেক একচুয়েটিং প্লেট (Barke actuating plate )
১১. ব্রেক ডিস্ক (Barke Disk)
১২. গ্যাসকেট (Gasket )
পাওয়ার টিলারের ব্রেক সমন্বয় পদ্ধতি (Power Tillers brake Adjustment Method)
১। প্রয়োজনীয় বিষয়া (Requirements):
যখন ক্লাচ লিতার অবস্থানে টানা হয় অর্থাৎ ২৫-৩০ মি.মি. পর্যন্ত, তখনই পাওয়ার টিলার নামতে শুরু করে ।
২। সমন্বয় পদ্ধতি (Adjusting Method):
(ক) ক্লাচ লিভারকে যুক্ত অবস্থানে নিয়ে (ক্লাচ Disengaged) লঙ্ক নাট ঢিলা করতে হবে এবং তাদের অবস্থান অ্যাডজাস্ট করতে হবে। যখন 'সাপ এবং নাটের মধ্যকার সঠিক Clearance পাওয়া যাবে (আনুমানিক ১২ মি.মি.) তখন হাত যারা ব্রেক আর্থ খুরিয়ে এ অবস্থানে এনে নাটগুলো টাইট দিতে হবে ।
(খ) যদি ব্রেকে ডিস্ক' ঢাকা বা আবৃত থাকে তবে বোল্ট ঢিলা করে ব্রেক বাছ ঘুরাতে হবে, ক্লাচ লিভারকে অকার্যকর অবস্থানে টেনে ব্রেক ক্যাম'কে মুক্ত অবস্থানে রাখতে হবে ব্রেক ক্যামকে ঘড়ি কাটার উল্টা দিকে হাত দ্বারা ঘুরিয়ে এবং আর্ম এর ব্রেক বাহুর সাথে পুনঃযুক্ত করতে হবে। এরপর বোল্ট টাইট করতে হবে। যা চিত্রে দেখানো হয়েছে।
ব্রেক সিস্টেমের দোষ-ত্রুটি, কারণ ও প্রতিকার :
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. পাওয়ার টিলারের ব্রেক কী ?
২. পাওয়ার টিলারে ব্রেকের অবস্থান কোথায় ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। পাওয়ার টিলারের ব্রেকের কাজ লিখ।
২। পাওয়ার টিলারের ব্রেক সিস্টেমের বিভিন্ন অংশের নাম উল্লেখ কর ।
রচনামূলক প্রশ্ন
১। পাওয়ার টিলারের ব্রেক সিস্টেমের সমন্বয় পদ্ধতি আলোচন কর।
২। পাওয়ার টিলারের ব্রেক সিস্টেমের দোষ-ত্রুটি ও প্রতিকার বর্ণনা কর ।
যে পাম্পের সাহায্যে মাটির নিচ থেকে অথবা নদ-নদী, খাল-বিল থেকে পানি উত্তোলন করে কৃষিজমিতে সেচ প্রদান করা হয়ে থাকে তাকে সেচ পাম্প বলা হয়। পাম্প হচ্ছে নলকূপের একটা অংশ। পাম্পের নিজস্ব কোনো শক্তি নেই । পাম্পকে ইঞ্জিন অথবা মোটরের সাহায্যে চালানো হয়ে থাকে। তবে, কিছু পাম্প আছে যা মানুষের কায়িক শ্রমের দ্বারা অর্থাৎ হাত বা পা দ্বারা চালানো হয়ে থাকে। যেমন- হস্তচালিত পাম্প, ট্রেডল পাম্প, রোয়ার পাম্প ইত্যাদি ।
পাম্পের কাজ:
আমাদের দেশে কৃষিকাজে পাম্পের সাহায্যে ফসলের জমিতে সেচ প্রদান করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া শহরে বাসা বাড়ি, অফিস আদালত, কল-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, প্রায় সর্বত্রই পানীয় জল এবং পয়ঃ নিষ্কাষণ কাজে পানি সরবরাহের প্রয়োজন পড়ে। এ পানি প্রধানত পাম্পের সাহায্যে উত্তোলন করা হয়। তাই পাম্পের প্রধান কাজ হচ্ছে মাটির নিচ থেকে অথবা নদ-নদী, খাল-বিল থেকে পানি উত্তোলন করে নির্দিষ্ট স্থানে সরবরাহ করা। একটা পাম্পের ক্ষমতা নির্ধারিত হয় পাম্পটি প্রতি সেকেন্ডে কি পরিমাণ পানি উত্তোলন করতে পারে তার ওপর। পাম্পের কাজ করার এই ক্ষমতার একক হচ্ছে কিউসেক (Cusec ) বা ঘনফুট / সেকেন্ড ।
পাম্পের প্রকারভেদ (Types of Pump)
কৃষিজমিতে সেচ প্রদান ও গৃহকাজে পানি সরবরাহের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রকার পাম্প ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ ধরনের কিছু পাম্পের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো :
ক) রেসিপ্রোকেটিং পাম্প (Reciprocating Pump)
খ) সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প (Centrifugal Pump)
সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প কয়েক প্রকার, যেমন-
১। জেট পাম্প বা স্যে প্রাইমিং পাম্প (Jet pump/Self-Priming Pump)
২। রোটারি পাম্প (Rotary Pump) ৩। টারবাইন পাম্প (Turbine Pump)
সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প (Centrifugal Pump)
যে পাম্পের মধ্যে সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স বা কেন্দ্রাতিগ বল সৃষ্টি করে পানি উত্তোলন করা হয় তাকে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প বলে । কৃষি জমিতে সেচের কাজে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ।
সেন্ট্রিফিউগ্যাল পাম্পের বিভিন্ন অংশ (Parts of Centrifugal Pump)
সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প বিভিন্ন যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে গঠিত। যে সব যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প গঠিত তাদের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো :
ক) ফেসিং বা ভলিউট ফেসিং (Volute Casing)
খ) ইস্পেনার (Impeller)
গ) ভেইন (Vane)
ঘ) শ্যাফট (Shaft)
ঙ) গ্র্যান্ড প্যাকিং (Gland Packing)
চ) বিয়ারিং (Bearing) )
ছ) সাকশন সাইড (Suction side)
জ) ডেলিভারি সাইড (Delivery Side)
ঝ) পেডেস্টাল (Pedestal)
জিয়া ফ্লো পাম্পের পরিচিতি : সেচ কাজে ও পানি নিষ্কাশনে প্রচলিত সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের ফিল্ম হিসাবে পানি এবং অধিক পানি উত্তোলনে সক্ষম নতুন ধরনের পাম্প যা া কো পাে পরিচিত। এ পাম্প দেখতে পাইপের মতো, কৃষি জমিতে সেচ এ মামারে পানি সরবরাহের জন্য এটি একটি জনপ্রিয় পাশ। তিন মিটার বা প্রায় দশ ফুট নিচ থেকে এই পম্পের সাহায্যে পানি উত্তোলন করা যায় । বর্তমানে এই পাশ আমাদের দেশে কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল ও খুলনা বিভাগে এই গাম্প বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে।
এই পাম্পের প্রাইম মুভার (ইঞ্জিন বা মোটর) ভূ-পৃষ্ঠ থেকে গাম্প শ্যাফটের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর বা লেভেল এ অবস্থিত ইম্পেলার কে ঘুরিয়ে বা পরিচালিত করে পাইপ এর মাধ্যমে পানি ডিসচার্জ বা ডেলিভারি করে কৃষি ক্ষেত্রে সেচ কাজে ব্যবহার করা হয়। এ পাম্প দিয়ে পানি উত্তোলনে হেড লস কম হয়। এই চালনার জন্য প্রাইম মুভার হিসাবে সরাসরি পাওয়ার টিলার বা ট্রাক্টরের ইঞ্জিন ব্যবহার করা যায়। পাম্প সরাসরি পানিে শি থাকে বলে সাকশন হেড লস হয় না চেনে, তাই অন্যান্য পাম্পের তুলনায় এক্সিয়াল - ফ্রো পাম্প তুলনামূলক ভাবে বেশি পানি উত্তোলন করতে পারে এবং বেশি জনপ্রিয়।
এক্সিরাল- ক্লো পাম্পের সুবিধা (Advantage of Axial Flow pump ):
১. এই পাম্প সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের নীতিতেই কাজ করে তবে পার্থক্য হলো সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প যেমন, চালু করার আগে প্রাইসিং বা পানি দ্বারা পাম্প ভর্তি করতে হয়, কিন্তু এরিয়ান ফ্রো পাম্প চালু করার আগে প্রাইসিং বা পানি দ্বারা পাম্প ভর্তি করতে হয় না।
২. অন্যান্য পাম্পের তুলনায় জ্বালানী খরচ প্রায় ৫০ ভাগ কম ।
৩. এই পাম্পের হেড লস নাই বল্লেই চলে।
৪. এরিয়ান ড্রো পাম্প চালানোর জন্য ১০ থেকে ১৬ হর্স পাওয়ারের ইঞ্জিন হলেই চলে।
৫. অন্যান্য পাম্পের তুলনায় এই পাম্পের পানি উত্তোলন ক্ষমতা ৫০ থেকে ৭০ ভাগ বেশি।
৬. এই পাম্প হালকা তাই সহজেই বহনযোগ্য।
৭. এই পাম্প সহজে স্থাপন করা যায় ।
৮. এই গাম্পের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ খুবই কম ।
এলএলপি পাম্প অথবা লো-লিফ্ট পাম্প ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানির টকা যেমন- নদ-নদী, খাল-বিল ইত্যাদি হতে এ লো লিফ্ট পাম্প দ্বারা পানি উত্তোলন করা হয় এবং পানির লেবেল যেখানে কম সেখানে পানি উত্তনের জন্য এই পাম্প ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ কম উচ্চতায় বা কাছাকাছি দূরত্বে পানি সরবরাহ করতে এলএলপি পাম্পের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি । বিশেষ করে কৃষি কাজে ফসলের জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য অল্প গভীরতা থেকে পানি
এই পাম্প দ্বারা উত্তোলন করা হয়। ছোট কৃষি কাজে ছোট ছোট জমিতে অল্প সেচ প্রদানের কাজে লো- লিফট পাম্পের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। তাই সেচের ক্ষেত্রে এই পাম্প কৃষকের কাছে সব চেয়ে বেশি জনপ্রিয় ।
লো-লিফট পাম্পের বিভিন্ন অংশ :
ক) বাকেট
খ) ডায়াফ্রাম
গ) পিস্টন
ঘ) প্লাজ্ঞার
ঙ) চেক ভাল্ব
সাব মার্জিবল পাম্পের পরিচিতি (Introduction of Submersible pump):
যে পাম্প পানির নিচে নিমজ্জিত অবস্থায় থেকে পানি উত্তোলন করার কাজ করে অর্থাৎ কোনো তরল পদার্থকে অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে বা উচ্চ চাপের স্থানে উত্তোলন করা হয় তাকে সামাজিকল পাম্প বলে। এ পাম্প গভীর নলকুপ হতে পানি তোলার কাজে ব্যবহৃত হয়। সাবমার্জিবল পাম্পে মোটর ও পাম্প পানির। নিচে নিমজ্জিত অবস্থায় থেকে পানি উত্তোলন করার কাজ করে। সাবমার্জিবল পাম্পের বিভিন্ন অংশ রয়েছে। তার মধ্যে প্রধান দুটি অংশ হচ্ছে-
ক) পাম্প (Pump)
খ) মোটর (Motor)
এ ছাড়া অন্যান্য অংশগুলোর নাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো ।
১) স্ট্রেইনার (Strainer )
২) ইম্পেলার (Impeller)
৩) চেক ভাব বা নন রিটার্ন ভাব (Non Return Valve)
৪) বৈদ্যুতিক তার বা ক্যাবল (Electric Cable)
গ্রামাঞ্চলে পানীয় জলের জন্য যে হস্তচালিত নলকূপ বা হ্যান্ড টিউব ওয়েল ব্যবহার করা হয়, তা এক প্রকার রেসিপ্রোকেটিং পাম্প ছোট কৃষিজমিতে অল্প সেচ প্রদানের কাজে রেসিপ্রোকেটিং পাম্প ব্যবহার করা হয়। গ্রামাঞ্চলে এই পাম্প প্রায় সকল বাড়িতে ব্যবহৃত হচ্ছে। একে হ্যান্ড পাম্পও বলা হয়। হস্তচালিত নলকূপ নিম্নোক্ত যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে গঠিত :
• হাতল (হ্যান্ডেল)
• হেডকভার বোল্ট এন্ড নাট
• প্লাজার রড/কানেক্টিং রঙ
• পিডট বোল্ট এন্ড নাট
• পিস্টন (বাকেটসহ)
• হেড কভার
• পিস্টন ভাল
• চেক ডাব (লেদার ভাল্ব)
• ব্যারেল নির্গমন মুখ
• পাম্প বেস
• নোজ বোল্ট এন্ড নাট
কৃষিকাজে জমিতে সেচ প্রদান, আবাসিক এবং শিল্প কারখানার কাজে পানি সরবরাহের জন্য সাধারণভাবে টারবাইন পাম্প ব্যবহার করা হয়। টারবাইন পাম্প প্রধানত দুই প্রকার। যথা-
• ডীপ ওয়েল টারবাইন পাম্প
• সাবমার্সিবল পাম্প
টারবাইন পাম্পের বিভিন্ন অংশ (Different Parts turbine Pump):
ডিপ ওয়েল টারবাইন পাম্প সাধারনত গভীর নলকূপে ব্যবহৃত হয়। এই পাম্প নিম্নোক্ত প্রধান তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত।
ক) বাউল অ্যাসেমব্লি বা মূল পাম্প
খ) কলাম অ্যাসেমরি
গ) নির্গমন অংশ
নিচে টারবাইন পাম্পের এ সকল অংশের পরিচয় প্রদান করা হলো ।
ক) বাউল অ্যাসেমরি (Bowl Assembly)
বাউল অ্যাসেমরি বা মূল পাম্প তিনটি অংশের সমন্বয়ে গঠিত।
এই অংশ গুলো হচেছ-
১. সাকশন পিস বা সাকশন সাইড
২. বাউল অ্যাসেমরি
৩. ডিসচার্জ পিস
সাকশন পিস (Suction Plece )
নিম্নোক্ত অংশ গুলোর সমন্বয়ে সাকশন পিস গঠিত :
(ক) সাকশন পাইপ
(খ) প্রাগ
(গ) বিয়ারিং পিস
(খ) স্যান্ড গার্ড
নিম্নোক্ত অংশ গুলোর সমন্বয়ে বাউল অ্যাসেমরি গঠিত :
(১) বাউল / কেসিং
(২) ইম্পেলার
(৩) ৰাউল পিস
(৪) উইয়ারিং রিং
(৫) রাবার বুশ
(৬) ক্ল্যাম্পিং স্লিভ
ডিসচার্জ পিস নিম্নোক্ত অংশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত
(১) ডিসচার্জ পাইপ / কেজিং
(২) ডিসচার্জ কেস ক্যাপ
(৩) বিয়ারিং শিশু
(৪) স্যান্ড গার্ড
আগেই বলা হয়েছ, সেন্ট্রিফিউগ্যাল পাম্পের মূল কার্য পদ্ধতি হচ্ছে নিম্নচাপ বা ঋণাত্মক চাপ (Negative Pressure) এর মাধ্যমে পানিকে টেনে উত্তোলন করা। অন্যভাবে বলা যায়, এ পদ্ধতিতে পানিকে চোষণ বা সাকশন (Suction) এর মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়। এ জন্য পানির স্থিতিশীল স্তর ও পাম্পের মাঝে কোনো বায়ু শূন্যতার সৃষ্টি হলে পানি উত্তোলন করা সম্ভব নয়। তাই সেন্ট্রিফিউগ্যাল পাম্পের পানি উত্তোলনের পূর্ব শর্ত হচ্ছে ভলিউট কেসিং এবং সাকশন পাইপ পানি দ্বারা ভর্তি থাকতে হবে। অন্যথায় পানি উত্তোলন করা সম্ভব হবে না। কারণ, সাকশন পাইপে বা সাকশন সাইডে বাতাস ঢুকে পানি গুণ্যতার সৃষ্টি হলে অথবা কোথাও লিক থাকলে নিম্নচাপ বা ঋণাত্মক চাপ কার্যকরী হবে না এবং পাম্পে পানি উঠবে না। এ জন্য পাম্প চালু করার আগে পাম্পের ডব্লিউট কেসিংসহ সাকশন পাইপ পানি দ্বারা ভর্তি করে রাখা, যাতে সেন্ট্রিফিউগ্যাল ফোর্সের মাধ্যমে নিম্নচাপ বা ঋণাত্মক চাপ কার্যকরী হয়। এভাবে পাম্প চালু করার আগে পাম্পের ভলিউট কেসিংসহ সাকশন পাইপ পানি দ্বারা ভর্তি করে রাখাকেই প্রাইমিং। (Priming) বলা হয় ।
জেট পাম্প বা সেক্ষ প্রাইমিং পাম্পের কার্য প্রণালি (Working Principle of Jet Pump / Self- Priming Pump):
প্রাইমিং হচেছ পাম্প কেসিং ও সাকশন পাইপ পানি দিয়ে এমনভাবে পূর্ণ করা যাতে পাম্প, ডলিউট চেম্বার ও সাকশন লাইনে কোনো বাতাস না থাকে। পাম্প চালু করার আগে সাধারণত পাম্পে পানি ঢেলে পূর্ণ করে প্রাইমিং করতে হয়। কিন্তু কিছু কিছু পাম্পে এমন ব্যবস্থা থাকে যাতে প্রতিবার চালু করার আগে এভাবে প্রাইমিং করার দরকার হয় না। এ ধরণের পাম্পে স্বয়ংক্রিয় প্রাইমিং ব্যবস্থা থাকে। এ ধরনের পাম্পকে সেফ প্রাইমিং পাম্প বলে। জেট পাম্পে সেলফ-প্রাইমিং ব্যবস্থা থাকে বলে আমাদের দেশে গৃহকাজে ব্যবহৃত বহুতল ভবনে পানি উত্তলনের জন্য সাধারণত এই পাম্প ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ ধরনের পাম্পে সেলফ-প্রাইমিং-এর জন্য পাম্প কেসিং- এর সাথে অতিরিক্ত প্রাইমিং কেস বা চেম্বার থাকে। এই চেম্বারে পানি ঢেলে পূর্ণ করার জন্য একটা ইনলেট থাকে । পানি দিয়ে পূর্ণ করার পর এই ইনলেট ঢাকনি বা পাগ দিয়ে বন্ধ করে রাখতে হয়। পাশের চিত্রে সেল্ফ প্রাইমিং পাম্পের গঠন দেখানো হলো। কৃষি ক্ষেত্রে সেচ কাজে ব্যবহৃত শক্তি চালিত পাম্পের সাকশন পাইপের শেষ প্রান্তে ফুট ভালভ ব্যবহার করে সেলফ প্রইমিং-এর ব্যবস্থা করা হয়। সেল্ফ প্রাইমিং-এর জন্য সাকশন লাইনে একটা চেকভালভ থাকা জরুরী। প্রাইমিং পোর্ট দিয়ে পানি ঢেলে পূর্ণ করে ইনলেট পোর্ট বন্ধ করার পর যখন পাম্প চালু করা হয়, তখন ইম্পেলার ঘূর্ণনের ফলে পানি ইম্পেলার আই দিয়ে প্রবেশ করে ডেলিভারি পাইপ দিয়ে বের হয়ে যায়। এ সময় সাকশন লাইনে নিম্নচাপের সৃষ্টি হওয়ায় চেকভালভ খুলে সাকশন পাইপ দিয়ে পানি পাম্পে প্রবেশ করতে থাকে। এভাবে অনবরত পানি প্রবাহ বজায় থাকে। পাম্প যখন বন্ধ করা হয় তখন, চেক ভাব বন্ধ হয়ে যায় এবং পাম্পের ভিতরের পানি সাকশন পাইপ দিয়ে পিছন দিকে নেমে যেতে পারে না। ফলে পাম্প কেসিং, সাকশন লাইন এবং ডেলিভারি পাইপের মুখ পর্যন্ত পানি ভর্তি থাকে। ফলে পরবর্তী সময় পাম্প চালু করার আগে আর পাম্প প্রাইমিং করার দরকার হয় না। অগভীর নলকুপে প্রাইমিং করার জন্য পাম্প সংলগ্ন ডেলিভারি লাইনে হস্তচালিত চাপকল সংযুক্ত থাকে। এই পাম্প চেপে পাম্প পানি ভর্তি করে প্রাইমিং করা হয়।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. সেচ প্যাম্প কী ?
২. এল এল পি পাম্প কী ?
৩. সেন্ট্রিফিউগাল কী ।
৪. এক্সিয়াল ফ্লো পাম্পের কী ?
৫. এক্সিয়াল ফ্লো পাম্পে বাংলাদেশের কোনো অঞ্চলে বেশি ব্যবহৃত হয় ?
৬. রেসিপ্রোকেটিং পাম্প কাকে বলে ?
৭. টারাইন পাম্প প্রধানত কত প্রকার ও কীকী ?
৮. টারাইন পাম্পের প্রধান অংশ কয়টি ও কী কী ?
৯. প্রাইমিং কী ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. সেচ প্যাম্প কাকে বলে ?
২. সেচ প্যাম্প কত প্রকার ও কি কি ?
৩. সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের অংশসমূহের নাম উল্লেখ কর।
৪. এক্সিয়াল ফ্রো পাম্পের পরিচিতি উল্লেখ কর ।
৫. এক্সিয়াল ফ্রো পাম্পের বিভিন্ন অংশের নাম লিখ ।
৬. এলএলপি পাম্প এর ইহার বিভিন্ন অংশের নাম লিখ ?
৭. এলএলপি পাম্প সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও ?
৮. সাবমার্জিয়ল পাম্প কাকে বলে ?
৯. সামাজিয়ল পাম্পের যন্ত্রাংশসমূহের নাম উল্লেখ কর ।
১০. রেসিপ্রোকেটিং পাম্পের ব্যবহার ও অংশসমূহের নাম লিখ ।
১১. টারাইন পাম্পের প্রধান প্রধান অংশের অংশসমূহের নাম উল্লেখ কর ?
১২. পাম্পের গঠন প্রণালী উল্লেখ কর ।
১৩. প্রাইমিং বলতে কী বোঝায় ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. এক্সিয়াল ফ্লো পাম্পের সুবিধা সমূহ উল্লেখ কর ?
২. সাবমার্জিয়ল পাম্পের পঠন প্রনালি বর্ণনা কর ?
৩. বিভিন্ন প্রকার পাম্প প্রাইমিং পদ্ধতি বর্ণনা কর।
এ অধ্যারে সেন্ট্রিফিউগান ও সেট্রিপেটাল ফোর্স, সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের গঠন, পাম্প কাপলিং, পাম্প প্রাইম ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এসব আলোচনা থেকে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা লাভ করা সহজ হবে।
সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প (Centrifugal Pump):
ভূ-পৃষ্ঠস্থ পানির উৎস যেমন- নগ-নদী, খাল-বিল, হতে শক্তি-চালিত পাম্প বা লো লিফট পাম্প দ্বারা এবং - গর্ভস্থ পানির স্তর হতে অগভীর নলকূপের যারা পানি উত্তোলন করা হয়। এই উভয় প্রকার যন্ত্রে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প ব্যবহার করা হয়। এ সব পাম্প ইঞ্জিন বা বৈদ্যুতিক মোটরের সাথে সংযুক্তাবস্থায় সেচ কাজে ব্যবহৃত হয় । সেচ কাজ ছাড়াও এই পাম্প আবাসিক বাড়ি, অফিস-আদালত, কল-কারখানা, এ সকল স্থানে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। একটা পাম্পের ক্ষমতা নির্ধারিত হয় পাম্পটি প্রতি সেকেন্ডে কি পরিমাণ পানি উত্তোলন করতে পারে তার ওপর।
পাম্পের কাজ করার এই ক্ষমতার একক হয়েছ কিউসেক (Cusec ) কিউবিক মিটার পার সেকেন্ড বা ঘনফুট/সেকেন্ড।
সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স ও লেন্ট্রিপেটাল ফোর্স (Centrifugal Force Centripetal Force)
সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স শব্দের অর্থ হচেছ কেন্দ্র বিমুখী বা কেন্দ্রাতিগ শক্তি। এক কথায়, কেন্দ্র হতে বহির্গামী বল না শক্তিকে সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স বলা হয়। বিষয়টিকে আরো একটু ভালোভাবে বুঝানো যেতে পারে।
কোনো একটা বস্তুকে যদি একটা নির্দিষ্ট কেন্দ্র বিন্দুর সাথে সংযুক্ত রেখে এর চারদিকে বৃত্তাকারে ঘুরানো হয়, তাহলে সব সময় এর কেন্দ্র হতে বিচিছন্ন হয়ে বৃত্তের বাইরে চলে যাওয়ার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। কেন্দ্র হচ্চে বাইরে যাওয়ার এই প্রবণতা, অর্থাৎ বল বা শক্তিকে কেন্দ্ৰবিমুখী বল বা সেন্ট্রিফিউগাল কোর্স বলা হয়। বস্ত্রটির ঘূর্ণন গতি যত বেশি হবে এই বলের পরিমাণও তত বেশি হবে। পাশের চিত্রে এই সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
সেন্ট্রিপেটাল শব্দের অর্থ হচেছ কেন্দ্রমুখী। অর্থাৎ কেন্দ্রমুখী ফলকেই সেন্ট্রিপেটাল ফোর্স বলা হয়। সেন্ট্রিপেটাল ফোর্স হচ্ছে সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্সের বিপরীত ধর্মী । বৃত্তাকারে ঘূর্ণায়মান কোনো বস্তুকে যে বল বা শক্তি ঐ বৃত্তের কেন্দ্রের দিকে চালিত করে, তাকে সেট্রিপেটাল ফোর্স বলে।
চিত্রে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের গঠন দেখানো হয়েছে। সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প যে সব যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে পঠিত তাদের নাম নিচে দেওয়া হলো
ক) কেসিং বা ভলিউট কেসিং (Volute Casing)
খ) স্পোর (Impeller)
গ)ভেন (Vane)
ঘ) শ্যাফট (Shaft)
ঙ) গ্র্যান্ড প্যাকিং (Gland Packing)
চ) বিয়ারিং (Bearing)
ছ) সাকশন সাইড (Suction Side)
জ) ডেলিভারি সাইড (Delivery Side)
ঝ) পেডেস্টাল (Pedestal)
সেন্ট্রিফিউগ্যাল পাম্পের কার্য প্রণালি (Working Princple of Centrifugal Pump)
সেন্ট্রিফিউগ্যাল পাম্পের মূল কার্যপদ্ধতি হচ্ছে নিম্নচাপ বা ণাত্মক চাপ (Negative Pressure) এর মাধ্যমে পানিকে টেনে তোলা। এ জন্য সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প চালু করার আগে তার মধ্যে পানি বা তরল পদার্থ দিয়ে পূর্ণ করে রাখতে হয়। ইঞ্জিন চালু করলে পাম্পের ভিতরের গুলিউট চেম্বারে ইম্পেলারের মধ্যে অবস্থিত ভেইনগুলো সম্মোরে ঘুরতে থাকে। ভেইনগুলোর সবেগে ঘুর্ণনের ফলে গুলিউট চেম্বারে সেন্ট্রিফিউগাল কোর্স বা কেন্দ্রাতিগ বল তৈরি হয়। ফলে ভলিউট চেম্বারে পিছন দিকে সাকশন লাইনে বায়ু শুণ্যতা বা নিচাপ বা ঋণাত্মক চাপ (Negative Pressure) এর সৃষ্টি হয়। এর ফলে সাকশন লাইনের পানি ভলিউট চেম্বারে ঢোকে এবং ইম্পেলারের ঘূর্ণন গতির ফলে ডেলিভারি পাইপ দিয়ে পানি বাইরে বের হয়ে আসে। এভাবে একটা সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্সের সাহায্যে পানি উত্তোলন করে থাকে ।
ক) ভলিউট কেসিং (Volute Casing)
পাম্পের যে অংশের মধ্যে ইমপেলারের সাহায্যে সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স সৃষ্টি করে পানি উঠানো হয় সেই অংশকেই পাম্প কেসিং বলা হয়। একে ভলিউট কেসিং বা ভলিউট চেম্বার অথবা শুধু ভলিউটাও বলা হয়ে থাকে। ভলিউট কেসিং এক পাশে আড়াআড়ি ভাবে সাকশন পাইপের সাথে যুক্ত থাকে। অন্য দিকে নির্গম মুখটি ডেলিভারি পাইপের সাথে সংযুক্ত থাকে। ভলিউট কেসিং যুক্ত পাম্পকে ভলিউট পাম্প বলা হয়। কোনো কোনো পাম্পের ভলিউটের ভিতরে স্থির কতগুলো ভেইন থাকে। এ ধরনের ভেইনকে ডিফিউজার ভেইন বলা হয়। এ সকল ডিফিউজার ভেইনযুক্ত পাম্পকে ডিফিউজার পাম্প বলে ।
খ) ইম্পেলার (Impeller) :
সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ইস্পেলার। ডব্লিউট কেসিং-এর মধ্যে ইম্পেলার অবস্থিত থাকে। একটা পাম্পে এক বা একাধিক ইম্পেলার থাকতে পারে। একটা মাত্র ইম্পেলার বিশিষ্ট পাম্পকে এক স্তর বিশিষ্ট পাম্প বা 'সিঙ্গল স্টেজ পাম্প' বলে। দুটি ইম্পেলার বিশিষ্ট পাম্পকে টু-স্টেজ পাম্প বলে এবং তিন ইম্পেলার বিশিষ্ট পাম্পকে থ্রি-স্টেজ গাম্প বলে। এর অধিক সংখ্যক ইম্পেলার বিশিষ্ট পাম্পকে মাল্টি-স্টেজ পাম্প বলা হয়।
এক দিকে বাঁকনো কতগুলো ধাতব পাতের সমন্বয়ে ইম্পেলার গঠিত। ইম্পেলার সাধারণত তিন প্রকার হয়ে থাকে। যথা-
১. খোলা ইম্পেলার
২. অর্ধ-খোলা ইম্পেলার
৩. বন্ধ ইম্পেলার
গ) শ্যাফট (Shaft)
পাম্পের মধ্যে অক্ষরেখা বরাবর একটা করে শ্যাফট লাগানো থাকে। শ্যাফটের মাধ্য ইমপেলারের কেন্দ্রস্থলে সংযুক্ত থাকে। শ্যাফটের বাইরের মাথা ইঞ্জিন অথবা মোটরের সাথে কাপলিং বা যুক্ত করা থাকে।
ইঞ্জিন অথবা মোটরের ঘূর্ণনের সাথে সাথে শ্যাফট ঘুরতে থাকে এবং তার সাথে যুক্ত ইম্পেলারকে ঘোরায়। ইম্পেলার ঘোরার কারণেই পাম্পের মধ্যে সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্সের সৃষ্টি হয় এবং পাম্প পানি উত্তোলন করতে সক্ষম হয়।
পাম্প কেসিং-এর যে অংশ দিয়ে শ্যাফট পাম্পের ভিতরে প্রবেশ করানো হয়ে থাকে, সেখান দিয়ে যাতে গানি অথবা বাতাস লিক না করতে পারে তার জন্য গ্ল্যান্ড, প্যাকিং ইত্যাদি যে কাঠামোর মধ্যে বসানো থাকে তাকে স্টাফিং বক্স বলে। পাম্পের মধ্যে পিচ্ছিল কারক বা লুব্রিক্যান্ট (Lubricant) পদার্থ হিসাবে পানি ব্যবহৃত হয়। স্টাফিং বক্সকে ঠাণ্ডা রাখার জন্য বক্সের চারিদিকে পানি প্রবাহের ব্যবস্থা রাখা হয়।
স্টাফিং বক্সের বাইরে ধাতব চাকতি বা কলার প্যাকিং সমূহকে স্টাফিং বক্সের মধ্যে আটকে রাখে। একে গ্র্যান্ড বলা হয়। পাম্পের মধ্যে ইম্পেনার দ্রুত বেগে ঘোরার কারণে আস্তে আস্তে থাকে। এজন্য সাকশন সাইডে ইমপেলারের মুখে উইয়ারিং রিং ব্যবহার করা হয়। গ্ল্যান্ড প্যাকিং ব্যবহার করে স্টাফিং বক্সের মধ্য দিয়ে পানির লিকেজ বন্ধ রাখা হয়। তবে লুব্রিকেশনের জন্য মিনিটে ৮-১০ ফোঁটা পানি বের হওয়া উচিত।
সেচ কাজে ব্যবহৃত অধিকাংশ পাম্প, বিশেষ করে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প, কাপলিং করে ব্যবহার করা হয়। পাম্প নিজে একা একা চলতে পারে না। ভাই এর চালক যন্ত্র বা প্রাইম মুভার (Prime Moover) অর্থাৎ ইঞ্জিন বা মোটরের সাথে পাম্পকে কাপলিং করার প্রয়োজন হয়। কাপলিং প্রধানত দুই প্রকার। যথা-
• নমনীয় কাপলিং
• অনমনীয় কাপলিং
ক) নমনীয় কাপলিং (Flexible Coupling) :
নমনীর কাপলিং সাধারণত অধিকাংশ সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ ধরনের কাপলিং-এ সংযোগস্থলের নমনীয়তা রক্ষা করে। এতে টর্ক স্থানান্তর সহজ। ধাক্কাজনিত ঝাঁকুনি ইত্যাদি সহজে গ্রহণ এবং রোধ করা যায়। এ ধরনের কাপলিং-এ রাবার অথবা রাবারের মতো নরম সহনশীল দ্রব্য কুশন হিসেবে ব্যবহার করা যায়। নমনীয় কাপলিং সাধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে। যেমন-
• রাবার চাকতির কাপলিং
• পিন ও পিনকুশন কাপি
নিজের চিত্রে রাবার ডিল্ক কাপলিং এবং পিন ও লিনকুলনা কাপলিং দেখানো হলো :
সাধারণত অল্প ক্ষমতা বিশিষ্ট ছোট পাম্প কাপলিং-এর ক্ষেত্রে রাবার ডিস্ক বা চাকতি কাপলিং ব্যবহার করা হয়। বড় বড় হেভি ডিউটির পাম্পে সাধারণত লিন ও পিনকুশন কাপলিং ব্যবহার করা হয়। পাম্প কাপলিং করার সময় সঠিক ভাবে একরেখীকরণ বা অ্যালাইনমেন্ট করতে হবে। অ্যালাইনমেন্ট ঠিক করার জন্য 'স্ট্রেইট-এক্স' ও 'ডায়াল গেজ ব্যবহার করতে হয়। পাম্প শ্যাফট এবং ইঞ্জিন বা মোটর শ্যাফট একই অক্ষরেখার স্থাপিত হলে সংযোগকারী নাট-বোল্ট গুলো টাইট দিতে হয়। নাট-বোল্ট গুলো টাইট দেওয়ার পর আবার কাপলিং-এর অ্যালাইনমেন্ট পরীক্ষা করতে হয়। পাম্পের সাথে সাকশন পাইপ এবং ডেলিভারি পাইপ সংযোগ দেওয়ার পর আবার অ্যালাইনমেন্ট পরীক্ষা করতে হয়। সব শেষে চুড়ান্তভাবে পরীক্ষা করে অ্যালাইনমেন্ট ঠিক করে নিয়ে ভালোভাবে নাট-বোল্ট টাইট দিতে হয়। তারপর হাত দিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে হয় শ্যাফট ঠিকমতো ঘুরছে কিনা। অ্যালাইনমেন্ট বা এফরেধীকরণ পরীক্ষা করার নিয়ম চিত্রের মাধ্যমে দেখানো হলো।
গ. অনমনীয় কাপলিং (Solid / Fixed Compling)
অনমনীয় কাপলিং-এর ক্ষেত্রে পাম্প ও চালক যন্ত্র (ইঞ্জিন/মোটর) উভয়ের শ্যাফট একই লাইনে পরস্পরের সাথে সরাসরি সংযোগ প্রদান করা হয়। এভাবে কাপলিং যুক্ত শ্যাফট পরস্পরের সাথে কঠিন ও শক্ত ভাবে যুক্ত থাকে। অর্থাৎ কাপলিং এর সংযোগ স্থলে কোনো নমনীয়তা থাকেনা। সাধারণত খাড়া বা ভার্টিক্যাল পাম্পের ক্ষেত্রে এ ধরনের অনমনীয় কাপলিং ব্যবহার করা হয়। পাশের চিত্রে অনমনীয় কাপলিং পদ্ধতি দেখানো হলো।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প কী ?
২. সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স কী ?
৩. সেন্ট্রিপেটাল ফোর্স কী ?
৪. কেন্দ্র হতে বহির্গামী বলকে কী বলে ?
৫. পাম্পের ক্ষমতার একক কী ?
৬. স্টাফিং বক্স কী ?
৭. পাম্প কাপলিং কী ?
৮. ইম্পেলার কী?
৯. পাম্পে লুব্রিকেশনের জন্য কী ব্যবহার করা হয় ?
১০. হেভি ডিউটি পাম্পে কী কী কাপলিং ব্যবহার করা হয় ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প কোথায় কী কাজে ব্যবহৃত হয় ?
২. সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স ও সেন্ট্রিপেটাল কোর্স সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও ।
৩. সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের বিবিন্ন অংশের নাম লিখ ।
৪. ভলিউট কেসিং এর কাজ লিখ ?
৫. শ্যাফট এর কাজ লিখ ?
৬. স্টাফিং বক্সের ব্যবহার বা প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর ?
৭. পাম্প চালু অবস্থায় স্টাফিং বক্স দিয়ে প্রতি মিনিটে কয় ফোটা করে পানি পড়বে ?
৮. পাম্প কাপলিং বলতে কী বুঝ ?
৯. পাম্প কাপলিং কত প্রকার ও কী কী ।
১০. সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের গঠন বর্ণনা কর ।
১১. ইম্পেলার কত প্রকার ও কী কী ?
১২. পাম্প কেসিং-এর স্থির ভেনকে কী বলে ?
১৩. পাম্পের মধ্যে কোনো যন্ত্র ঘূর্ণনের ফলে সেন্ট্রিফিউগাল ফোর্স সৃষ্টি করে ?
১৪. প্রাইমিং বলতে কী বোঝায় ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. নমনীয় কাপলিং ও অনমনীয় কাপলিং সম্পর্কে বর্ণনা দাও?
২. পাম্প কাপলিং অ্যালাইনমেন্ট পরীক্ষা পদ্ধতি বর্ণনা কর।
৩. সেন্ট্রিফিউগ্যাল পাম্পের কার্যপ্রণালি বর্ণনা কর ।
৪. সেন্ট্রিফিউগাল পাম্পের দোষ-ত্রুটি ও প্রতিকারের একটি তালিকা তৈরি কর।
ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর থেকে পানি উত্তেলন করার যে প্রক্রিয়া তা হচ্ছে নলকূপ খনন। আমাদের এই কৃষি প্ৰধান দেশের প্রশ্ন সকল এলাকায় নলকূপ খনন করে বাসা বাড়িতে, কৃষিকাজ ইত্যাদিতে প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা পূরণ করা হয়ে থাকে। এ অধ্যায় নলকূপ খননের স্থান নির্বাচন, বিভিন্ন প্রকার খনন পদ্ধতি, হস্তচালিত ঢেঁকি খনন পদ্ধতি, সংঘটন বা প্রক্ষেপণ পদ্ধতি, পানির বিচ্ছুরণ বা ওয়াটার জেট পদ্ধতি, ঘূর্ণি খনন বা রোটারি পদ্ধতি, পাম্প ফাউন্ডেশন কৌশল, কাঠ বা বাঁশের ভিত, ইঁট ও খোয়ার ভিত, সিসি ঢালাইকৃত পাকা ভিত, পাম্প অ্যালাইনমেন্ট পদ্ধতি ইত্যাদি সম্পর্কে অলোচনা করা হলো ।
নলকূপ খননের কাজটি আপাতত দৃষ্টিতে খুব সহজ মনে হলেও কাজটি করার জন্য এ বিষয়ে যথেষ্ট কারিগরি জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। নিম্নে স্থান নির্বাচন করার ক্ষেত্রে বিবেচ্য কিছু বিষয়ের উল্লেখ করা হলো :
১. নলকূপ খননের আগে নলকূপের জন্য সুবিধাজনক স্থান নির্বাচন করা অপরিহার্য।
২. পানিয় কাজে হস্তচালিত নলকূপের স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে প্রধান বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হয় তা হলো দূষিত পানির উৎস বা পয়ঃনিষ্কাশন নালা হতে দূরে, নলকূপের পানির স্তর যাতে দূষণমূক্ত থাকে এমন স্থানে নলকূপের স্থান নির্বাচন করতে হবে।
৩. কৃষি জমিতে সেচ প্রদানের উদ্দেশ্যে স্থাপিত নলকূপের ক্ষেত্রে নলকূপের স্থান নির্বাচনের জন্য যে জমিতে সেচ দেওয়া হবে তার মধ্যে সবচেয়ে উঁচু জমিতে নলকূপের স্থান নির্বাচন করা প্রয়োজন ।
৪. সেচযোগ্য এলাকার মোটামুটি মধ্যভাগে হলে ভালো এতে সেচের পানি সেচনালা দিয়ে সরবরাহ করতে সুবিধা হয় । তবে এমন স্থানে কোনো উঁচু জমি না পেলে এ বিষয়টি বিবেচনায় আনার প্রয়োজন নেই ।
৫. ইঞ্জিন চালিত পাম্প হলে স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা নেই কিন্তু বিদ্যুৎ চালিত হলে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই বৈদ্যুতিক লাইনের কাছাকাছি স্থান নির্বাচন করা প্রয়োজন ।
৬. নলকূপের স্থানটি যে কোনো রাস্তা বিশেষ করে পাকা সড়কের পাশে হলে ভালো হয় । তবে এটা অত্যাবশ্যকীয় নয় ।
নলকূপ খননের জন্য বিভিন্ন প্রকার পদ্ধতি আছে। তার মধ্যে চারটি পদ্ধতি বেশি প্রচলিত। যেমন-
১. হস্তচালিত ঢেঁকি খনন পদ্ধতি
২. সংঘটন বা প্রক্ষেপণ খনন পদ্ধতি
৩. পানির বিচ্ছুরণ বা ওয়াটার জেট খনন পদ্ধতি
৪. ঘূর্ণি খনন বা রোটারি খনন পদ্ধতি
হস্তচালিত ঢেঁকি খনন পদ্ধতি (Manual Boring Method)
এই খনন পদ্ধতি তিনজন মানুষের কায়িক শ্রম মাধ্যমে এবং ঢেঁকির কার্যপদ্ধতির মাধ্যমে সম্পাদিত হয়ে থাকে। দেড় ইঞ্চি ব্যাসের হস্তচালিত নলকূপ খননের বেলার আমাদের দেশে সাধারণত এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি খুবই প্রচলিত এবং আর খরচে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে বাঁশের তৈরি ঢেঁকির মতো একটি ফ্রেম এবং এর সাথে আনুমানিক কার্যক্রমের জন্য আরো একটি বাঁশের ফ্রেম তৈরি করে ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিতে দেড় ইঞ্চি ব্যাসের জিআই পাইপের সাহায্যে নলকূপের গর্ত খনন করা হয়।
সংঘটন বা প্রক্ষেপণ খনন পদ্ধতি (Percussion or Boring Method) নরম পলিমাটির এলাকায় এই পদ্ধতিতে নলকুপ খনন করা হয়ে থাকে। এতে খরচ কিছুটা কম এবং কাজও বেশ সহজ। তাই আমাদের দেশে অধিকাংশ অগভীর নলকুপ সাধারণত এই পদ্ধতিতে খনন করা হয়ে থাকে। এতে যান্ত্রিক ও কায়িক শ্রমের মিশ্রণ ঘটে থাকে। এ পদ্ধতির নলকূপ খনন করতে প্রথমে একটি চৌবাচ্চার মাঝখানে নলকূপের চেয়ে বেশি ব্যাসের কেসিং পাইপ বসানো হয় এবং ঠিক তার উপরে ট্রাইপড স্ট্যান্ড স্থাপন করা হয়। ট্রাইপড স্ট্যান্ড হতে চেইন গুলির সাহায্যে নিচের মাথার কাটার (Cutter) সংযুক্ত ৰোবিং পাইপ ঝুলিয়ে ফেসিং পাইলের মধ্যে নামানো হয়। বোরিং পাইপের উপরের মাথায় হোজ পাইপ সংযুক্ত করা থাকে যার অপর প্রা একটি পাম্পের ডেলিভারি লাইনের সাথে যুক্ত করা থাকে। এই গাম্পের সাহায্যে হোজের মাধ্যমে বোরিং পাইগে পানির প্রবাহ সৃষ্টি করে বোর ছোলের শেষ প্রান্তে কাটারের ভিতর দিয়ে মাটিতে নিক্ষিপ্ত হয়। এভাবে একই সাথে বোরিং পাইপের কাটারের আঘাতে ও পানি প্রবাহের দ্বারা নলকূপের গর্ত খনন করা হয় ।
পানি ও কাটারের আঘাতে মাটি গলে দিয়ে খোলা পানি হিসেবে বোরিং পাইপ ও কেসিং পাইপের মাঝখান দিয়ে উপরে উঠে আসে। উপরের চিত্রের মাধ্যমে এই পদ্ধতির নলকুপ খনন প্রক্রিয়া বুঝানো হলো ।
পানির বিচ্ছুরণ বা ওয়াটার ডেট করুন পদ্ধতি (Water Jet Baring Method)
শক্ত কদম অথচ পানিতে দ্রবণীর মাটিতে নলকূপ খননের জন্য এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। ট্রাইপডের সাহায্যে কেসিং পাইপটিকে কাঁচা চৌবাচ্চার উপর লভাবে ধরে কেসিং পাইপের মধ্য দিয়ে একটি পানির জেট ল (Water Jet Pipe ) जমনভাবে প্রবেশ করিয়ে দিতে হয়, যেন ঐ নলের এক প্রায় কেসিং পাইপের নিচের দিকে মাটির স্তরে গিয়ে ঠেকে। পানির জেট নলের ঐ প্রান্তে একটা নল (Nazzle) লাগানো থাকে এবং অপর প্রাপ্ত ভূ-জলের উপরে একটা পাম্পের সাথে সংযুক্ত করা থাকে । ঐ পাম্পের সাহায্যে পানির জেট নলের মধ্য দিয়ে পানি সজোরে প্রবেশ করে এবং তা নজলের মুখ দিয়ে কেসিং পাইপের নিচের প্রান্তে মাটিতে সজোরে আঘাত করে। ফলে ফেসিংয়ের নিচের মাটি নরম ও আলগা হয়ে পানিতে গলে যায়। তখন কেসিং পাইপ তার নিজের খচ্ছদের ফলে এবং উপর থেকে পাইপ ব্রেঞ্চের সাহায্যে বা অন্য কোনো পদ্ধতিতে ডানে-বায়ে ঘোরানোর ফলে নিচের নরম মাটির মধ্যে দেখে যেতে থাকে। গলিত মাটির ঘোলা পানি মঙ্গলের পানি প্রবাহের চাপে কেসিং পাইপ ও পানির জেট দলের মাঝের ফাঁকা স্থান নিয়ে উপর দিয়ে উঠে আসে। এভাবে আস্তে আস্তে নির্দিষ্ট গভীরতায় নলকূপের গর্ত খনন করা হয়ে থাকে।
ঘূর্ণি ওম বা রোটারী প (Rotary Drilling Method)
সাধারণত নরম অথচ আঠালো মাটিতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতি পূর্বের খ) অনুচ্ছে বৰ্ণিত সংঘটন বা প্রক্ষেপণ পদ্ধতি (Percussion or Boring Method) এর অনুরূপ। এখানে পার্থক্য হলো, বোরিং পাইপের মাথার পাইপের চেয়ে বেশি ব্যাস বিশিষ্ট কার্টার (Cutter) সংযুক্ত থাকে এবং এতে কোনো কেসিং পাইপ স্থাপন করা হয় না। দ্বিতীয় পার্থক্য হলো, বোরিং পাইপ যারা উপর থেকে নিচে দিে আঘাতের পরিবর্তে এখানে বোরিং পাইপকে ঘুরিয়ে নলকূপের পর্ডের তলদেশের মাটি কাটা হয়। মাটির গণিত ঘোলা পানি পাইপ ও মাটির তৈরি গর্ডের মাঝখান নিয়ে উপরে উঠে আসে।
নলকূপ স্থাপনের পর নলকূপের পাইপের চারিদিকে শক্ত ভিত তৈরি করা প্রয়োজন। তা না হলে নলকূপের পানি পড়ে পড়ে মাটি নরম ও কর্দমাক্ত হয় এবং পাইপের গোড়া দিয়ে ব্যবহৃত ময়লা ও সুষিদ্ধ পানি পুনরায় নলকূপে প্রথশ করতে পারে। নলকূপের ভিত বা ফাউন্ডেশন তিন ধরনের হয়ে থাকে। বেম-
১। কাঠ বা বাঁশের ভিত
২। ইট ও গোয়ার ভিত
৩। সিসি চালাইকৃত পাকা ভিত
কাঠ বা বাঁশের ভিত (The foundations of wood or bamboo)
সাধারণত নলকূপ স্থাপনের পরে খুব অল্প সময়ের জন্য এ ধরনের বিত্ত ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নলকূপের পাইপের চারনিকের আলগা মাটি মজবুত হয়ে বসার জন্য যে সময় প্রয়োজন ততদিন এ ভিত রাখা হয়। ইঞ্জিন বা মোটরের জন্য এ ভিত্ত খুব উপযোগী নয়। ইঞ্জিন বা মোটর বসাতে হলে তরুণ বা বাঁশের কাঠামোতে শার্ট-বোল্ট সহযোগে বসানো যেতে পারে। হস্তচালিত নলকূপ এবং খুব ছোট ও অম্ল ক্ষমতা সম্পন্ন ইঞ্জিন যা মোটরের জন্য এ ধরনের ভিত তৈরি করা যেতে পারে।
ইট ও খোয়ার ভিত (Foundation of brick and misery)
নলকূপ স্থাপনের পরে নলকূপের পাইপের চারদিকের আলগা মাটি পিটিয়ে মজবুত করে তার উপরে প্রথমে বালি ও খোয়া বিছিয়ে তার উপরে ইটের গাঁথুনি দিয়ে এ ধরনের ভিত তৈরি করা হয়ে থাকে। এ ভিত তৈরি করার সময় পাম্প ও ইঞ্জিন/মোটরের মাপে ভিতের মধ্যে বোল্ট বসানো হয়। এই বোল্টের সাথে পাম্প ও প্রাইম মুভার বসিয়ে বোল্টের সাথে নাট লাগিয়ে স্থাপন করা হয়। সাধারণত মাঝারি ক্ষমতা সম্পন্ন নলকূপ ও ইঞ্জিন বা মোটরের জন্য এ ধরনের ভিত তৈরি করা হয়ে থাকে।
সিসি ঢালাইকৃত পাকা ভিভ (Concrete foundation)
সিসি চালাইকৃত পাকা ভিসম্পূর্ণভাবে পাকা ও স্থায়ীভাবে নলকূপের পাম্প ও ইঞ্জিন বা মোটর বসাতে হলে এ ধরনের ভিত ব ফাউন্ডেশন তৈরি করা হয়। পাইপের চারদিকের আলগা মাটি পিটিয়ে মজবুত করে তার উপরে প্রথমে বালি ও খোয়া বিছিয়ে তার উপরে সিমেন্ট কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে এ ধরনের ভিত তৈরি করা হয়ে থাকে। এ ডিস্ক ঢালাই করার আগে পাম্প ও ইঞ্জিন/মোটরের মাপে ভিতের মধ্যে বোল্ট বসানো হয়। এই বোল্টের সাথে পাম্প ও প্রাইম মুভার বসিয়ে বোল্টের সাথে নাট লাগিয়ে স্থাপন করা হয়। এ ধরনের ভিত বা ফাউন্ডেশন খুব শক্ত ও মজযুক্ত এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে। সাধারণত অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন নলকূপ ও শক্তিশালী ইঞ্জিন বা মোটরের জন্য এ ধরনের ভিত তৈরি করা হয়ে থাকে।
কোনো নলকূপের পাম্প স্থাপন কালে পাম্পের অ্যালাইনমেন্ট ঠিক রাখা খুবই জরুরি একটা বিষয়। প্রাইম মুভার অর্থাৎ ইঞ্জিন বা মোটরের শ্যাফটের অক্ষের সাথে একই অক্ষে পাম্প বসানোকেই পাম্পের অ্যালাইনমেন্ট বলা হয়। পাম্পের অ্যালাইনমেন্ট ঠিক রাখার জন্য পাম্প স্থাপন কালে লেভেলিং যন্ত্রের সাহায্যে পাম্পের অ্যালাইনমেন্ট সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। নির্ধারিত এই অ্যালাইনমেন্ট মোতাবেক পাম্পের বেল বা ফাউন্ডেশন তৈরি করতে হবে। এ ছাড়া স্থাপনকালে চূড়ান্তভাবে অ্যালাইনমেন্ট মেপে সেই মোতাবেক পাম্প বেজের নাট-বোল্টের মাঝে প্রয়োজন বোধে ওরাপার বা ধাতব প্যাকিং দিতে হবে। এ ভাবে সঠিক অ্যালাইনমেন্টে পাম্প স্থাপন করতে হবে।
নলকূপের পাম্প যদি তার প্রাইম মুভারের সাথে একই অ্যালাইনমেন্টে না বসানো হয়, তাহলে পাম্প চালানোয় নানা ধরনের অসুবিধা দেখা দিতে পারে। যেমন-
১) পাম্প পূর্ণ গতিতে ঘুরবে না ।
২) ইঞ্জিন বা মোটরের অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় হবে।
৩) অতিরিক্ত তেল জ্বালানি খরচ হবে।
৪) বিয়ারিং তাড়াতাড়ি ক্ষয়প্রাপ্ত হবে
৫) রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেড়ে যাবে।
৬) পানি কম উঠবে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. নলকূপ খনন কী ?
২. হস্তচালিত ঢেঁকি খনন পদ্ধতি কী ?
৩. সংঘটন বা প্রক্ষেপণ খনন পদ্ধতি কী ?
৪. পানির বিচ্ছুরণ বা ওয়াটার জেট খনন পদ্ধতি কী ?
৫. ঘূর্ণি খনন বা রোটারি খনন পদ্ধতি কী ?
৬. প্রাইম মুভার কী ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. নলকূপ খনন পদ্ধতি কত প্রকার ও কী কী ?
২. পাম্প অ্যালাইনমেন্ট পদ্ধতির অংশসমূহের নাম উল্লেখ কর ?
৩. হস্তচালিত ঢেঁকি খনন পদ্ধতি বলতে কী বোঝায় ?
৪. সংঘটন বা প্রক্ষেপন খনন পদ্ধতি বলতে কী বোঝায় ?
৫. পানির বিচ্ছুরণ বা ওয়াটার জেট খনন পদ্ধতি বলতে কী বোঝায় ?
৬. ঘূর্ণি খনন বা রোটারি খনন পদ্ধতি বলতে কী বোঝায় ?
৭. পাম্প ফাউন্ডেশন কাকে বলে ?
৮. পাম্প ফাউন্ডেশন কত প্রকার ও কী কী ?
৯. পাম্প ফাউন্ডেশন কৌশলসমূহ বর্ণনা কর ?
১০. পাম্পের অ্যালাইনমেন্ট সঠিক ভাবে না হলে কী কী অসুবিধা হয় ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. নলকূপ খননের স্থান নির্বাচন প্রক্রিয়া উল্লেখ কর।
২. নলকূপ খনন পদ্ধতি বর্ণনা কর ।
৩. পাম্প অ্যালাইনমেন্ট পদ্ধতি সমূহ বর্ণনা কর।
গ্রামাঞ্চলে পানীয় জলের জন্য যে হস্তচালিত নলকুপ বা হ্যান্ড পাম্প ব্যবহার করা হয়, তা এক প্রকার রেসিপ্রোকেটিং পাম্প। বর্তমান অধ্যারে রেসিপ্রোকেটিং পাম্পের প্রকারভেদ, ব্যবহার, গঠন, কার্যপদ্ধতি, রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। নিচে রেসিপ্রোকেটিং পাম্প সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
বিভিন্ন প্রকার পাম্পের বিভিন্ন ধরনের ব্যবহার রয়েছে। এসব পাম্পের নাম ও তাদের ব্যবহার সম্বন্ধে নিচে উল্লেখ করা হলো।
(ক) হস্তচালিত নলকূপ বা ৰাকেট টাইপ লিফট পাম্প
সাধারণত গৃহকাজে প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ এবং ছোট কৃষি জমিতে অল্প সেচ প্রদানের কাজে এই গাম্প ব্যবহার করা হয়।
(খ) হস্তচালিত বাকেট পাম্প
ফসলের জমিতে কীটনাশক ছিটানোর জন্য ব্যবহৃত স্প্রে-পাম্প' এ বাফেট পাম্প ব্যবহার করা হয় ।
(গ) হস্তচালিত ডায়াফ্রাম পাম্প
এ ধরনের পাম্প কর্দমাক্ত পানি বা এ ধরনের তরল পদার্থ নিষ্কাশন, নির্মাণ কাজের ট্রেন্স পানিমুক্ত করা, ড্রেনেজ লাইন পরিষ্কার করা, সেফটি ট্যাংক নিষ্কাশন করা ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হয়।
(ঘ) বাকেট টাইপ ফোর্স পাম্প
এ ধরনের পাম্প ভূ-পৃষ্ঠস্থ বা ভূ-গর্ভস্থ চৌবাচচা থেকে অথবা নলকূপ হতে পানি উচচ স্থানে অবস্থিত রিজার্ভ ট্যাংকে সরবরাহ করার কাজে ব্যবহৃত হয় । গৃহকাজে ব্যবহারের জন্য এ পাম্প বেশ উপযোগী।
(ঙ) পিস্টন টাইপ পাম্প
বহুতল বিশিষ্ট ভবনের হাসে রিজার্ভ ট্যাংকে পানি উত্তোলনের জন্য এই পাম্প বেশ উপযোগী। এই পাম্পের সাহায্যে উচচ চাপে পানি অনেক উঁচুত্তে উত্তোলন করা যায়।
(চ) প্লাজার টাইপ পাম্প
খুব অল্প পরিমাণে তরল পদার্থকে অতি উচ্চ চাপে অল্প দূরত্বে নিক্ষেপ করার কাজে এ ধরনের পাম্প ব্যবহৃত হয়। ডিজেল ইঞ্জিনের জ্বালাি সিলিন্ডারে জ্বালানী সরবরাহের কাজেও এ ধরনের পাম্পে ব্যবহৃত হয়।
রেসিপ্রোকেটিং পাম্পের প্রকারভেদ (Types of Reciprocating Pump )
রেসিপ্রোকেটিং পাম্পের ব্যবহার, গঠন, কার্যপদ্ধতি, ইত্যাদির ভিত্তিতে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। সাধারণভাবে রেসিপ্রোকেটিং পাম্পকে
দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
(১) লিফট পাম্প
(২) ফোর্স পাম্প
পাম্প চালানোর কৌশলের ভিত্তিতে পাম্পকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
(১) হস্তচালিত পাম্প
(২) ইঞ্জিন/মোটর চালিত পাম্প
পাম্পিং এলিমেন্টের প্রকারভেদের ভিত্তিতে পাম্পকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
(১) বাকেট টাইপ পাম্প
(২) ডায়াফ্রাম টাইপ পাম্প
আবার ফোর্স পাম্পকে পাম্পিং এলিমেন্টের ভিত্তিতে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
(১) ৰাকেট টাইপ ফোর্স পাম্প
(২) পিস্টন টাইপ ফোর্স পাম্প
(৩) প্লাঞ্জার টাইপ ফোর্স পাম্প
হস্তচালিত নলকূপের গঠন নিচের চিত্রের মাধ্যমে দেখানো হলো। হস্তচালিত নলকূপ নিম্নোক্ত যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে গঠিত।
(১) হাতল (হ্যান্ডেল)
(২) প্লাজার রড/কানেক্টিং রড
(৪) হেড কভার
(৫) ব্যারেল
(৫) নির্গম মুখ
(৬) নোজ বোল্ট এন্ড নাট
(৭) হেডকভার বোল্ট এন্ড নাট
(৮) পিডট বোল্ট এন্ড নাট
(৯) পিস্টন (বাকেটসহ)
(১০) পিস্টন ভালভ (
১১) চেক ভাব (লেদার ভাষ )
(১২) পাম্প বেস
হস্তচালিত নলকূপ হতে পানি ওঠানোর জন্য নলকূপের হাতল বার বার চাপতে হয়। হাতলে চাপ প্রয়োগ করে পানি ওঠানো হয় বলে একে 'চাপকল ও বলা হয়। হাতলে চাপ প্রয়োগ করে নিচের দিকে নামালে হাতলের মাথায় সংযুক্ত কানেক্টিং রডের টানে পিস্টন ওপর দিকে উঠে আসে। এ সময় পিস্টনের ভালভটি বন্ধ থাকে বলে নিচের অংশে ব্যারেলের মধ্যে বায়ু শূন্যতার সৃষ্টি হয়। ফলে, নিচের দিক হতে পানি চেক ভালভকে ঠেলে উপরে ব্যারেলের মধ্যে প্রবেশ করে। এতে ব্যারেল পানি দ্বারা ভর্তি হয়। আবার, হাতল উপর দিকে টেনে তোলা হলে কানেক্টিং রডের নিম্নমুখি চাপের কারণে পিস্টন নিচের দিকে নামে। নিচে চেকভালভ বন্ধ থাকায় ব্যারেলের পানির চাপে পিস্টন ভালভ খুলে যায় এবং পানি উপরে উঠে আসে। আবার যখন হাতল নিচের দিকে চাপা হয় তখন আগের মতো পানির চাপে পিস্টন উপর দিকে ওঠে এবং একই ভাবে পানি উপরে উঠে আসে। অতিরিক্ত পানি ব্যারেলের উপর দিকের নির্গম মুখ দিয়ে বের হয়ে আসে। এভাবে ক্রমাগত হাতল ওঠা-ন হতে থাকে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. রেসিপ্রোকেটিং পাম্প কী ?
২. রেসিপ্রোকেটিং পাম্প প্রধানত কত প্রকার ও কী কী ?
৩. হস্তচালিত বাকেট পাম্প কী ?
৪. বাকেট টাইপ ফোর্স পাম্প কী ?
৫. পিস্টন টাইপ পাম্প কী ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. রেসিপ্রোকেটিং পাম্প প্রধাণত কত প্রকার ও কী কী ?
২. পাম্প চালানোর কৌশলের ভিত্তিতে রেসিপ্রোকেটিং পাম্প কত প্রকার ও কী কী ?
৩. পাম্পিং এলিমেন্টের ভিত্তিতে রেসিপ্রোকেটিং পাম্প কত প্রকার ও কী কী ?
৪. আবার ফোর্স পাম্পকে পাম্পিং এলিমেন্টের ভিত্তিতে কত প্রকার ও কী কী
৫. স্প্রে পাম্প বা হস্ত চালিত বাকেট পাম্প কী কাজে ব্যবহার করা হয় ?
৬. বহুতলবিশিষ্ট ভবনের ছাদে পানি জমা রাখার জন্য কী পাম্প ব্যবহার করা হয় ?
৭. প্লাজার পাম্পে কী ধরনের রড ব্যবহার করা হয় ?
৮. হস্ত চালিত টিউবওয়েল বা নলকূপ কোনো ধরনের পাম্প ?
৯. রেসিপ্রোকেটিং পাম্প কোনো নীতিতে কাজ করে ?
১০. রেসিপ্রোকেটিং পাম্প বা হস্ত চালিত পাম্প কত গভীরতা পর্যন্ত পানি উঠাতে পারে ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. বিভিন্ন প্রকার রেসিপ্রোকেটিং পাম্পের ব্যবহার বা প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা কর ?
২. হস্ত চালিত নলকূপের চিত্র অংকন করে ইহার বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত কর।
৩. রেসিপ্রোকেটিং পাম্প হস্তচালিত নলকূপের কার্য পদ্ধতি বর্ণনা কর ।
৪. রেসিপ্রোকেটিং পাম্পের দোষ-ত্রুটি ও প্রতিকার ধারাবাহিক ভাবে উল্লেখ কর ?
আমাদের দেশে বর্ষাকালে প্রচুর পরিমাণ পানি পাওয়া গেলেও শুকনো মৌসুমে পর্যাপ্ত সেচের পানি পাওয়া যায়না । এ অধ্যায়ে ধান ফসলে কখন কতটুকু পানি দরকার, সেচ নালা এবং একটি সেচ পাম্প দ্বারা জমিতে কতটুকু পানি দেওয়া যাবে ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
ফসলের জমিতে কখন কতটুকু পানি সরবরাহ করা প্রয়োজন তা তিনটি বিষয়ের ওপরে নির্তনশীল । যেমন-
১। ডিউটি (Duty)
২। ডেল্টা (Delta) ও
৩। বেজ প্ৰিয়ড (Base Priod )
ডিউটি (Duty) :
জমির পরিমাণ এবং প্রয়োগকৃত সেচ পানির আয়তনের অনুপাত বা সম্পর্ককে ডিউটি বলে। জমির পরিমাণ বা ক্ষেত্রফল হেক্টরে এবং পানির আয়তন কিউবিক মিটার/সেকেন্ডে প্রকাশ করা হলে ডিউটি হবে- হেক্টর/কিউমেক। অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে এক কিউবিক মিটার হারে সম্পূর্ণ বেইস পিরিয়ডব্যাপী সেচ পানি সরবরাহ করা হলে যত হেক্টর জমির সফল পরিপক্ক করা যাবে তাকে ডিউটি বলে । উদাহরণস্বরূপ, কোনো ফসলে প্রতি সেকেন্ডে এক কিউবিক মিটার হারে ফসলে পুরো বেইস পিরিয়ড (B) ব্যাপী সেচ পানি সরবরাহ করা হলো, তাতে ২০০ হেক্টর জমির ফসল পরিপক্ক করা সম্ভব হল। তাহলে, ঐ ফসলের ডিউটি হলো 'B' দিনের বেইস পিরিয়ডে প্রতি কিউমেকে ২০০ হেক্টর। অন্য কথায়, ২০০ হেক্টর/কিউমেক, B দিনের বেইস পিরিয়ডের জন্য। ডিউটিকে নানাভাবে প্রকাশ করা হয়ে থাকে-
১। ক্ষেত্রফলে একক প্রতি প্রবাহের হার (হেক্টর/কিউমেক, একর/কিউমেক)
২। প্রবাহের একক প্রতি জমির ক্ষেত্রফল (কিউমেক / হেক্টর, কিউমেক/একর)
৩। পানির গভীরতার এককে (সেন্টিমিটার, মিটার, ইঞ্চি, ফুট)।
ডেল্টা (Delta) :
কোনো একটি ফসলে মোট প্রয়োজনীয় পানির পরিমাণ গভীরতার এককে প্রকাশ করা হয়। এই গভীরতাকে ডেল্টা বলে। একে সেন্টিমিটার বা মিটার অথবা ইঞ্চি বা ফুটে প্রকাশ করা হয়। ফসল রোপণ থেকে শুরু করে কর্তন বা উত্তোলন পর্যন্ত ফসলের চাহিদা অনুযায়ী পানি দিতে হয়। ফসলের বাড়ন্ত বা বাড়তি বিভিন্ন সময়ে পানির চাহিদাও বিভিন্ন থাকে । তবে ফসলের মোট জীবনকালে যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন হয় তার মোট গভীরতাকে ডেল্টা বলে । সেচ পানি সরবরাহের যে স্থানে তা মাপা হয় অথবা হিসাব রাখা হয় তাকে এই স্থানের ডেল্টা বলে । যেমন মাঠ পর্যায়ের ডেল্টা, পাম্প পর্যায়ের ডেল্টা, খাল পর্যায়ের ডেল্টা ইত্যাদি। ডেল্টাকে গ্রিক অক্ষর A দ্বারা প্রকাশ করা হয় । ধরা যাক কোনো একটি ফসল রোপনের পরে ৫ সেন্টিমিটার, দ্বিতীয়বারে ৮ সেন্টিমিটার, তৃতীয় বারে ৭ সেন্টিমিটার, চতুর্থবারে ৬ সেন্টিমিটার এর শেষ বারে ৫ সেন্টিমিটার, পানি সেচ দেওয়া হল । তাহলে, এই ফসলের ডেল্টা হবে ৫+৮+৭+৬+৫ = ৩১ সেন্টিমিটার অথবা ০.৩১ মিটার ।
নিচের তালিকায় কয়েকটি প্রধান ফসলের ডেল্টা লক্ষ্য কর :
ধান - ১২০ সেন্টিমিটার (৪৮ ইঞ্চি)
তুলা ৫০ সেন্টিমিটার (২২ ইঞ্চি)
আখ - ৪০ সেন্টিমিটার (৪৮ ইঞ্চি)
গম - ১২০ সেন্টিমিটার (১৬ ইঞ্চি)
ভূট্টা ২৫ সেন্টিমিটার (১০ ইঞ্চি)
বেইস পিরিয়ড (Base period)
কোনো ফসলে প্রথম সেচ ও শেষ সেচ প্রদানের মধ্যবর্তী সময়কে বেইজ পিরিয়ড বলে ফসলের বীজ বপনের বা চারা রোপণের কিছুদিনের মধ্যে সর্বপ্রথম সেচ দিতে হয়। এরপর কিছুদিন পরপর এবং ফসল তোলার কিছু আগে সেচ দিতে হয় । এই সর্বপ্রথম ও সর্বশেষ সেচের মধ্যে মোট যতদিন অতিবাহিত হয়, তাকে বেইজ পিরিয়ড বলে। উদাহরণস্বরূপ কোনো কোনো জাতের ধানের বেইজ পিরিয়ড ১১০ দিন। আবার, কোনো কোনো জাতের গমের বেইড পিরিয়ড ১২০ দিন বেইজ পিরিয়ডকে B দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
সেচ নালা নির্মাণ :
যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে নালার মাধ্যমে ফসলে জমিতে সেচ প্রদান করা হয়, তাকে ভূপৃষ্টস্থ সেচ নালা বলে। এ প্রক্রিয়ায় বিশেষ করে গ্রীষ্ম মৌসুমে যখন চারদিকের নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর ইত্যাদির পানি শুকিয়ে যায়, তখন ভূগর্ভস্থ এই নালা নির্মাণ করে ফসলে জমিতে সেচ দেওয়া হয়। ভূগর্ভের পরিবাহী স্তর ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় ২০ ফুট নিচে পাওয়া যায়। ভূ-পৃষ্ঠের পানি উত্তোলনের জন্য নলকূপ বসিয়ে পানি উত্তোলন সেচ ব্যবস্থা অল্প সময়ে খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সেচ নালা নির্মাণের জন্য নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রথমে পাইপ রেঞ্জ, চেইন রেঞ্জ, কোদাল, বালতি, আড়াই ইঞ্চি (2-2") অথবা চার ইঞ্চি (৪) ব্যাসের জি আই পাইপ, ঐ ব্যাসের সকেট, বাঁশের খণ্ড ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে।
গর্ত তৈরি করা : নির্বাচিত স্থানে ১০ সে.মি ব্যাসের ১-২ মিটার গভীর করে একটা গর্ত করতে হবে। এই গর্ত থেকে আধা মিটার দুরে ১ মি. x ০.৫ মি. x ৫ মি. (৪০ ইঞ্চি x ২০ ইঞ্চি x ২০ ইঞ্চি) সাইজের চৌবাচ্চা খনন করতে হবে । একটা সরু নালী কেটে উভয় নালীকে সংযুক্ত করতে হবে।
১৫.৩ একটি সেচ পাম্প দ্বারা কতটুকু জমিতে পানি দেওয়া যায় (How much water can be in the field by an irrigation pump)
একটি পাম্প দ্বারা কতটুকু পানি উত্তোলন করতে পারে তা নির্ভর করে পাম্পের ক্যাপাসিটির উপর। পাম্প ক্যাপাসিটি (Pump Capacity) কোনো একটা পাম্প একক সময়ে সর্বোচ্চ যে পরিমাণ পানি বা তরল পদার্থ সরবরাহ বা অপসারণ করতে পারে তাকে ঐ পাম্পের ক্যাপাসিটি বা ক্ষমতা বলা হয়। এফপিএস (Feet Pound Second) পদ্ধতিতে পাম্প ক্যাপাসিটি সাধারণত ঘনফুট / সেকেন্ড (Cubic feet per Second) বা সংক্ষেপে কিউসেক হিসেবে প্রকাশ করা হয়। মেট্রিক পদ্ধতিতে এই একককে লিটার / সেকেন্ড (Litre per Second ) হিসেবে প্রকাশ করা হয় ।
২ কিউসেক ক্ষমতার পাম্প বলতে বোঝা যাবে যে, পাম্পটি প্রতি সেকেন্ডে ২ ঘনফুট পানি সরবরাহ করতে পারে। অনুরূপভাবে, ৫৬ লিটার/সেকেন্ড বলতে পাম্পটি প্রতি সেকেন্ডে ৫৬ লিটার পানি সরবারাহ করতে পারে, এ কথা বোঝায়।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. সেচ নালা কী ?
২. ডেলটা কী ?
৩. ডিউটি কী ?
৪. এফপিএস পদ্ধতিতে পাম্প ক্যাপাসিটির একক লিখ।
৫. মেট্রিক পদ্ধতিতে পাম্প ক্যাপাসিটির একক লিখ ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. ডেলটা বলতে কি বোঝায় ?
২. ডিউটি বলতে কি বোঝায়?
৩. বেইজ প্রিরিয়ড বলতে কি বোঝায় ?
৪. সেচ নালা বলতে কী বোঝায় ?
৫. ডিউটির একক সমূহের নাম লিখ।
৬. প্রধান কয়েকটি ফসলের ডেল্টা তালিকায় উল্লেখ কর।
৭. ফসণেন জমিতে কখন কতটুকু পানি সরবরাহ করা প্রয়োজন তা যে বিষয়ে উপরে নির্ভর করে সে বিষয়গুলো কী কী?
৮. পাম্প ক্যাপাসিটি কাকে বলে? ৯. কিউসেক ক্ষমতার পাম্প বলতে কি বোঝায় ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১. সেচ নালার কার্যপ্রণালি বর্ণনা কর ।
২. ডেলটা, ডিউটি ও বেইজ প্রিরিয়ড সম্পর্কে বর্ণনা দাও?
৩. একটি সেচ প্যাম্প দ্বারা কতটুকু জমিতে কতটুকু পানি দেওয়া যাবে তা আলোচনা কর ।
৪. ভূগর্ভস্থ সেচ নালা নির্মাণ সম্পর্কে বর্ণনা দাও?
লেদ মেশিন এমন এক প্রকার মেশিন টুলস যা অপর একটি লেদ মেশিন তৈরি করতে যতগুলো অপারেশন প্রয়োজন হয়, তার সবই এ মেশিনে করতে পারে। এ অধ্যায় লেদ মেশিনের পরিচিতি, লেদ মেশিনের বিভিন্ন অংশসমূহ অবহিতকরণ, লেদ মেশিনের সাহায্যে টার্নিং, ফেসিং এবং লানিং করা ও লেদ মেশিন চালনার করার সাবধানতা ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
লেদ মেশিন (Lathe Machine ) :
লেদ মেশিন হচ্ছে এমন এক প্রকার মেশিন টুলস যার দ্বারা একটা (Single point) বাটালির সাহায্যে ঘুরন্ত বস্তুকে কেটে বেলনাকৃতি (Cylindrical), মোচাকৃতি (Conical) বর্গাকৃতি (Square) এবং চেপ্টা (Flat) আকৃতি প্রদান করা হয় । মূলত লেদ মেশিন টার্নিং কাজেই বেশি ব্যবহৃত হয় ।
লেদ মেশিন প্রথম উদ্ভাবিত হয় প্রধানত শ্যাফট বোল্ট, পিন, গিয়ার ব্লাঙ্ক, ইত্যাদি উৎপাদন করার উদ্দেশ্যে । ক্রমে এর উন্নতি সাধন করে এবং প্রয়োজনমতো কিছু অতিরিক্ত যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তি সংযোজন করে অনেক বেশি ও ব্যাপক কার্যক্রম সম্ভব হয়। এতে পুলি, প্যাঁচ কাটা, ছিদ্রকরা, বোরিং, রিমিং, ট্যাপিং, নার্লিং, গ্রাইন্ডিং, ফিনিশিং এবং বেশ কিছু মিলিং অপারেশনের কাজও সঠিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। বস্তুত লেদ মেশিন এমন একটা মেশিন টুল বা অপর একটা লেদ মেশিন তৈরি করতে যতগুলো অপারেশন প্রয়োজন, তার সবই করতে পারে। আর এ জন্যই লেদ মেশিনকে সকল মেশিন টুলসের উৎস বা Father of all Machine tools বলে।
লেদ মেশিনের প্রকারভেদ (Types of lathe machine) :
লেদ মেশিনের প্রধানত দুই প্রকার যেমন-
১। হস্তচালিত লেদ মেশিন ও
২। শক্তিচালিত লেদ মেশিন ।
কাজের উপর ভিত্তি করে
হস্তচালিত লেদ মেশিন বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। যেমন-
১। হ্যান্ড লেদ মেশিন
২। উড় ওয়ার্ক লেদ মেশিন
৩। পলিশি লেদ মেশিন ও
৪। প্যাটার্ন লেদ মেশিন
কাজের উপর ভিত্তি করে শক্তি চালিত লেদ মেশিনও বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। যেমন-
ক. বেঞ্চ লেদ
খ. সেন্টার লেদ
গ. মেটাল টার্নিং লেদ
ঘ. স্পিড লেদ ড. টুল রুম লেদ
চ. প্রিসিশন লেদ
ছ. টারেট বা ক্যাপস্টেন লেদ
জ. নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোলড লেদ (NC lathe )
ঝ. কম্পিউটারাইজড নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোলড লেদ (CNC Jathe)
হস্তচালিত লেদ মেশিনের কাজ (Hand driven lathe machine work) :
হস্তচালিত লেদ মেশিন ক্ষুদ্র শিল্পকারখানায় সাধারণ কাজে ব্যবহৃত হয়। এই লেদ মেশিন অসুস্থ মাপেরও অমসৃণ কাজে, বিশেষ করে নরম বস্তুর মেশিনিং কাজে ব্যবহৃত হয়। এই মেশিনের হাতের সাহায্যে শক্তি উৎপাদন করে। কাজ করা হয় । ফ্লাট ফাইলের কাঠের হাতল এ মেশিনে তৈরি করা হয় ।
শক্তিচালিত লেদ মেশিনে কাজ (Power driven lathe machine work) :
বৃহৎ উৎপাদন কাজে এবং ধাতব বস্তু মেশিনিং করার জন্য শক্তিচালিত লেদ মেশিন যেমন বৈদ্যুতিক শক্তি (মোটর), ও যান্ত্রিক শক্তি (অন্তদহ ইঞ্জিন) ব্যবহৃত হয় যেখানে বিদ্যুৎ সুবিধা নেই সেখানে অন্তসহ ইঞ্জিন চালিত লেদ মেশিন ব্যবহৃত হয়। আর এই কারণেই লেদ মেশিনকে ইঞ্জিন লেদ বলা হয়। সাধারণত ভারী, ধাতব বস্তুর মেশিনিং কাজে এবং সূক্ষ্ম ও ফিনিশিং কাজে শক্তিচালিত লেদ মেশিন ব্যবহৃত হয়। প্রায় প্রত্যেকটি কল-কারখানা ও ওয়ার্কশপে এই শ্রেণির লেদ মেশিন জনপ্রিয় । বর্তমান উন্নত প্রযুক্তির যুগে বহুল উৎপাদনের ক্ষেত্রে অতি সূক্ষ্ম ও সঠিক মাপের এই প্রকার বা নমুনার যন্ত্রাংশ বহুল পরিমাণে স্বল্প সময়ে উৎপাদন করার জন্য অত্যাধুনিক লেদ মেশিন ব্যবহার করা হয় য়া NC (Neumerical Control) লেদ মেশিন নামে পরিচিত।
কুল্যান্ট (Coolant) :
কাটিং টুলস দ্বারা কার্যবস্তুতে কর্তন (Cutting) বা ঘর্ষণ (Grinding ) কাজের সময় কাটিং টুল ও কার্যবস্তুর মধ্যে ঘর্ষণের ফলে সৃষ্ট তাপকে কমিয়ে কাটিং টুলস এবং কার্যবস্তুকে ঠান্ডা করার প্রয়োজনে যে শীতল প্রবাহী ব্যবহার করা হয়, তাকে কুল্যান্ট বা শীতল প্রবাহী বলে । ক্ষেত্র বিশেষে তিন প্রকার কুল্যান্ট পাওয়া যায় ।
১. নিরেট বা সলিড (Solid) কুল্যান্ট, যেমন গ্রাফিইট পাউডার
২. তরল (Liquid) কুল্যান্ট, কাটিং অয়েল
৩. গ্যাসীয় (Gasious) কুল্যান্ট, কার্বনডাই অক্সাইড গ্যাস।
কুল্যান্ট এর কাজ বা ব্যবহার (The use of coolant ):
১. কুল্যান্ট ধাতুখন্ডের পৃষ্ঠতল তৈলাক্ততা করে, এতে কাটিং টুল অপেক্ষাকৃত কম তাপে ধাতুকে কর্তন করে 'ও টুল লাইফ বৃদ্ধি করে।
২. কাটিং অপারেশন সৃষ্টি চিপ্সসমূহ কাটিং টুলের ধারে লেগে যায়। কাটিং টুলের কাটিং এজ পরিষ্কার রাখার জন্য কুলান্ট ব্যবহৃত হয় ।
৩. কাটিং ও মেশিনিং অপারেশনের ফলে কার্যবস্তুর পৃষ্ঠতল মসৃণ করতে কুলান্ট ব্যবহৃত হয়।
৪. কাটিং টুলস এর শক্তিতা ( Hardening) ও টেম্পারিং গুণাবলি অক্ষুন্ন রাখর জন্য এবং কাটিং এজ এর স্থায়িত্ব বাড়াতে কুলান্ট ব্যবহৃত হয় ।
৫. কাটিং ও মেশিনিংকালে কাটিং টুল ও কার্যবস্তুর মধ্যে ঘর্ষণজনিত বাধা কমিয়ে অধিক ঘূর্ণনগতি পাওয়ার জন্য কুল্যান্ট ব্যবহৃত হয়।
৬. কাটিং টুল যত বেশি গরম হবে, তত তাড়াতাড়ি এটার ক্ষয় হবে। অত্যধিক গরম হয়ে কাটিং টুলের হার্ডনেস অক্ষুন্ন রেখে কাজ করতে কুল্যান্ট ব্যবহৃত হয়।
একটি প্রডাকশন লেদ মেশিনের প্রধান প্রধান অংশসমূহের নাম নিচে প্রদত্ত হল :
১. বেড (Bed)
২. হেড স্টক (Head Stock)
ক. অলগীয়ার 'টাইপ (All gear type)
খ. কোনো পুশি টাইপ (Cone pully type)
৩. টেইল স্টক (Tail Stock )
৪. ক্যারেজ (Carriage)
ক. স্যাডল (Saddle)
খ. অ্যাপ্রোন (Apron )
গ. ক্রস স্লাইড (Cross Slide )
ঘ. কম্পাউন্ড স্লাইড (Compound Slide
ঙ. টুল পোস্ট (Tool Post )
৫. লিড স্ক্রু (Lead Screw) ইত্যাদি।
৬. কুইক চেঞ্জ গিয়ার বক্স (Quick Change Gear Box )
৭. ড্রিল চাক
৮. কম্পাউন্ড রেস্ট
৯. ফিড শ্যাফট
লেদ মেশিন দিয়ে টানিং, ফেসিং ও লার্নিংসমূহ কীভাবে কর্তন করতে হয় তার কার্যকৌশল নিম্নরূপ-
টার্নিং (Turning) :
লেদ মেশিনে ঘুরস্ত বেলাকৃতি ওয়ার্কপিসের পৃষ্ঠতল থেকে অনাকাঙ্খিত ম্যাটেরিয়াল কাটিং অথবা কাটিং টুলের সাহায্যে অপসারণ করে কাম্য আকৃতি প্রদান করাকেই টার্নিং অথবা কুন্দন বলে। অর্থাৎ টার্নিং এর কাজ হলো কুন্দন কাজের সাহায্যে বেলুনাকৃতি ভরাকশিসের ব্যাস ক্রমান্বয়ে হ্রাস করা। টার্নিং ৩ প্রকার।
১. প্লেইন টার্নিং
২. স্টেপ টার্নিং
৩. ট্যাপার টার্নিং ।
ট্যাপার টার্নিং (Turaing tapper)
কোনো সমতল বা বেলনাকৃতি বস্তুর গ্রন্থ বা ব্যাস কোনো নির্দিষ্ট বিন্দু হতে সমহারে বাড়ে বা কমে তখন ঐ বস্তুকে ট্যাপার (Taper) বস্তু বলে। ট্যাপার এর মাপ ধরা হয় বড় ব্যাস, ছোট ব্যাগ, ট্যাপার দৈর্ঘ্য এবং ট্যাপার কোণ। লেদ মেশিনের সাহায্যে চারটি পদ্ধতিতে ট্যাপার টার্নিং করা যায় :
১. কম্পাউন্ড রেস্ট সুইভেনিং পদ্ধতি
২. টেল স্টক অফসেট পদ্ধতি
৩. ট্যাপার অ্যাটাচমেন্টের সাহায্যে
৪. ফর্ম টুলের সাহায্যে
১। কম্পাউন্ট রেস্ট পদ্ধতি (Rest methods Compound)
প্রথমে অন্যকে ফেসিং করে চাকে বাঁধতে হবে। অপর প্রাপ্ত টেইল স্টকে যারা সঠিকভাবে সাপোর্ট দিতে হবে। সূত্রের সাহায্যে ট্যাপার কোণ বের করতে হবে। এখন কম্পাউন্ড রেস্টের সুইভেল বেইলের নটি দুটি ঢিলা করে সূত্রে প্রাপ্ত কোণ যত ডিগ্রি তা অ্যাডজাস্ট করে আবার নাট দুটি টাইট দিতে হবে। এরপর কম্পাউন্ড রেস্ট হ্যান্ড হুইল দিয়ে কম্পাউন্ড রেস্ট স্লাইডকে চালনা করে ট্যাপার কাটার জন্য কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এ পদ্ধতিতে বেশি লম্বা জবের উপর ট্যাপার কাটা যায় না। রেন্ট স্লাইড যতটুকু দৈর্ঘ্যে যাতায়াত করতে পারে ততটুকু দৈর্ঘ্য পর্যন্ত ট্যাপার কাটা যায় ।
৩। ট্যাপার টার্নিং অ্যাটাচমেন্ট এর সাহায্যে
ট্যাপার টার্নিং ও বোরিং উভয়ই নিখুত ভাবে করা যায়। এ পদ্ধতিতে টেইল স্টক সরানোর কোন প্রয়োজন হয় না। ট্যাপার টার্নিং অ্যাটাচমেন্ট ব্যবহার করে প্রায় ১২° পর্যন্ত ট্যাপার কাটা যায়। অ্যাটাচমেন্টের প্রধান অংশগুলো হলো গাইড রেইল, গাইড ব্লক এবং ব্রাকেট । গাইড ক্রেইনকে ফ্রেমের কেন্দ্র বিন্দুতে দুই পার্থেই সেট করা যায় ।
ফেসিং প্রক্রিয়া (Facing process)
ওয়ার্কপিসের প্রাপ্তকে এর অক্ষের সাথে সমকোণে সমান করার মেশিনিং পদ্ধতি হলো ফেইস কাটিং। চাকে লাইভ ও ডেড সেন্টারের মাৰে, ফেস প্লেট, কলেটে বাধা অবস্থায় অথবা টেডি রেস্ট দ্বারা সাপোর্ট দেওরা অবস্থার ফেসিং করা হয়। ফেসিং করার উদ্দেশ্য হলো ওয়ার্কপিসের প্রান্তিক অক্ষের সাথে করার, সমকোণে আনা, মসৃপ করা এবং এর দৈর্ঘ্যকে সঠিক মাপে আনা, সেটার লেসে ফেসিং করার সময় অবশ্যই কাটিং টুল এর কাটিং এজ ডেড সেন্টারের সেন্টার একই উচ্চতায় অবস্থান করবে।
১। ফেসিং (Facing)
ওয়ার্কপিসের প্রাপ্তকে এর অক্ষের সাহিত সমকোণে সমান করার মেশিনিং পদ্ধতি হলো ফেস কাটিং বা ফেসিং। চাকে উভয় সেন্টারের মাঝে, ফেসপ্লেট, কলেটে বাঁধা অবস্থায় অথবা স্টেডি রেস্ট দ্বারা সাপোর্ট দেওয়া অবস্থায় ফেসিং কর হয় । ফেসিং করার উদ্দেশ্য হলো ওয়ার্কপিসের প্রাপ্তকে এর অক্ষের সাথে স্কয়ার ও মসৃণ করা এবং এর দৈর্ঘ্যকে সঠিক মাপে আনা। দুটি পদ্ধতিতে ফেসিং করা হয়। ওয়ার্কপিসের কেন্দ্র হতে ভেতরের দিকে এবং বাহির হতে কেন্দ্রের দিকে। কেন্দ্র হতে বাইরের দিকে ফেসিং করা অধিক মসৃণ হয়, কিন্তু এ নিয়মে ফেসিং করা কঠিন, কারণ কাটিং টুল সরে যায়। বাহির হতে কেন্দ্রের দিকে ফেসিং করা অধিক সুবিধাজনক এবং এতে হেভি কাট দেওয়া যায় ।
নার্সিং পরার পদ্ধতি (Process gets knurling)
কোনো বেদাকৃতি দিয়েট বা ফাঁকা বস্তুর পায়ে খরার সুবিধার্থে লেদ মেশিনের সাহায্যে যে বিশেষ ধরনের খাঁজ কাটা হয় তাকে নার্সিং বলে।
মার্নিং হলো সিলিন্ড্রিক্যাল ওয়ার্কাপিসের সারফেসে খাঁজ তৈরি করার পদ্ধতি। নার্সিং কাটিং অপারেশন নয়। এটি এমবোলিং পদ্ধতি যখন হুরন্ত ওয়ার্কপিলের সারফেসের মধ্যে নার্সিং রোলস (টুল) হুইল চেপে ধরা হয়। স্থান মাটিরিয়াল ব্যসার্ধ বরাবর নার্সিং রোলের দাঁতের ফাঁকে সরে যায়। এ কারণে নার্সিং এর বাইরের ব্যাস আদি বাস হতে বৃহত্তর হওয়া উচিত। ফু হেড, নাট, হ্যাভেল, পানস, ফাইবার ইত্যাদি ধরার সুবিধার্থে এবং ক্ষেত্রবিশেষে কোনো শ্যাফট এর ব্যাস সামান্য বৃদ্ধি করার জন্য নার্সিং করা হয়।
১. চাদর, মাফলার, পাঞ্জাবি, নেকটাই ইত্যাদি টিলা পোশাক পরিহার করা উচিত।
২. লেদে কাজ করার সময় সেফটি গগলস্ পরিধান করা উচিত।
৩. শক্ত তলা বিশিষ্ট জুতা পরিধান করা উচিত।
৪. অ্যাপ্রোন পরিধান করা উচিত।
৫. লেদ মেশিন পরিষ্কার পরিহা রাখা ও নিয়মিত তেল প্রদান করা উচিত।
৬. গার্ডসমূহ যথাস্থানে লাগিয়ে রাখা উচিত।
৭. চাক পরিবর্তন করার সময় যাতে পরে না যায় তজ্জন্য সতর্ক থাকা উচিত।
৮. ত্রুটিপূর্ণ মেশিন সইচ পরিহার করা উচিত ।
৯. ওয়ার্কপিস ও টুল উত্তমরুপে টাইট দেওয়া উচিত।
১০. ঢাকা টাইট দেওয়ায় পর চাক কী সরিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখা উচিত ।
১১. হেডস্টকের উপর যন্ত্রপাতি রাখা উচিত নয় ।
১২. ওয়ার্কপিস দৃঢ়ভাবে বেঁধে হাই স্পিডে লেদ চালানো উচিত।
১৩. চালু অবস্থায় স্পীড পরিবর্তন করা উচিত নয় ।
১৪. চাক কী হ্যান্ডল বা অন্য কোনো লিভার হাতুড়ির আঘাতে টাইট দেওয়া উচিত নয় ।
১৫. লেদ সম্পূর্ণভাবে স্থির হবার পূর্বে হাতে চাক স্থির করার চেষ্টা করা উচিত নয় ।
১৬. লেপে ফাইলিং করার জন্য বাম হাতে ফাইল ধরা উচিত।
১৭. বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে মেশিন সুইচ অফ করা উচিত।
১৮. কাজের শেষে মেইন সুইচ অফ করা উচিত ।
১৯. কাজের প্রতি যত্নবান ও মনোযোগী হওয়া উচিত।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. কুল্যান্ট কী ?
২. লেদ মেশিন কী ?
৩. টার্নিং কী ?
৪. ট্যাপার টার্নিং কী ?
৫. লেদ মেশিন কাজ লিখ।
৬. লেদ মেশিনের প্রকারভেদসমূহ উল্লেখ কর ।
৭. হস্তচালিত লেদ মেশিন ও শক্তিচালিত লেদ মেশিনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. লেদ মেশিন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
২. লেদ মেশিনের প্রকারভেদ সমূহ উল্লেখ কর ।
৩. টার্নিং কতপ্রকার ও কী কী ?
৪. ট্যাপার টার্নিং পদ্ধতি কত প্রকার ও কী কী ?
৫. হস্ত চালিত লেদ মেশিনের কাজ উল্লেখ কর ।
৬. শক্তি চালিত লেদ মেশিনে কাজ উল্লেখ কর ।
৭. কুল্যান্ট কত প্রকার ও কী কী ?
৮. ফেসিং কাকে বলে ?
৯. নারলিং কাকে বলে ?
১০. লেদ মেশিনের বিভিন্ন অংশ নাম বা গঠন প্রণালী উল্লেখ কর ।
রচনামূলক প্রশ্ন
১. ট্যাপার টার্নিং পদ্ধতিসমূহের কার্যপ্রণালি বর্ণানা কর ।
২. ফেসিং করার কার্যপ্রণালী বর্ণনা কর ।
৩. নারলিং করার প্রণালী বর্ণনা কর ।
8. লে কুল্যান্ট এর কাজ বা ব্যবহার?
৫. লেদ মেশিনে কাজ করার সাধারণ বা সতর্কতাসমূহ উল্লেখ কর।
উদ্দেশ্য
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল ব্যবহার করে কীভাবে কার্মাণে নিরাপত্তা পালন করা যায় সে সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান বা সক্ষতা অর্জন করা। কাজের ধাপ:
১.১ নিরাপত্তা মূলক পোশাক ব্যবহার কর
ক) নিম্নোক্ত নিরাপত্তা পোশাকের নাম লিখ, ছবি আঁক এবং এ সব পোশাক পরিধান কর।
খ) পূর্ব পৃষ্ঠায় বর্ণিত নিরাপত্তা পেশাকসমূহ পাশের চিত্রের ন্যায় পরিধান কর এবং শপে কাজের সময় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা অভ্যাস গড়ে তোল।
১.২ নিরাপত্তা বিধি অনুসরণ কর
ওয়ার্কশপে কাজের সময় যেসব সাবধানতা বা নিরাপত্তা বিধি মেনে চলতে হয় তার তালিকা তৈরি কর।
ক) নিম্নোক্ত নিরাপত্তা পোশাক পরিধান কর
১) অ্যাপ্রোন (কোনো কিছুর আঘাত বা দুর্ঘটনা থেকে শরীরকে রক্ষা করার জন্য পোশাক)
২) সেফটি গগলস (কোনো কিছুর আঘাত থেকে চোখকে রক্ষা করার জন্য)
৩) হেলমেট (কোনো ভারি বস্তুর আঘাত থেকে মাথা ও মুখমণ্ডল রক্ষা করার জন্য)
৪) হ্যান্ড গ্লোভস (ধারালো বা তীক্ষ্ণ বস্তুর আঘাত বা ঘর্ষণ থেকে হাতকে রক্ষার জন্য)
৫) সেফটি বুট (তীষ্ম ধারালো বস্তু বা ভারি বস্তুর আঘাত থেকে পা-কে রক্ষার জন্য)
৬) ইয়ার প্রোটেক্টর (কানকে শব্দ থেকে নিরাপদ রাখার জন্য
৭) গ্যাস মুখোশ (স্প্রে পেইন্টিং ইত্যাদি কাজের সময় ফুসফুসের নিরাপত্তার জন্য)
খ) সঠিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার কর
ফার্মাপে কাজের সময় কাজের উপযোগী সঠিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার কর। অর্থাৎ যে কাজের জন্য যে যন্ত্র উপযুক্ত সেই নির্দিষ্ট যন্ত্র নির্বাচন করে ব্যবহার করবে। তা না হলে সঠিকভাবে কাজ করা যায় না এবং তাতে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
গ) ত্রুটিমুক্ত যন্ত্র ব্যবহার কর
যে যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করবে তা যেন অবশ্যই ত্রুটিমুক্ত হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে। কাজের অনুপোযোগী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে নানা প্রকার দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ঘ) সঠিক পদ্ধতিতে কাজ কর
প্রতিটি কাজ করার একটা নির্দিষ্ট নিয়ম বা পদ্ধতি আছে। ওয়ার্কশপে কাজের সময় সঠিক নিয়ম জেনে সেই পদ্ধতিতে কাজ করবে । নিয়মের বাইরে নিজের ইচ্ছামতো কাজ করলে দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা থাকে।
ঙ) মনোযোগ সহকারে কাজ কর
যে কোনো কাজের সময় সেই কাজের প্রতি গভীরভাবে মনোনিবেশ সহকারে কাজ করবে। অন্যমনস্ক হয়ে কাজ করলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ।
চ) ধূমপান করবে না
ফার্মশপে ঘুমপান করবে না। কারণ, ধূমপানের পর ফেলে দেওয়া বিড়ি সিগারেটের টুকরা হতে অনেক সময় আগুনের সূচনা হয় ।
ছ) আলোতে কাজ কর
ফার্মশপে কাজের স্থানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখবে। কম আলোতে কাজ করলে কাজ ভালো হবে না এবং যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ।
জ) অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রাখ
কাজের স্থানের কাছাকাছি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র বা ফায়ার এক্সটিংগুইশার এবং অন্যান্য অগ্নিনির্বাপক দ্রব্য মজুদ রাখবে ।
ঝ) প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখ
হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সাথে সাথে যাতে প্রাথমিক চিকিৎসা করা যায় তার জন্য কাজের স্থানের নিকটে প্রাথমিক চিকিৎসা বাক্স বা ফার্স্ট এইড বক্স রাখবে ।
১.৩ কার্যক্ষেত্রে বিপদমুক্ত এলাকা চিহ্নিত কর ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখ
ক) বিপদমুক্ত এলাকা চিহ্নিত কর
ওয়ার্কশপে কাজের সময় আকস্মিকভাবে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য সঠিক নিরাপত্তা বজায় রাখার স্বার্থে সব সময় বিপদমুক্ত এলাকা চিহ্নিত করে কাজের এলাকা নির্ধারণ কর। কাজের সময় যাতে বহিরাগত কোনো লোক বা প্রাণী মেশিনের কাছে আসতে না পারে তার ব্যবস্থা রাখ। এ জন্য 'বিপদজনক এলাকা' বা 'নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন' এ ধরনের স্টিকার বা ব্যানার দেওয়ালে বা কাজের স্থানে লাগিয়ে রাখ।
খ) পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ
১. ওয়ার্কশপ বা কাজের স্থান সব সময় মেটাল চিপস, গ্রাইন্ডিং ডাস্ট, ড্রিলিং টিপস, ইত্যাদি আবর্জনা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করে রাখ
২. ব্যবহৃত কোনো হাত যন্ত্র বা টুল এদিক সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখবে না। হাতের কাছাকাছি কোনো টেবিল, বে বা তাকে রাখ ।
৩. অব্যবহৃত টুলস কোনো বেঞ্চ বা তাকে ঢেকে রাখ কিংবা টুলবক্স সংরক্ষণ কর ।
8. যে সব মেশিন ব্যবহৃত হচ্ছে না তার বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কাপড় বা পলিথিন শিট দিয়ে ঢেকে রাখ।
১.৪ আকস্মিক বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে নিজেকে রক্ষা ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহার
ক) আকস্মিক বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে নিজেকে রক্ষা কর
১) আকস্মিক বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য সব সময় সতর্ক থাকবে ।
২) বৈদ্যুতিক মেশিনে কাজ করার সময় সব বৈদ্যুতিক সংযোগ ও ক্যাবল ভালোভাবে পরীক্ষা করে তারপর কাজ শুরু করবে।
৩) বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ কাছাকাছি স্থানে রাখার ব্যবস্থা করবে।
৪) বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ কোথায় অবস্থিত তা সব সময় মনে রাখবে ।
৫) বৈদ্যুতিক লাইনে বা কোনো সংযোগ স্থলে কোথাও কোনো স্পার্কিং হওয়ার সাথে সাথে মেইন সুইচ বন্ধ করে দেবে।
৬) দৈবাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেলে যাতে প্রথমিক চিকিৎসা দেওয়া যার তার জন্য কাজের স্থানে প্রথমিক চিকিৎসা বাক্স বা ফার্স্ট-এইড বক্স (First Aid Box) রাখবে।
গ) অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবহার শেখ
নিম্নোক্ত অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র ও দ্রব্যাদির ব্যবহার শেখ এবং প্রয়োজনের সময় তা ব্যবহারে অভ্যস্থ হও।
১. ওয়ার্কশপে যে কোনো সময় আগুন লেগে যেতে পারে। এরূপ দুর্ঘটনায় অগ্নি- নির্বাপক যন্ত্র বা ফায়ার এক্সটিংগুইশার (Fire Extinguisher) এর ব্যবহার
কর।
২. অক্ষম লাগার সাথে সাথে দেওয়ালে ঝুলানো বা মেঝেতে রাখা ফায়ার এক্সটিংগুইশার যন্ত্র তুলে নিয়ে এর গ্যাস লিভার চেপে যন্ত্রটিকে চালু (Activate) করা।
৩. তারপর দুই হাতে যন্ত্রটিকে তুলে নিয়ে এর ফোম নজলটি আগুনের দিকে ধরে কোন আগুনের উপর নিক্ষেপ কর।
৪. এভাবে ওয়ার্কশপে আগুন লেগে দুর্ঘটনা ঘটলে অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র বা ফায়ার এক্সটিতেইশার এর ব্যবহার আয়ত্ব কর।
মন্তব্য:
উপরোক্ত যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল এর সাহায্যে ধরাবাহিকভাবে কাজ করে কীভাবে কার্যশপে নিরাপত্তা পালন করা যায় সে সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান বা দক্ষতা অর্জন।
Read more